০২:২৭ পূর্বাহ্ন, মঙ্গলবার, ২৩ সেপ্টেম্বর ২০২৫, ৭ আশ্বিন ১৪৩২ বঙ্গাব্দ

মানিকগঞ্জে শত বছরের পুরানো বিদ্যালয়ে নেই খেলার মাঠ, নিরাপত্তায় নেই সীমানা প্রাচীর

 

মানিকগঞ্জঃ মানিকগঞ্জে পড়ালেখারপাশাপাশি খেলাধুলা ও সাংস্কৃতিক আচার -অনুষ্ঠানসহ নানা দিক থেকেই আলোকিত এক শিক্ষা প্রতিষ্ঠানের নাম ১৯নং ভাটবাউর সরকারি প্রাথমিক বিদ্যালয়।

শত বছরের পুরনো এই বিদ্যালয়টি মানিকগঞ্জ জেলা শহর সংলগ্ন ভাটবাউর গ্রামে অবস্থিত। পড়ালেখার পাশাপাশি খেলাধুলা ও সাংস্কৃতিক আচার-অনুষ্ঠানসহ সবদিক থেকেই আলোকিত এই বিদ্যালয়টি ।শিক্ষার্থীরা বরাবরই খেলাধুলায় নৈপুণ্যতা দেখালেও বিদ্যালয়টিতে নেই কোনো খেলার মাঠ। পাশাপাশি বিদ্যালয়ের সামনে ব্যস্ততম পাকা সড়ক থাকায় কোমলমতি শিক্ষার্থীদের নিরাপত্তায় নেই কোনো সীমানা প্রাচীর ও গেট। এই দু’টির দাবি দীর্ঘদিন ধরে করে আসছে শিক্ষক-শিক্ষার্থী ও অভিভাবকবৃন্দ।

সরেজমিনে গেলে দেখাযায়,মানিকগঞ্জ সদর উপজেলার ভাটবাউর গ্রামে ১৯২৫ সালে বিদ্যালয়টি প্রতিষ্ঠিত হয়। বিদ্যালয়টির পাশ ঘেঁষেই রয়েছে ব্যস্ততম পাকা সড়ক।সামনে ডোবা-নালাও রয়েছে।

দু’টি পুরাতন ভবনের পাশে একটি নতুন ভবনের নির্মাণকাজ চললেও বিদ্যালয়ের চারদিক একেবারেই খোলামেলা পরিবেশ। এমতোবস্থাতে চলছে কোমলমতি শিক্ষার্থীদের পাঠদান। যেহেতো
স্কুলের বারান্দা থেকে পা বাড়ালেই সামনে ব্যস্ততম পাকা সড়ক।সুতরাং স্কুলের সীমানা প্রাচীর ও গেট অত্যন্ত জরুরি বলে মনে করেন বিদ্যালয় কর্তৃপক্ষ। কিন্তু প্রতিষ্ঠানটির ১০০ বছরে কোনো সরকারই সেটা করে দেয়নি। যার কারণে শিক্ষার্থীরা যতক্ষণ স্কুলে পাঠদান করে থাকে ততক্ষণই এক ধরনের আতঙ্ক ও নিরাপত্তাহীনতায় থাকে শিক্ষার্থী, শিক্ষকবৃন্দ।

এলাকাবাসি জানান, স্কুলের সামনে পেছনে এবং পাশে পানিভর্তি পুকুর ও ডোবা-নালা রয়েছে। ছোট ছোট কোমলমতি শিক্ষার্থীরা দৌড়ঝাঁপ করতে গিয়ে পানিতে পড়ে বড় ধরনের দুর্ঘটনার আশঙ্কা রয়েছে। তাছাড়া শিক্ষার্থীদের শারীরিক কসরত ও খেলাধুলার জন্য একটি মাঠের ব্যবস্থা নেই । অথচ স্কুলের পাশেই নিজস্ব নিচু জায়গা রয়েছে । সেখানে মাটিভরাট করা হলে একটি সুন্দর খেলার মাঠ পেতো শিক্ষার্থীরা।

স্কুল কর্তৃপক্ষ জানান,বিদ্যালয়টিতে মোট ২১০ জন শিক্ষার্থী রয়েছে। শিক্ষক রয়েছে ৮ জন। লেখাপড়ার পাশাপাশি খেলাধুলা ও বিনোদনে প্রত্যেক শিক্ষার্থীরা বেশ পারদর্শী। কিন্তু ১০০ বছর পূর্ণ হলেও শিক্ষার্থীদের জন্য একটি খেলার মাঠ ও নিরাপত্তায় সীমানা প্রাচীর না থাকায় শিক্ষার ব্যাঘাত ঘটছে।

