
✍️মাওলানা শেখ মিলাদ হোসাইন সিদ্দিকী হাফিজাহুল্লাহঃ প্রারম্ভ: ঈদে মিলাদুন্নবী সল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লাম অস্বীকার করতে গিয়ে কিছু মুরতাদ সম্প্রদায় বলে থাকে ‘দুই ঈদ ব্যতীত আর কোন ঈদ নাই”। নাউযুবিল্লাহ !!
যারা বলে দুই ঈদ ব্যতীত আর কোন ঈদ নাই,তারা কুরআন ও হাদিস অস্বীকারকারী।
★১নং দলিল…
📖 সুনান ইবনে মাজাহ- কিতাবু ইকামাতিস সালাত,বাবু মাজাআ ফিয যিনাতি ইয়াউমিল জুমআ,হাদীস নং ১১৫২…
রাসুলূল্লাহ (ﷺ) ইরশাদ করেন…
إِنَّ هَذَا يَومٌ جَعَلَهُ اللَّهُ عِيدًا لِلْمُسْلِمِينَ فَاغْتَسِلُوا , وَمَنْ كَانَ عِنْدَهُ طِيبٌ فَلا يَضُرَّهُ أَنْ يَمَسَّ مِنْهُ , وَعَلَيْكُمْ بِالسِّوَاكِ
“নিশ্চয়ই জুমার দিন মুসলমানদের জন্য ঈদের দিন। অত:পর এই দিনে তোমরা গোসল করো এবং যার কাছে সুগন্ধি আছে সে যেন সুগন্ধি লাগায় এবং সে যেন মেসওয়াক করে।”
★২নং দলিল…
📖 আবু দাউদ -কিতাবুস সাওম, বাবু সিয়ামি আইয়্যামিত তাশরীক, হাদীস নং ২৪২০…
তিরমিযি-কিতাবুস সাওম, বাবু মাজাআ ফি কারাহিয়াতিস সাওমে ফি আইয়্যামিত তাশরীক, হাদীস নং ৭৭৮…
রাসুল সল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম ইরশাদ করেন…
قَالَ رَسُولُ اللَّهِ صَلَّى اللهُ عَلَيْهِ وَسَلَّمَ: «يَوْمُ عَرَفَةَ، وَيَوْمُ النَّحْرِ، وَأَيَّامُ التَّشْرِيقِ عِيدُنَا أَهْلَ الْإِسْلَامِ، وَهِيَ أَيَّامُ أَكْلٍ وَشُرْبٍ»
রাসুলূল্লাহ (ﷺ) বলেছেন, আরাফার দিন, কুরবানীর দিন এবং আইয়্যামে তাশরীক তথা জিলহজ্বের ১১,১২,১৩ তারিখ আমাদের ইসলামের অনুসারীদের জন্য ঈদের দিন এবং সে দিনগুলো খাওয়া ও পান করার দিন।
★৩নং দলিল…
📖 তিরমিযি-কিতাবু তাফসীরুল কোরআন,বাবু ওয়ামিন সুরাতি মায়েদা,হাদীস নং ৩৩১৮…
عَنْ عَمَّارِ بْنِ أَبِي عَمَّارٍ قَالَ قَرَأَ ابْنُ عَبَّاسٍ: {الْيَوْمَ أَكْمَلْتُ لَكُمْ دِينَكُمْ وَأَتْمَمْتُ عَلَيْكُمْ نِعْمَتِي وَرَضِيتُ لَكُمُ الإِسْلاَمَ دِينًا} وَعِنْدَهُ يَهُودِيٌّ فَقَالَ لَوْ أُنْزِلَتْ هَذِهِ عَلَيْنَا لاَتَّخَذْنَا يَوْمَهَا عِيدًا. قَالَ ابْنُ عَبَّاسٍ فَإِنَّهَا نَزَلَتْ فِي يَوْمِ عِيدٍ فِي يَوْمِ جُمُعَةٍ وَيَوْمِ عَرَفَةَ.
হযরত ইবনে আব্বাস (رضي الله عنه) তিনি একবার সুরা মায়েদার ৩নং আয়াত –”আজ আমি তোমাদের জন্য তোমাদের দ্বীনকে পূর্ন করে দিলাম” এ আয়াত শরীফ খানা শেষ পর্যন্ত পাঠ করলেন। তখন উনার নিকট এক ইহুদী ছিল সে বলে উঠলো, যদি এমন আয়াত শরীফ আমাদের ইহুদী সম্প্রদায়ের প্রতি নাযিল হতো, আমরা আয়াত শরীফ নাযিলের দিনটিকে ঈদের দিন হিসেবে ঘোষণা করতাম !’ এটা শুনে হযরত ইবনে আব্বাস (رضي الله عنه) বললেন, এ আয়াত শরীফ সেই দিন নাযিল হয়েছে যেদিন একসাথে দুই ঈদ ছিলো (১) জুমুয়ার দিন এবং (২) আরাফার দিন।
★৪নং দলিল…
📖 কোরআন-সুরা মায়েদা,আয়াত নং ১১৪…
আল্লাহ তাআলা ইরশাদ করেন…
قَالَ عِيسَى ابْنُ مَرْيَمَ اللَّهُمَّ رَبَّنَا أَنزِلْ عَلَيْنَا مَائِدَةً مِّنَ السَّمَاءِ تَكُونُ لَنَا عِيدًا لِّأَوَّلِنَا وَآخِرِنَا وَآيَةً مِّنكَ ۖ
মরিয়ম তনয় ঈসা (عليه السلام) আরয করলেন, ‘হে আমাদের রব! আমাদের উপর আকাশ থেকে একটা ‘খাদ্য-ভর্তি খাঞ্চা’ অবতারণ করুন, যা আমাদের জন্য ঈদ হবে-আমাদের পূর্ববর্তী ও পরবর্তীদের জন্য এবং তা হবে আপনার নিকট থেকে নিদর্শন।
💠আসুন আমরা এখানে মোট ঈদ সংখ্যা হিসাব করি —
বছরে ৫২ টি শুক্রবার +ঈদুল ফিতর ১দিন আরাফার ১দিন +কোরবানীর ১দিন+ আইয়্যামে তাশরীক ৩ দিন। (৫২+১+১+১+৩=৫৮)
আমরা পেয়ে গেলাম বছরে শুধু দুইটা ঈদ নয় বরং সর্বমোট প্রায় ৫৮টি ঈদ রয়েছে।তাই যারা ঈদে মিলাদুন্নাবীকে অস্বীকার করতে গিয়ে বলে থাকে দুইটা ঈদ ছাডা আর কোন ঈদ নাই, তারা মুলত ইসলামের শত্রু।