জাবি প্রতিনিধিঃ জাহাঙ্গীরনগর বিশ্ববিদ্যালয় কেন্দ্রীয় শিক্ষার্থী সংসদ (জাকসু) নির্বাচনে সম্প্রীতির ঐক্য প্যানেলের সহ-সভাপতি প্রার্থী অমর্ত্য রায় জনের ভোটার ও প্রার্থী তালিকা থেকে নাম প্রত্যাহারের প্রতিবাদে সংবাদ সম্মেলন করেছেন প্যানেলটির প্রার্থীরা।
আজ শনিবার, রাত সোয়া নয়টার দিকে বিশ্ববিদ্যালয়ের বটতলা এলাকায় সংবাদ সম্মেলনটির আয়োজন করে সম্প্রীতির ঐক্য প্যানেল।
এসময় সম্প্রীতির ঐক্য প্যানেলের পক্ষ থেকে বক্তব্য দেন প্যানেলের সাধারণ সম্পাদক প্রার্থী শরণ এহসান। অমর্ত্য রায় কে প্রত্যাহার করে প্রশাসনের জারি করা প্রজ্ঞাপনকে সম্পূর্ণ অবৈধ এবং নিয়মবহির্ভূত বলে আখ্যা দেন তিনি।
তিনি বলেন, প্রথম ভোটার তালিকা প্রকাশ করা হয় ১৭ আগস্ট এবং হালনাগাদ করা হয় ২৯ আগস্ট। চূড়ান্ত প্রার্থী ও ভোটার তালিকায় অমর্ত্য রায় জনের নাম ছিল কিন্তু পরবর্তীতে তার প্রার্থীতা বাতিল করা হয়। নির্বাচন কমিশনের এমন পক্ষপাতদুষ্ট সিদ্ধান্ত সুষ্ঠু নির্বাচন সম্পন্ন হওয়ার ক্ষেত্রে হুমকিস্বরূপ এবং যেকোন প্রার্থীর বিরুদ্ধে যেকোন সময় ব্যবহৃত হতে পারে।
তিনি আরও বলেন, আওয়ামী আমলে ২০২৪ সালের ২০ ফেব্রুয়ারি শেখ মুজিবুর রহমানের গ্রাফীতি মোছার দায়ে অমর্ত্য রায়কে ১ বছর এর জন্য বহিষ্কার করা হয়। পরবর্তীতে মহামান্য হাইকোর্ট ২১ মার্চ ২০২৪ তারিখে কেবল ফাইনাল পরীক্ষা দেয়ার অনুমতি প্রদান করে। কিন্তু ক্লাস ও ল্যাব পরীক্ষা এবং হলে অবস্থান করার অনুমতি দেয়নি। বহিষ্কারাদেশ বহাল থাকে ২০২৪ সালের ডিসেম্বর পর্যন্ত। ২০২৫ সালের জানুয়ারি মাস থেকে পুনরায় বিশ্ববিদ্যালয়ের নিয়মিত শিক্ষার্থী হিসেবে ক্লাস ও পরীক্ষায় অংশগ্রহণ করার সুযোগ পেয়েছিলেন। এই দশ মাস উনার যেসকল ক্লাস, বিশেষত ল্যাব ক্লাস এ অংশ নেয়া থেকে বিরত থাকতে হয়েছে, তার ক্ষতি পূরণের জন্য পুনরায় ক্লাসে নিয়মিত অংশ গ্রহণের সুযোগ পাওয়ার কথা।
