
রাউফুর রহমান পরাগ : সাভারে বকেয়া বেতন, ওভারটাইম ও ছুটির টাকা পরিশোধের দাবিতে প্রায় ৪ ঘন্টা সড়ক অবরোধ করে রাখে বসুন্ধরা গার্মেন্টস নামক তৈরি পোশাক কারখানার কয়েক শতাধিক শ্রমিক। অবশেষে সোমবার বেলা সাড়ে ১২ টার দিকে সেনাবাহিনীর আশ্বাসে অবরোধ তুলে নিয়েছে বিক্ষোদ্ধ শ্রমিকরা। এর আগে সকাল সাড়ে ৮ টা থেকে পাওনা টাকা পরিশোধের দাবিতে সাভারের হেমায়েতপুর-সিংগাইর সড়ক অবরোধ করে বিক্ষোভ করেছে ভুক্তভোগী শ্রমিকরা।
বিক্ষুব্ধ শ্রমিক ও শিল্প পুলিশ সুত্রে জানা গেছে, সাভারের হেমায়েতপুর এলাকায় অবস্থিত বসুন্ধরা গার্মেন্টসের মালিকপক্ষ এখনও গত মাসের বেতন পরিশোধ না করায় সকালে শ্রমিকরা কারখানায় প্রবেশ করে প্রথমে কর্মবিরতি পালন করেন। এরপর সকাল সাড়ে ৮ টার দিকে বিক্ষুব্ধ শ্রমিকরা হেমায়েতপুর সিংগার সড়ক অবরোধ করেন। পাওনা আদায়ে ভুক্তভোগী শ্রমিকেরা টানা ৪ ঘন্টা সড়কটি অবরোধ করে রাখায় দীর্ঘ যানজটের সৃষ্টি হয়। এ সময় সড়কটির উভয় পাশে প্রায় দুই কিলোমিটার এলাকা জুড়ে সৃষ্ট যানজটে কারণে দুর্ভোগে পড়েন হাজার হাজার যাত্রী ও পথচারী।
ভুক্তভোগী শ্রমিকরা জানায়, এর আগেও মালিকপক্ষ সময়মতো বেতন পরিশোধ না করায় আমরা আন্দোলন করি। পাওনা আদায়ে সৌরভ অবরোধ করে বিক্ষোভ করলে সেনাবাহিনীর সদস্যরা আমাদেরকে পাওনা আদায়ের আশ্বাস দিলে অবরোধ কর্তার করে নেয়া হয়। তবে মালিকপক্ষ কথা না রাখায় এবং বেতন পরিশোধ না করায় শ্রমিকরা আবারো সড়কে অবস্থান নিয়েছে। অবিলম্বে বকেয়া পাওনা পরিশোধ না করা হলে শ্রমিকরা এসময় কঠোর কর্মসূচি প্রদানের হুঁশিয়ারি দেন।
সুইং অপারেটর নার্গিস জানান, আমরা ৪ মাসের বকেয়া বেতন, ওভারটাইম ও ছুটির টাকা পাবো। বিজিএমইএ বলার পরেও মালিকপক্ষ আমাদের পাওনা পরিশোধ করছে না। বাধ্য হয়ে আমরা সড়ক অবরোধ করে পাওনা আদায়ের জন্য বিক্ষোভ করছি।
অপর শ্রমিক সাদিয়া বলেন, মালিকপক্ষ বেতন না দেয়ায় আমরা অনেক কষ্টের মধ্যে আছি। আমাদের ছেলে-মেয়ে সংসার আছে, এই সামান্য বেতন দিয়ে তাদেরকে নিয়ে আমাদের চলতে হয়। মাতৃত্বকালীন ছুটি, বকেয়া বেতন ও ওভারটাইমসহ বিভিন্ন ছুটির টাকা মিলিয়ে আমরা অনেক টাকা পাওনা হয়েছি। কিন্তু মালিকপক্ষ বারবার কথা দিয়েও আমাদের পাওনা পরিশোধ করছে না।
আশুলিয়া শিল্প পুলিশ-১ এর পুলিশ সুপার মোমিনুল ইসলাম ভূঁইয়া বলেন, শ্রমিকরা বন্ধ কারখানা খুলে দেয়াসহ বকেয়া পাওনা আদায়ের জন্য প্রায় ৪ ঘন্টা সড়ক অবরোধ করে বিক্ষোভ করেছে। বিষয়টি সমাধানের জন্য আমরা মালিকপক্ষের সঙ্গে যোগাযোগের চেষ্টা করছি। এর মধ্যে বেলা সাড়ে ১২ টার তাদের পাওনা আদায়ের আশ্বাস দিলে শ্রমিকরা অবরোধ তুলে নিয়েছে। এছাড়া যে কোন ধরনের অপ্রীতিকর পরিস্থিতি এড়াতে ঘটনাস্থলে অতিরিক্ত পুলিশ ও সেনাবাহিনীর সদস্যরা প্রস্তুত রয়েছে বলেও জানান তিনি।