০৫:১১ পূর্বাহ্ন, বুধবার, ০২ জুলাই ২০২৫, ১৭ আষাঢ় ১৪৩২ বঙ্গাব্দ

আশুলিয়ার ইস্টার্ন হাউজিং কাঁচাবাজারে প্রকাশ্যে বিক্রি হচ্ছে নিষিদ্ধ পিরানহা

  • Reporter Name
  • প্রকাশের সময়ঃ ০১:৪১:২৩ অপরাহ্ন, বৃহস্পতিবার, ১৭ এপ্রিল ২০২৫
  • ২২৪ বার পড়া হয়েছে

নিজস্ব প্রতিবেদক : আশুলিয়ার ইস্টার্ন হাউজিং নতুন কাঁচাবাজারে রূপচাঁদা বলে বিক্রি হচ্ছে নিষিদ্ধ পিরানহা মাছ।

এ মাছের এমন কিছু বিষক্রিয়া আছে যা আমাদের পাকস্থলি বিনষ্ট করার প্রধান হাতিয়ার। এক বোতল অ্যালকোহলের চাইতেও এ মাছের ৫০ গ্রাম ওজনের একটি অংশ বেশি ক্ষতিকর। পিরানহা মাছের চর্বি আমাদের শ্বাস-প্রশ্বাসের স্বাভাবিক কার্যক্রম ব্যাহত করে। এ মাছে থাকা ফসফেট আমাদের মূত্র প্রদাহ সৃষ্টি করে।

এছাড়াও উক্ত মার্কেটের ভিতর বসে নিয়মিত গাঁজার আসর সহ চলে নানান অনিয়ম। মাদক বিক্রেতা ও সেবনকারীদের নিরাপদ আশ্রয়স্থল ইস্টার্ন হাউজিং নতুন কাঁচাবাজার যা নিয়ে একাধিক জাতীয় পত্রিকায় সংবাদ প্রকাশিত হয়েছে।

বিশ্বের বিভিন্ন দেশের মতো ২০০৮ সালের ফেব্রুয়ারি থেকে বাংলাদেশ সরকারও রাক্ষুসে স্বভাবের কারণে পিরানহা মাছ চাষ, উৎপাদন, পোনা উৎপাদন, বংশ বৃদ্ধি, বাজারে বিক্রি এবং বাজার থেকে ক্রয় সম্পূর্ণভাবে নিষিদ্ধ করেছে বাংলাদেশ সরকার। এছাড়া ২০১৪ সালের জুন থেকে আফ্রিকান মাগুরের আমদানি, উৎপাদন, বিপণনের উপরও নিষেধাজ্ঞা দেয়া হয়।

প্রটেকশন অ্যান্ড কনজারভেশন অব ফিস রুলস, ১৯৮৫ এর কয়েকটি ধারা সংশোধন করে আফ্রিকান মাগুরের উপর এ নিষেধাজ্ঞা জারি করে মৎস্য ও প্রাণী সম্পদ মন্ত্রণালয়। এছাড়া বিদেশ থেকে আফ্রিকান মাগুর ও পিরানহা মাছ, মাছের রেণু ও পোনা আমদানি করলে জেল জরিমানার বিধান রেখে মৎস্য সংঘ নিরোধ আইন-২০১৭ এর খসড়ায় নীতিগত অনুমোদন দেয় মন্ত্রিপরিষদ। এই আইন অমান্য করলে দুই বছরের জেল ও পাঁচ লাখ টাকা জরিমানা অথবা উভয় দণ্ডের বিধান রাখা হয়েছে।

এ ব্যাপারে বাংলাদেশ মৎস্য গবেষণা ইন্সটিটিউটের মহাপরিচালক ইয়াহিয়া মাহমুদ বলেন, বাংলাদেশ বন্যা প্রবণ দেশ। এখন পুকুরে বা ঘে‌রে যদি পিরানহা মাছ বা আফ্রিকান মাগুর মাছ চাষ ক‌রা হয় এবং সেই মাছ যদি পানিতে ভেসে অবরুদ্ধ স্থান থেকে মুক্ত জলাশয় যেমন নদী, খাল বিলে চলে আসে। তখন তাদের আক্রমণে দেশীয় ছোট বড় সব মাছ বিলুপ্ত হয়ে যেতে পারে।

তিনি আরও বলেন, মূলত এই মাছ খেলে কোনও স্বাস্থ্য ঝুঁকি নেই তবে পরিবেশগত ঝুঁকি রয়েছে অনেক। তবে পিরানহা মাছ ও আফ্রিকান মাগুর মাছের উৎপাদন, বিপণন, বিক্রি ও সংরক্ষণ স্থায়ীভাবে বন্ধ করা না গেলে বাংলাদেশের ২৬০ প্রজাতির স্বাদু পানির মাছ এবং ৪৭৫ প্রজাতির সামুদ্রিক মাছ অধিকাংশ বিলুপ্ত হয়ে যাবে।

কিন্তু বাংলাদেশে এখনও এসব মাছ প্রকাশ্যেই উৎপাদন ও খোলা বাজারে বিক্রি হতে দেখা যায়। যা বেশিরভাগ সময় থাই রূপচাঁদা বা সামুদ্রিক চান্দা নামে বিক্রি হয়। এর ছোট আকারের আফ্রিকান মাগুর মাছ, দেশি মাগুর মাছ বলে বিক্রি হতে দেখা যায়। দামে কম হওয়ায় সেই সঙ্গে অন্য মাছের নামে বিক্রি করায় প্রতিনিয়ত প্রতারিত হচ্ছে ক্রেতারা। সূত্র: বিবিসি বাংলা