পঞ্চম শ্রেণির শিক্ষার্থী হালিমা আক্তার জানান, বিদ্যালয়ে খেলার মাঠ না থাকায় খেলাধুলা করতে পারি না। তাছাড়া স্কুলের সামনে পাকা রাস্তা থাকায় খুবই ঝুঁঁকি নিয়ে স্কুলে আসা-যাওয়া করতে হয়। এ ছাড়াও স্কুলের সামনে ডোবা-নালাও রয়েছে। এই অবস্থায় স্কুলটিতে যদি সীমানা প্রাচীর থাকতো তাহলে আমরা নিরাপদে স্কুলের ভেতরে পাঠদান করতে পারতাম।

বিদ্যালয়ের প্রধান শিক্ষক জবেদা খাতুন বলেন, ১৯২৫ সালে আমাদের এই বিদ্যালয়টি প্রতিষ্ঠিত হয়। ১০০ বছর পূর্ণ হলেও এখানে শিক্ষার্থীদের জন্য একটা খেলার মাঠ নেই। অথচ আমাদের নিজস্ব যে নিচু জমি রয়েছে সেটা ভরাট করলেই একটি পরিপূর্ণ সুন্দর মাঠ নির্মাণ করা যায়। শিক্ষার্থীদের নিরাপত্তায় সীমানা প্রাচীর ও নেই। মাঠ এবং সীমানা প্রাচীরের জন্য আমরা কর্তৃপক্ষের কাছে আবেদন করেছি।

মানিকগঞ্জ সদর উপজেলা সহকারী শিক্ষা অফিসার নুরুন্নাহার বলেন, স্কুলের পক্ষ থেকে প্রধান শিক্ষক সীমানা প্রাচীর ও মাঠের জন্য আমাদের কাছে একটি লিখিত আবেদন করেছেন। আবেদনের প্রেক্ষিতে আমরা ঊর্ধ্বতন কর্তৃপক্ষের সঙ্গে কথা বলে আমাদের মন্ত্রণালয়ে পাঠানো হয়েছে। আশাকরি সীমানা প্রাচীর ও মাঠের বিষয়ে ভালো একটি সিদ্ধান্ত আসবে।

Tag :
About Author Information

জনপ্রিয়

সাতক্ষীরার প্রিন্স শীল পিন্টু: মৃৎশিল্পে সারা দেশে ছড়াচ্ছেন সুনাম

মানিকগঞ্জে শত বছরের পুরানো বিদ্যালয়ে নেই খেলার মাঠ, নিরাপত্তায় নেই সীমানা প্রাচীর

প্রকাশের সময়ঃ ০৬:০৮:৪১ অপরাহ্ন, শনিবার, ২০ সেপ্টেম্বর ২০২৫

 

মানিকগঞ্জঃ মানিকগঞ্জে পড়ালেখারপাশাপাশি খেলাধুলা ও সাংস্কৃতিক আচার -অনুষ্ঠানসহ নানা দিক থেকেই আলোকিত এক শিক্ষা প্রতিষ্ঠানের নাম ১৯নং ভাটবাউর সরকারি প্রাথমিক বিদ্যালয়।

শত বছরের পুরনো এই বিদ্যালয়টি মানিকগঞ্জ জেলা শহর সংলগ্ন ভাটবাউর গ্রামে অবস্থিত। পড়ালেখার পাশাপাশি খেলাধুলা ও সাংস্কৃতিক আচার-অনুষ্ঠানসহ সবদিক থেকেই আলোকিত এই বিদ্যালয়টি ।শিক্ষার্থীরা বরাবরই খেলাধুলায় নৈপুণ্যতা দেখালেও বিদ্যালয়টিতে নেই কোনো খেলার মাঠ। পাশাপাশি বিদ্যালয়ের সামনে ব্যস্ততম পাকা সড়ক থাকায় কোমলমতি শিক্ষার্থীদের নিরাপত্তায় নেই কোনো সীমানা প্রাচীর ও গেট। এই দু’টির দাবি দীর্ঘদিন ধরে করে আসছে শিক্ষক-শিক্ষার্থী ও অভিভাবকবৃন্দ।

সরেজমিনে গেলে দেখাযায়,মানিকগঞ্জ সদর উপজেলার ভাটবাউর গ্রামে ১৯২৫ সালে বিদ্যালয়টি প্রতিষ্ঠিত হয়। বিদ্যালয়টির পাশ ঘেঁষেই রয়েছে ব্যস্ততম পাকা সড়ক।সামনে ডোবা-নালাও রয়েছে।

