
মোঃ রাসেল খান, জবি প্রতিনিধি: শিক্ষার্থীদের তিন দফা দাবির পরিপ্রেক্ষিতে জগন্নাথ বিশ্ববিদ্যালয়ের (জবি) জন্য বড় বাজেট বরাদ্দসহ গুরুত্বপূর্ণ উন্নয়ন পরিকল্পনা চূড়ান্ত করেছে সরকার।
গতকাল শুক্রবার সন্ধ্যায় এ ঘোষণা দেন বিশ্ববিদ্যালয় মঞ্জুরি কমিশনের (ইউজিসি) চেয়ারম্যান অধ্যাপক এস এম এ ফায়েজ। অনুষ্ঠিত এক উচ্চপর্যায়ের বৈঠকে বিশ্ববিদ্যালয়ের বার্ষিক পরিচালন বাজেট ১৪৭ কোটি টাকা থেকে বাড়িয়ে ২৫০ কোটি টাকায় উন্নীত করার সিদ্ধান্ত নেওয়া হয়।
নতুন বাজেটে ‘শিক্ষা বৃত্তি’ নামে ৫৬ কোটি টাকা শিক্ষার্থীদের আবাসন ভাতা হিসেবে বরাদ্দ করা হয়েছে। এই বাজেট এখন থেকে প্রতিবছর প্রবৃদ্ধি লাভ করবে, যা বিশ্ববিদ্যালয়ের আর্থিক কাঠামোকে আরও শক্তিশালী করবে।
এছাড়া, অতিরিক্ত ২০ কোটি টাকা উন্নয়ন বাজেট হিসেবে অনুমোদন দেওয়া হয়েছে। এর মাধ্যমে দ্বিতীয় ক্যাম্পাসে ৭ একর জমি ভরাট এবং সেখানে অস্থায়ী দুটি আবাসন হল নির্মাণ করা হবে।
বিশ্ববিদ্যালয় কর্তৃপক্ষ সরকারের এই সিদ্ধান্তের জন্য প্রধান উপদেষ্টা, ইউজিসি, শিক্ষা ও অর্থ মন্ত্রণালয়সহ সংশ্লিষ্ট সকলের প্রতি গভীর কৃতজ্ঞতা প্রকাশ করেছে। পাশাপাশি, আন্দোলনে অংশগ্রহণকারী শিক্ষক, শিক্ষার্থী, কর্মকর্তা, কর্মচারী ও সাংবাদিকদের প্রতিও আন্তরিক অভিনন্দন জানানো হয়েছে।
ইউজিসির পক্ষ থেকে জানানো হয়েছে,
“সরকারের পক্ষ থেকে জগন্নাথ বিশ্ববিদ্যালয়ের জন্য পরিচালন বাজেট বৃদ্ধির সিদ্ধান্ত হয়েছে। বাজেটে বরাদ্দ বৃদ্ধির মাধ্যমে শিক্ষার্থীদের প্রথম দাবির বিষয়ে সিদ্ধান্ত হয়েছে। একই সঙ্গে আবাসন সংকট নিরসনে খুব দ্রুত অস্থায়ী হল নির্মাণের কাজ শুরু করা হবে। দ্বিতীয় ক্যাম্পাসের কাজ অগ্রাধিকার ভিত্তিতে বাস্তবায়নের প্রক্রিয়াও ইতিমধ্যে শুরু হয়েছে।”
আন্দোলনকারী শিক্ষক-শিক্ষার্থীদের উদ্দেশে বিশ্ববিদ্যালয়ের উপাচার্য অধ্যাপক ড. মো. রেজাউল করিম বলেন,
“বিশ্ববিদ্যালয়ের পরিচালন বাজেট বৃদ্ধির সিদ্ধান্ত নেওয়া হয়েছে। বাজেট বৃদ্ধির মাধ্যমে শিক্ষার্থীদের প্রথম দাবির ব্যাপারে সিদ্ধান্ত হয়েছে। নতুন ক্যাম্পাসের কাজ দ্রুত বাস্তবায়নে আমরা সর্বোচ্চ চেষ্টা করব।”
এ বিষয়ে মতামত জানিয়ে ফিন্যান্স বিভাগের ১৯ ব্যাচের শিক্ষার্থী নুসরাত জাহান (লায়লা) বলেন,
“দীর্ঘ দুই দিন ধরে আমার বিশ্ববিদ্যালয়ের শিক্ষক ও শিক্ষার্থীরা ন্যায্য দাবির পক্ষে আন্দোলন চালিয়ে গেছেন। এই সময় প্রশাসনের পক্ষ থেকে শিক্ষার্থী, শিক্ষক ও সাংবাদিকদের ওপর হামলার ঘটনা ঘটেছে, যার তীব্র নিন্দা জানাই। যদিও শিক্ষার্থীবান্ধব এই সরকারের সময়ে দাবি আদায়ে অনশন ও মিছিল করতে হওয়াটা কিছুটা লজ্জাজনক বলে মনে করি। তারপরও বাজেট পাস হওয়ায় মোটামুটি সন্তুষ্ট। তবে লিখিত ঘোষণা পেলে শিক্ষার্থীদের মধ্যে আস্থাটা আরও দৃঢ় হতো।”
শিক্ষার্থীরা আশাবাদ ব্যক্ত করেছেন, এই পদক্ষেপগুলো জগন্নাথ বিশ্ববিদ্যালয়ের দীর্ঘদিনের সমস্যাগুলোর একটি স্থায়ী সমাধান এনে দেবে এবং শিক্ষা ও আবাসনের মান উল্লেখযোগ্যভাবে উন্নত হবে।