4:19 am, Friday, 23 May 2025

ভিসা নীতিতে শেখ হাসিনা বাপের বেটির ভূমিকা রেখেছেন; মুক্তিযুদ্ধ মন্ত্রী

  • Reporter Name
  • প্রকাশের সময়ঃ 05:28:17 pm, Tuesday, 26 September 2023
  • 19190 বার পড়া হয়েছে

নিজস্ব প্রতিবেদকঃ আমেরিকার ভিসা নীতির পরিপ্রেক্ষিতে প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা বাপের বেটির ভূমিকা রেখেছেন বলে মন্তব্য করেছেন মুক্তিযুদ্ধ মন্ত্রী আ.ক.ম. মোজাম্মেল হক।

মঙ্গলবার (২৬ সেপ্টেম্বর) প্রেসক্লাবে আয়োজিত এক আলোচনা সভায় এ কথা বলেন মন্ত্রী।

তিনি বলেন, ‘উনারা (আমেরিকা) এখন কী বলে এটা সেটা ভিসা নীতির কথা। আমাদের নেত্রী বঙ্গবন্ধুর রক্তের উত্তরাধিকারী এবং আদর্শের উত্তরাধিকারী প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা বাপের বেটি, যোগ্য পিতার যোগ্য কন্যা। কী কইছে? তুমি (আমেরিকা) সেংশন দিলে আমিও সেংশন দেব, আমার জনগণ দেবে। এরপর আর কোন কথা থাকে?’

বাংলাদেশের জনগণের আমেরিকায় যাওয়ার কোনো প্রয়োজন নেই উল্লেখ করে তিনি বলেন, বিদেশি কোন প্রভুর কথায় রাষ্ট্র চলবে না। আর আমেরিকা যাওয়া লাগবে কেন? আমাদের কোনো দরকার নেই। আমাদের সাবেক চিফ জাস্টিস ফয়েজ সিদ্দিকী বলেছিলেন— আমি কখনো আমেরিকান ভিসা নেইও নেই আমার কখনো প্রয়োজনও নেই।

তিনি বলেন, যারা বাংলাদেশের স্বাধীনতা বিরোধী ছিল তারা আমাদের আশেপাশেই আছে। ওরা আজকে আবার আমাদের স্বাধীনতার পতাকাকে খামচে ধরতে চায়। যে কারণে আজকে আমরা শহীদ মোহাম্মদ ময়েজউদ্দিনের মতো ত্যাগী শহীদ নেতাদের অভাব অনুভব করি। আর যারা আমাদের স্বাধীনতার পতাকাকে খামচে ধরতে চায়, দেশকে অকার্যকর ও ব্যর্থ রাষ্ট্রে পরিণত করতে চায় তাদের মোকাবেলা করতে শেখ হাসিনার নেতৃত্বে আমরা ঐক্যবদ্ধ থাকব।

আমেরিকা বাংলাদেশের স্বাধীনতা বিরোধী শক্তি ছিল উল্লেখ করে মন্ত্রী বলেন, আমেরিকা ৭১ এর ডিসেম্বরে বাংলাদেশের জন্য সপ্তম নৌবহর পাঠিয়েছিল, আমাদের মুক্তিযোদ্ধাদের ঠেকানোর জন্য। আর আমার মনে আছে ১৪ ডিসেম্বর জাতিসংঘে দাঁড়িয়ে আমেরিকার প্রতিনিধি বলেছিল ‘সিজ ফায়ার’। তার মানে যুদ্ধ থামিয়ে যে যার অবস্থানে থাকা। আর এটা যদি আমরা মেনে নিতাম অথবা জাতিসংঘে এটা পাস হতো তাহলে আমরা ১৬ ডিসেম্বর স্বাধীনতা পেতাম না, পাকিস্তানি হানাদার বাহিনী আমাদের কাছে আত্মসমর্পণ করত না।

তিনি আরও বলেন, বঙ্গবন্ধু যখন জাতিসংঘের সদস্যপদের জন্য আবেদন করেছিল তখন আমেরিকার প্রতিনিধি দল বলেছিলেন— বাংলাদেশকে যদি সদস্যপদ দেওয়া হয় তাহলে এটা পুরো পৃথিবীর জন্য স্থায়ী একটা বোঝা হবে। এর আগে হেনরি কিসিঞ্জার বাংলাদেশকে বটমলেস বাস্কেটও বলেছিল।

৭৪ সালে আমেরিকার জন্য বাংলাদেশে কৃত্রিম দুর্ভিক্ষ হয়েছিল উল্লেখ করে মুক্তিযুদ্ধ মন্ত্রী বলেন, ১৯৭৪ সালে বঙ্গবন্ধু নগদ পয়সা দিয়ে আমেরিকা থেকে চাল আর গম কিনেছিল। সেই চাল আর গম চট্টগ্রামের সমুদ্র বন্দরে এসে পৌঁছায়নি, মাঝপথ থেকে উধাও। তার ফলে কৃত্রিম দুর্ভিক্ষ হয়েছিল। এই দুর্ভিক্ষেরও অন্যতম কারণ এটা।