দু’টি পুরাতন ভবনের পাশে একটি নতুন ভবনের নির্মাণকাজ চললেও বিদ্যালয়ের চারদিক একেবারেই খোলামেলা পরিবেশ। এমতোবস্থাতে চলছে কোমলমতি শিক্ষার্থীদের পাঠদান। যেহেতো
স্কুলের বারান্দা থেকে পা বাড়ালেই সামনে ব্যস্ততম পাকা সড়ক।সুতরাং স্কুলের সীমানা প্রাচীর ও গেট অত্যন্ত জরুরি বলে মনে করেন বিদ্যালয় কর্তৃপক্ষ। কিন্তু প্রতিষ্ঠানটির ১০০ বছরে কোনো সরকারই সেটা করে দেয়নি। যার কারণে শিক্ষার্থীরা যতক্ষণ স্কুলে পাঠদান করে থাকে ততক্ষণই এক ধরনের আতঙ্ক ও নিরাপত্তাহীনতায় থাকে শিক্ষার্থী, শিক্ষকবৃন্দ।

এলাকাবাসি জানান, স্কুলের সামনে পেছনে এবং পাশে পানিভর্তি পুকুর ও ডোবা-নালা রয়েছে। ছোট ছোট কোমলমতি শিক্ষার্থীরা দৌড়ঝাঁপ করতে গিয়ে পানিতে পড়ে বড় ধরনের দুর্ঘটনার আশঙ্কা রয়েছে। তাছাড়া শিক্ষার্থীদের শারীরিক কসরত ও খেলাধুলার জন্য একটি মাঠের ব্যবস্থা নেই । অথচ স্কুলের পাশেই নিজস্ব নিচু জায়গা রয়েছে । সেখানে মাটিভরাট করা হলে একটি সুন্দর খেলার মাঠ পেতো শিক্ষার্থীরা।

স্কুল কর্তৃপক্ষ জানান,বিদ্যালয়টিতে মোট ২১০ জন শিক্ষার্থী রয়েছে। শিক্ষক রয়েছে ৮ জন। লেখাপড়ার পাশাপাশি খেলাধুলা ও বিনোদনে প্রত্যেক শিক্ষার্থীরা বেশ পারদর্শী। কিন্তু ১০০ বছর পূর্ণ হলেও শিক্ষার্থীদের জন্য একটি খেলার মাঠ ও নিরাপত্তায় সীমানা প্রাচীর না থাকায় শিক্ষার ব্যাঘাত ঘটছে।

পঞ্চম শ্রেণির শিক্ষার্থী হালিমা আক্তার জানান, বিদ্যালয়ে খেলার মাঠ না থাকায় খেলাধুলা করতে পারি না। তাছাড়া স্কুলের সামনে পাকা রাস্তা থাকায় খুবই ঝুঁঁকি নিয়ে স্কুলে আসা-যাওয়া করতে হয়। এ ছাড়াও স্কুলের সামনে ডোবা-নালাও রয়েছে। এই অবস্থায় স্কুলটিতে যদি সীমানা প্রাচীর থাকতো তাহলে আমরা নিরাপদে স্কুলের ভেতরে পাঠদান করতে পারতাম।

বিদ্যালয়ের প্রধান শিক্ষক জবেদা খাতুন বলেন, ১৯২৫ সালে আমাদের এই বিদ্যালয়টি প্রতিষ্ঠিত হয়। ১০০ বছর পূর্ণ হলেও এখানে শিক্ষার্থীদের জন্য একটা খেলার মাঠ নেই। অথচ আমাদের নিজস্ব যে নিচু জমি রয়েছে সেটা ভরাট করলেই একটি পরিপূর্ণ সুন্দর মাঠ নির্মাণ করা যায়। শিক্ষার্থীদের নিরাপত্তায় সীমানা প্রাচীর ও নেই। মাঠ এবং সীমানা প্রাচীরের জন্য আমরা কর্তৃপক্ষের কাছে আবেদন করেছি।

মানিকগঞ্জ সদর উপজেলা সহকারী শিক্ষা অফিসার নুরুন্নাহার বলেন, স্কুলের পক্ষ থেকে প্রধান শিক্ষক সীমানা প্রাচীর ও মাঠের জন্য আমাদের কাছে একটি লিখিত আবেদন করেছেন। আবেদনের প্রেক্ষিতে আমরা ঊর্ধ্বতন কর্তৃপক্ষের সঙ্গে কথা বলে আমাদের মন্ত্রণালয়ে পাঠানো হয়েছে। আশাকরি সীমানা প্রাচীর ও মাঠের বিষয়ে ভালো একটি সিদ্ধান্ত আসবে।