Tag :
About Author Information

জনপ্রিয়

মানিকগঞ্জে জামায়াতে ইসলামীর পুটাইল ইউনিয়ন শাখার কর্মীসভা অনুষ্টিত

আশুলিয়ার ইস্টার্ন হাউজিং কাঁচাবাজারে প্রকাশ্যে বিক্রি হচ্ছে নিষিদ্ধ পিরানহা

প্রকাশের সময়ঃ ০১:৪১:২৩ অপরাহ্ন, বৃহস্পতিবার, ১৭ এপ্রিল ২০২৫

নিজস্ব প্রতিবেদক : আশুলিয়ার ইস্টার্ন হাউজিং নতুন কাঁচাবাজারে রূপচাঁদা বলে বিক্রি হচ্ছে নিষিদ্ধ পিরানহা মাছ।

এ মাছের এমন কিছু বিষক্রিয়া আছে যা আমাদের পাকস্থলি বিনষ্ট করার প্রধান হাতিয়ার। এক বোতল অ্যালকোহলের চাইতেও এ মাছের ৫০ গ্রাম ওজনের একটি অংশ বেশি ক্ষতিকর। পিরানহা মাছের চর্বি আমাদের শ্বাস-প্রশ্বাসের স্বাভাবিক কার্যক্রম ব্যাহত করে। এ মাছে থাকা ফসফেট আমাদের মূত্র প্রদাহ সৃষ্টি করে।

এছাড়াও উক্ত মার্কেটের ভিতর বসে নিয়মিত গাঁজার আসর সহ চলে নানান অনিয়ম। মাদক বিক্রেতা ও সেবনকারীদের নিরাপদ আশ্রয়স্থল ইস্টার্ন হাউজিং নতুন কাঁচাবাজার যা নিয়ে একাধিক জাতীয় পত্রিকায় সংবাদ প্রকাশিত হয়েছে।

বিশ্বের বিভিন্ন দেশের মতো ২০০৮ সালের ফেব্রুয়ারি থেকে বাংলাদেশ সরকারও রাক্ষুসে স্বভাবের কারণে পিরানহা মাছ চাষ, উৎপাদন, পোনা উৎপাদন, বংশ বৃদ্ধি, বাজারে বিক্রি এবং বাজার থেকে ক্রয় সম্পূর্ণভাবে নিষিদ্ধ করেছে বাংলাদেশ সরকার। এছাড়া ২০১৪ সালের জুন থেকে আফ্রিকান মাগুরের আমদানি, উৎপাদন, বিপণনের উপরও নিষেধাজ্ঞা দেয়া হয়।

প্রটেকশন অ্যান্ড কনজারভেশন অব ফিস রুলস, ১৯৮৫ এর কয়েকটি ধারা সংশোধন করে আফ্রিকান মাগুরের উপর এ নিষেধাজ্ঞা জারি করে মৎস্য ও প্রাণী সম্পদ মন্ত্রণালয়। এছাড়া বিদেশ থেকে আফ্রিকান মাগুর ও পিরানহা মাছ, মাছের রেণু ও পোনা আমদানি করলে জেল জরিমানার বিধান রেখে মৎস্য সংঘ নিরোধ আইন-২০১৭ এর খসড়ায় নীতিগত অনুমোদন দেয় মন্ত্রিপরিষদ। এই আইন অমান্য করলে দুই বছরের জেল ও পাঁচ লাখ টাকা জরিমানা অথবা উভয় দণ্ডের বিধান রাখা হয়েছে।

এ ব্যাপারে বাংলাদেশ মৎস্য গবেষণা ইন্সটিটিউটের মহাপরিচালক ইয়াহিয়া মাহমুদ বলেন, বাংলাদেশ বন্যা প্রবণ দেশ। এখন পুকুরে বা ঘে‌রে যদি পিরানহা মাছ বা আফ্রিকান মাগুর মাছ চাষ ক‌রা হয় এবং সেই মাছ যদি পানিতে ভেসে অবরুদ্ধ স্থান থেকে মুক্ত জলাশয় যেমন নদী, খাল বিলে চলে আসে। তখন তাদের আক্রমণে দেশীয় ছোট বড় সব মাছ বিলুপ্ত হয়ে যেতে পারে।

তিনি আরও বলেন, মূলত এই মাছ খেলে কোনও স্বাস্থ্য ঝুঁকি নেই তবে পরিবেশগত ঝুঁকি রয়েছে অনেক। তবে পিরানহা মাছ ও আফ্রিকান মাগুর মাছের উৎপাদন, বিপণন, বিক্রি ও সংরক্ষণ স্থায়ীভাবে বন্ধ করা না গেলে বাংলাদেশের ২৬০ প্রজাতির স্বাদু পানির মাছ এবং ৪৭৫ প্রজাতির সামুদ্রিক মাছ অধিকাংশ বিলুপ্ত হয়ে যাবে।

কিন্তু বাংলাদেশে এখনও এসব মাছ প্রকাশ্যেই উৎপাদন ও খোলা বাজারে বিক্রি হতে দেখা যায়। যা বেশিরভাগ সময় থাই রূপচাঁদা বা সামুদ্রিক চান্দা নামে বিক্রি হয়। এর ছোট আকারের আফ্রিকান মাগুর মাছ, দেশি মাগুর মাছ বলে বিক্রি হতে দেখা যায়। দামে কম হওয়ায় সেই সঙ্গে অন্য মাছের নামে বিক্রি করায় প্রতিনিয়ত প্রতারিত হচ্ছে ক্রেতারা। সূত্র: বিবিসি বাংলা