সম্প্রীতির ঐক্য প্যানেলের যুগ্ম সাধারণ সম্পাদক (পুরুষ) প্রার্থী নুর এ তামীম স্রোত বলেন, শেখ মুজিবের গ্রাফিতি মোছায় নিষিদ্ধ সংগঠন ছাত্রলীগের সন্ত্রাসী এনামের আন্দোলনের প্রেক্ষিতে তৎকালীন প্রশাসন অমর্ত্য রয় জনকে বহিস্কার করে। উক্ত আন্দোলনে জাহাঙ্গীরনগর বিশ্ববিদ্যালয়ের শিক্ষক সোহেল আহমেদ, লুৎফুল এলাহী, মোতাহার হোসেন এবং শিক্ষার্থী আবদুর রধিদ জিতু সংহতি জ্ঞাপন করে। প্রসঙ্গত এবং জরুরি বিষয় যে, উক্ত শিক্ষকদের মধ্যে সোহেল আহমেদ বর্তমান উপ-উপাচার্য, লুৎফুল এলাহী নির্বাচন কমিশনের সদস্য এবং আবদুর রশিদ জিতু ভিপি পদে অমর্ত্য রয়ের প্রতিদ্বন্দ্বী। এখানে স্পষ্ট যে, অমর্ত্যর প্রার্থীতা বাতিলের সিদ্ধান্ত পক্ষপাতদুষ্ট, ষড়যন্ত্রমূলক এবং কনফ্লিক্ট অব ইন্টারেস্ট এর ব্যাত্যয়।
তিনি আরও বলেন, বিশ্ববিদ্যালয়ের ওয়েবসাইটে ১৭ ই আগস্ট এ প্রকাশিত ভোটার তালিকায় অমর্ত্য রায়ের নাম ছিল। পরবর্তীতে ২৯ আগস্টে প্রকাশিত চূড়ান্ত প্রার্থী তালিকায়ও তাঁর নাম ছিল। কিন্তু আজ নোটিস আসার পর আমরা দেখতে পাচ্ছি যে ওয়েবসাইটে যে ভোটার তালিকার ফাইলটা রয়েছে, সেটি হুট করে পরিবর্তন করে ফেলা হয়েছে এবং তাতে অমর্ত্য রায়ের নাম নেই। আশ্চর্যের বিষয় হচ্ছে, নতুন তালিকায় কোনো সংশোধন করার বিষয়টিও উল্লেখ করা হয় নি। এতে বিশ্ববিদ্যালয় প্রশাসন এর স্পষ্ট জালিয়াতি লক্ষ্য করা যায়।
বিশ্ববিদ্যালয় প্রশাসনের পক্ষপাতদুষ্ট আচরণ সম্পূর্ণ ভাবে জাকসু নির্বাচনকে বানচাল করার পাঁয়তারা বলে উল্লেখ করেন নুর এ তামীম স্রোত।
এই সমস্যা নিরশনের জন্য এবং নির্বাচন কমিশন ও প্রশাসনের এরূপ আচরণের দ্রুত প্রতিকার করার জন্য বিশ্ববিদ্যালয়ের উপাচার্য অধ্যাপক ড. মো. কামরুল আহসানের কাছে আবেদন জানিয়েছে সম্প্রীতির ঐক্য প্যানেল। প্রয়োজনে আইনী লড়াই লড়তে বাধ্য হবে বলে জানিয়েছে প্যানেলটি।
উল্লেখ্য, আজ বিকাল চারটার দিকে জাকসু নির্বাচনের গঠনতন্ত্র অনুযায়ী ভোটার ও প্রার্থিতায় অযোগ্য বিবেচিত হওয়ায় ভোটার ও প্রার্থী তালিকা থেকে অমর্ত্য রায় জনের নাম প্রত্যাহার করে এক বিজ্ঞপ্তি প্রকাশ করে জাকসু নির্বাচন কমিশন। এরপর এ সিদ্ধান্ত নিয়ে সমালোচনা সৃষ্টি হয় বিশ্ববিদ্যালয় সংশ্লিষ্টদের মাঝে।
সম্পাদক ও প্রকাশকঃ ওমর ফারুক। প্রকাশক কর্তৃক বি,এস প্রিন্টিং প্রেস, ৫২/২ টয়েনবী সার্কুলার রোড , ঢাকা- ১২০৩ থেকে মুদ্রিত ও ২ আর কে মিশন রোড (৫ম তলা) থেকে প্রকাশিত।
© All rights reserved © 2017 Alokito Kantho