সভায় বাংলাদেশ মহিলা আওয়ামী লীগের সভাপতি মেহের আফরোজ চুমকি বলেন, আমাদের গাজীপুরের মাটি হচ্ছে বীরের মাটি। এখানে বহু বীর জন্ম নিয়েছে। স্বাধীনতা যুদ্ধের অনেক আগেই গাজীপুরে ঝামেলা শুরু হয়। সেখানে অনেক বীরকে শহীদ হতে হয়েছিল। আমি তাদের প্রতি বিনম্র শ্রদ্ধা জানাচ্ছি।

তিনি বলেন, স্বাধীনতা যুদ্ধ থেকে শুরু করে স্বৈরাচারী আন্দোলনের সময়ও এই রাজনীতিবিদরাই ভূমিকা রেখেছিলেন। পাশাপাশি আজকে বিএনপি গণতান্ত্রিক উপায়ে নির্বাচনের কথা বলে। কিন্তু, তারা কি গণতান্ত্রিক উপায়ে ক্ষমতায় এসেছিল? তাদের জন্মটা চিন্তা করলে আমরা তা বুঝতে পারি। বিএনপির মুখে গণতন্ত্রের কথা শুনাটা হাস্যকর।

শহীদ মোহাম্মদ ময়েজউদ্দিনের ৩৯ তম শাহাদাৎবার্ষিকী উপলক্ষে গণতন্ত্র এবং উন্নত সমৃদ্ধ বাংলাদেশ গঠনে শান্তি, ন্যায় বিচার প্রতিষ্ঠায় জননেতাদের ভূমিকা- শীর্ষক আলোচনা সভায় মুখ্য আলোচক হিসেবে উপস্থিত ছিলেন বাংলাদেশ অবজারভারের সম্পাদক ও সাবেক তথ্য উপদেষ্টা ইকবাল সোবহান চৌধুরী।

বিশেষ অতিথি হিসেবে উপস্থিত ছিলেন- জাতীয় প্রেসক্লাবের সাধারণ সম্পাদক শ্যামল দত্ত, শহীদ আহসানউল্লাহ মাস্টার স্মৃতি পরিষদের সভাপতি ও ঢাকা আইনজীবী সমিতির সাবেক সভাপতি এডভোকেট আবদুল বাতেন, বাংলাদেশ সাংবাদিক অধিকার ফোরামের সভাপতি আজিজুল ইসলাম ভূঁইয়া প্রমূখ।

Tag :

Write Your Comment

About Author Information

জনপ্রিয়

ভিসা নীতিতে শেখ হাসিনা বাপের বেটির ভূমিকা রেখেছেন; মুক্তিযুদ্ধ মন্ত্রী

প্রকাশের সময়ঃ 05:28:17 pm, Tuesday, 26 September 2023

নিজস্ব প্রতিবেদকঃ আমেরিকার ভিসা নীতির পরিপ্রেক্ষিতে প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা বাপের বেটির ভূমিকা রেখেছেন বলে মন্তব্য করেছেন মুক্তিযুদ্ধ মন্ত্রী আ.ক.ম. মোজাম্মেল হক।

মঙ্গলবার (২৬ সেপ্টেম্বর) প্রেসক্লাবে আয়োজিত এক আলোচনা সভায় এ কথা বলেন মন্ত্রী।

তিনি বলেন, ‘উনারা (আমেরিকা) এখন কী বলে এটা সেটা ভিসা নীতির কথা। আমাদের নেত্রী বঙ্গবন্ধুর রক্তের উত্তরাধিকারী এবং আদর্শের উত্তরাধিকারী প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা বাপের বেটি, যোগ্য পিতার যোগ্য কন্যা। কী কইছে? তুমি (আমেরিকা) সেংশন দিলে আমিও সেংশন দেব, আমার জনগণ দেবে। এরপর আর কোন কথা থাকে?’

বাংলাদেশের জনগণের আমেরিকায় যাওয়ার কোনো প্রয়োজন নেই উল্লেখ করে তিনি বলেন, বিদেশি কোন প্রভুর কথায় রাষ্ট্র চলবে না। আর আমেরিকা যাওয়া লাগবে কেন? আমাদের কোনো দরকার নেই। আমাদের সাবেক চিফ জাস্টিস ফয়েজ সিদ্দিকী বলেছিলেন— আমি কখনো আমেরিকান ভিসা নেইও নেই আমার কখনো প্রয়োজনও নেই।

তিনি বলেন, যারা বাংলাদেশের স্বাধীনতা বিরোধী ছিল তারা আমাদের আশেপাশেই আছে। ওরা আজকে আবার আমাদের স্বাধীনতার পতাকাকে খামচে ধরতে চায়। যে কারণে আজকে আমরা শহীদ মোহাম্মদ ময়েজউদ্দিনের মতো ত্যাগী শহীদ নেতাদের অভাব অনুভব করি। আর যারা আমাদের স্বাধীনতার পতাকাকে খামচে ধরতে চায়, দেশকে অকার্যকর ও ব্যর্থ রাষ্ট্রে পরিণত করতে চায় তাদের মোকাবেলা করতে শেখ হাসিনার নেতৃত্বে আমরা ঐক্যবদ্ধ থাকব।

