নারায়ণগঞ্জঃ হাইওয়ে পুলিশের গাজীপুর রিজিওনের নারায়ণগঞ্জের সোনারগাঁয়ের কাঁচপুর হাইওয়ে থানার ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা (ওসি) আব্দুল কাদির জিলানীর বিরুদ্ধে মহাসড়কে চলাচলকারী বিভিন্ন পন্য ও গণপরিবহনে মাসোহারা বাণিজ্যের গুরুতর অভিযোগ উঠেছে। ঢাকা-চট্টগ্রাম ও ঢাকা-সিলেট মহাসড়ক দিয়ে চলাচলরত যাত্রী পরিবহন ও পন্য পরিবহনে নিজস্ব লোক দিয়ে ওসি অর্থ সংগ্রহ করছে বলে অনুসন্ধানে জানা গেছে। তবে, এসব অভিযোগ ভিত্তিহীন বলে দাবী ওসি আব্দুল কাদির জিলানীর।
অনুসন্ধানে জানা গেছে, মুন্সিগঞ্জের গজারিয়া থেকে রাজধানী ঢাকার গুলিস্তান রুটে চলাচলকারী গজারিয়া পরিবহণ থেকে মাসে ১৫ হাজার, সোনারগাঁয়ের মোগড়াপাড়া থেকে ঢাকার গুলিস্তান রুটে চলাচলকারী স্বদেশ ও দোয়েল পরিবহন থেকে ২০ হাজার, মোগড়াপাড়া থেকে চিটাগাং রোডে চলাচলকারী সোনারগাঁও পরিবহন থেকে ১৫ হাজার, কাঁচপুর থেকে ঢাকা-সিলেট মহাসড়কের গাউসিয়া রুটে চলাচলকারী লেগুনা থেকে ২০ হাজার, মোগড়াপাড়া থেকে সাইনবোর্ড রুটে চলাচলকারী নাফ পরিবহন থেকে ১৫ হাজার, শিমরাইল পরিবহন থেকে ১০ হাজার এবং মদনপুর থেকে উত্তরা আব্দুল্লাহপুর রুটে চলাচলকারী আসমানী পরিবহন ও কাঁচপুর গ্রীন লাইন পরিবহনের ডিপো থেকে ২০ হাজার টাকা ও পন্যবাহী সোকতারা ট্রান্সপোর্ট থেকে ২০ হাজার, মাটি সহিদ ওরফে লুঙ্গি সহিদের কাছ থেকে ড্রাম ট্রাক বাবদ ১০ হাজার, মোগড়াপাড়া পিক-আপ স্টান্ড থেকে কমিউনিটি পুলিশের আক্তারের মাধ্যমে ১৫ হাজার, মদনপুরে কমিউনিটি পুলিশের মনিরের মাধ্যমে নসিমন, করিমন বাবদ ২০টি গাড়ি থেকে ২০ হাজার টাকা এবং ঢাকা-চট্টগ্রাম, ঢাকা-সিলেট ও এশিয়ান হাইওয়ের রাস্তার পাশের চোরাই তেলের ৮টি দোকান থেকে প্রতিমাসে ৬ হাজার করে ৪৮ হাজার টাকা মাসোহারা নেন ওসি। এসব মাসোহারার অর্থ ওসি তার নিয়োজিত বিশ^স্থ লোক দ্বারা আদায় করে বলে অভিযোগ পাওয়া গেছে।
অপরদিকে, পুরাতন থানায় আটককৃত প্রায় ২০০টি রিকসা জব্দ ছিল। সেই জব্দকৃত রিকসার মধ্য হতে ১০০টি রিকসা কাঁচপুর নয়াবাড়ী এলাকার উজ্জলের ভাঙ্গারী দোকানে বিক্রি করে দেয়ার অভিযোগ রয়েছে ওসির নিয়োজিত পরিচ্ছন্নকর্মী শরীফের বিরুদ্ধে।
অন্যদিকে, ওসিদের জন্য বাড়ী ভাড়া বাবদ সরকার অর্থ দিলেও তিনি পরিবার নিয়ে থানার চতুর্থ তলায় বসবাস করেন।
এ ব্যাপারে জানতে চাইলে গজারিয়া পরিবহনের দায়িত্বে থাকা মোস্তাক জানান, আমি দায়িত্বে আছি কিন্তু পেমেন্ট কোম্পানী দেয়।
আসমানী, স্বদেশ ও দোয়েল পরিবহনের নিয়ন্ত্রণকারী ইমরান জানান, ভাই আমরা পরিবহন ব্যবসা করি সেজন্য পুলিশের সাথে সুসম্পর্ক রেখেই ব্যবসা করতে হয়। তিনি মাসোহারার বিষয়ে কোন মন্তব্য করতে অনীহা প্রকাশ করেন।
সোনারগাঁও পরিবহনের ব্যবস্থাপনা পরিচালক রিমন হোসেন জানান, ভাই পুলিশের কাছে আমরা জিম্মি হয়ে গেছি। আগের ওসি স্যারকে মাসে ১০ হাজার টাকা দিতাম। এখন বর্তমান ওসিকে ১৫ হাজার টাকা দিচ্ছি তারপরও তাকে বেশি টাকা দিতে হবে। এতে অনিহা প্রকাশ করলে বিভিন্ন অজুহাত দেখিয়ে গাড়িতে মামলা দিচ্ছে।
জানতে চাইলে কাঁচপুর হাইওয়ে থানার ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা (ওসি) আব্দুল কাদির জিলানী বলেন, কোন পরিবহন, চোরাই তেলের দোকান এবং ত্রিহুইলারসহ কোন অনিয়মের সাথে আমার সম্পৃক্ততা নেই। অবৈধ যানবাহনের বিরুদ্ধে কঠোর ব্যবস্থা নেয়ায় আমার বিরুদ্ধে বিভিন্ন অভিযোগ তোলা হচ্ছে।
হাইওয়ে পুলিশ, গাজীপুর রিজিওনের পুলিশ সুপার ড. আক্তারুজ্জামান বাসুনিয়া বলেন, এ ব্যাপারে আমাদের কাছে কেউ অভিযোগ করেনি। যদি কোন পরিবহন মালিক বা শ্রমিক আমাদের কাছে লিখিত অভিযোগ করে তাহলে প্রয়োজনীয় ব্যবস্থা গ্রহণ করা হবে বলে জানান পুলিশের এই কর্মকর্তা।
সম্পাদক ও প্রকাশকঃ ওমর ফারুক। প্রকাশক কর্তৃক বি,এস প্রিন্টিং প্রেস, ৫২/২ টয়েনবী সার্কুলার রোড , ঢাকা- ১২০৩ থেকে মুদ্রিত ও ২ আর কে মিশন রোড (৫ম তলা) থেকে প্রকাশিত।
© All rights reserved © 2017 Alokito Kantho