আমেরিকা বাংলাদেশের স্বাধীনতা বিরোধী শক্তি ছিল উল্লেখ করে মন্ত্রী বলেন, আমেরিকা ৭১ এর ডিসেম্বরে বাংলাদেশের জন্য সপ্তম নৌবহর পাঠিয়েছিল, আমাদের মুক্তিযোদ্ধাদের ঠেকানোর জন্য। আর আমার মনে আছে ১৪ ডিসেম্বর জাতিসংঘে দাঁড়িয়ে আমেরিকার প্রতিনিধি বলেছিল ‘সিজ ফায়ার’। তার মানে যুদ্ধ থামিয়ে যে যার অবস্থানে থাকা। আর এটা যদি আমরা মেনে নিতাম অথবা জাতিসংঘে এটা পাস হতো তাহলে আমরা ১৬ ডিসেম্বর স্বাধীনতা পেতাম না, পাকিস্তানি হানাদার বাহিনী আমাদের কাছে আত্মসমর্পণ করত না।

তিনি আরও বলেন, বঙ্গবন্ধু যখন জাতিসংঘের সদস্যপদের জন্য আবেদন করেছিল তখন আমেরিকার প্রতিনিধি দল বলেছিলেন— বাংলাদেশকে যদি সদস্যপদ দেওয়া হয় তাহলে এটা পুরো পৃথিবীর জন্য স্থায়ী একটা বোঝা হবে। এর আগে হেনরি কিসিঞ্জার বাংলাদেশকে বটমলেস বাস্কেটও বলেছিল।

৭৪ সালে আমেরিকার জন্য বাংলাদেশে কৃত্রিম দুর্ভিক্ষ হয়েছিল উল্লেখ করে মুক্তিযুদ্ধ মন্ত্রী বলেন, ১৯৭৪ সালে বঙ্গবন্ধু নগদ পয়সা দিয়ে আমেরিকা থেকে চাল আর গম কিনেছিল। সেই চাল আর গম চট্টগ্রামের সমুদ্র বন্দরে এসে পৌঁছায়নি, মাঝপথ থেকে উধাও। তার ফলে কৃত্রিম দুর্ভিক্ষ হয়েছিল। এই দুর্ভিক্ষেরও অন্যতম কারণ এটা।

সভায় বাংলাদেশ মহিলা আওয়ামী লীগের সভাপতি মেহের আফরোজ চুমকি বলেন, আমাদের গাজীপুরের মাটি হচ্ছে বীরের মাটি। এখানে বহু বীর জন্ম নিয়েছে। স্বাধীনতা যুদ্ধের অনেক আগেই গাজীপুরে ঝামেলা শুরু হয়। সেখানে অনেক বীরকে শহীদ হতে হয়েছিল। আমি তাদের প্রতি বিনম্র শ্রদ্ধা জানাচ্ছি।

তিনি বলেন, স্বাধীনতা যুদ্ধ থেকে শুরু করে স্বৈরাচারী আন্দোলনের সময়ও এই রাজনীতিবিদরাই ভূমিকা রেখেছিলেন। পাশাপাশি আজকে বিএনপি গণতান্ত্রিক উপায়ে নির্বাচনের কথা বলে। কিন্তু, তারা কি গণতান্ত্রিক উপায়ে ক্ষমতায় এসেছিল? তাদের জন্মটা চিন্তা করলে আমরা তা বুঝতে পারি। বিএনপির মুখে গণতন্ত্রের কথা শুনাটা হাস্যকর।

শহীদ মোহাম্মদ ময়েজউদ্দিনের ৩৯ তম শাহাদাৎবার্ষিকী উপলক্ষে গণতন্ত্র এবং উন্নত সমৃদ্ধ বাংলাদেশ গঠনে শান্তি, ন্যায় বিচার প্রতিষ্ঠায় জননেতাদের ভূমিকা- শীর্ষক আলোচনা সভায় মুখ্য আলোচক হিসেবে উপস্থিত ছিলেন বাংলাদেশ অবজারভারের সম্পাদক ও সাবেক তথ্য উপদেষ্টা ইকবাল সোবহান চৌধুরী।

বিশেষ অতিথি হিসেবে উপস্থিত ছিলেন- জাতীয় প্রেসক্লাবের সাধারণ সম্পাদক শ্যামল দত্ত, শহীদ আহসানউল্লাহ মাস্টার স্মৃতি পরিষদের সভাপতি ও ঢাকা আইনজীবী সমিতির সাবেক সভাপতি এডভোকেট আবদুল বাতেন, বাংলাদেশ সাংবাদিক অধিকার ফোরামের সভাপতি আজিজুল ইসলাম ভূঁইয়া প্রমূখ।