০২:৩৮ অপরাহ্ন, শনিবার, ২৪ মে ২০২৫, ১০ জ্যৈষ্ঠ ১৪৩২ বঙ্গাব্দ

শিবালয়ে ইউনিয়ন কমিটি নিয়ে উপজেলা আওয়ামী লীগে দ্বন্দ্ব

  • Reporter Name
  • প্রকাশের সময়ঃ ০৮:১৮:৩৬ অপরাহ্ন, শনিবার, ৩০ সেপ্টেম্বর ২০২৩
  • ২৮১ বার পড়া হয়েছে

স্টাফ রিপোর্টার : মানিকগঞ্জের শিবালয় উপজেলার উথুলী ও শিবালয় ইউনিয়ন আওয়ামী লীগের কমিটি নিয়ে চরম দ্বন্দ্ব দেখা দিয়েছে উপজেলা আওয়ামী লীগের সভাপতি বীর মুক্তিযোদ্ধা রেজাউর রহমান খান জানু ও সাধারণ সম্পাদক মো. আ. কুদ্দুসের মধ্যে। উপজেলা আওয়মী লীগের সভাপতি ও সাধারণ সম্পাদক পক্ষে-বিপক্ষে একাধিক কমিটি ঘোষণা করায় তা সামাজিক যোগাযোগ মাধ্যমে ভাইরাল হয়। তাদের ঘোষিত কমিটি নিয়ে আগামী জাতীয় সংসদ নির্বাচনে প্রভাব ফেলতে পারে এমটাই ধারণা করছেন স্থানীয় একাধিক রাজনৌতিক বিশ্লেষক।
অনুসন্ধানে জানা যায়, উথুলী ইউনিয়নের সভাপতি মো. আব্বাস আলী ও শিবালয় ইউনিয়নের সভাপতি মো. হালিম ফকির ২টি কমিটির তালিকা উপজেলা আওয়ামী লীগের দপ্তর সম্পাদক রথীন সাহার নিকট জমা দেন। উপজেলা আওয়ামী লীগের সভাপতির নিকট কমিটির তালিকা পৌঁছালে ২১ সেপ্টেম্বর উথুলী ইউনিয়নের ২ জন সদস্যের পদ রদবদল করে এবং ১ জন সদস্যকে বাতিল করে কমিটি ঘোষণা করেন। অন্যদিকে ২০ সেপ্টেম্বর শিবালয় ইউনিয়নের ৫ জনকে রদবদল ও ৪ জনকে বাদ দিয়ে কমিটির অনুমোদন দেন।

জানা যায়, বাতিলকৃত সদস্যদের মধ্যে উথুলীর আবজাল হোসেন ও শিবালয়ের মোকাম্মেল, ইকবাল, হোসেন ও কিতাবালী বিএনপির সক্রিয় সদস্য ছিল। তারই জের ধরে উথুলী ইউনিয়নের সভাপতি মো. আব্বাস আলী ও শিবালয়ের ইউনিয়নের সভাপতি মো. হালিম ফকির তাদের সাধারণ সম্পাদকদের না জানিয়ে নতুন কমিটি তৈরি করে উপজেলা আওয়ামী লীগের সাধারণ সম্পাদকের নিকট জমা দেন। উপজেলা আওয়ামী লীগের সাধারণ সম্পাদক নিজস্বাক্ষরে উথুলিতে আবজাল হোসেন ও শিবালয়ে মোকাম্মেল, ইকবাল, হোসেন ও কিতাবালীকে বহাল রেখে স্থান-কাল ও তারিখ বিহীন নতুন কমিটি অনুমোদন প্রদান করেন।

তবে উপজেলা আওয়ামী লীগের সভাপতিকে তোয়াক্কা না করে এবং গঠনতন্ত্র লংঘন করে সাধারণ সম্পাদক কোনো কমিটির অনুমোদন দিতে পারেন না বলে জানান, উপজেলা আওয়ামী লীগের একাধিক শীর্ষ নেতৃবৃন্দ। তারা আরও বলেন, এই পাল্টা-পাল্টি কমিটির কারণে উপজেলা আওয়ামী লীগের নেতাকর্মীদের মাঝে দ্বন্দ্ব-সংঘাত বাড়তে থাকবে এবং আগামী দ্বাদশ জাতীয় সংসদ নির্বাচনে এর বিরূপ প্রভাব পড়বে।

কমিটি অনুমোদনের বিষয়ে উপজেলা আওয়ামী লীগের সাধারণ সম্পাদক মো. আ. কুদ্দুস কাছে জানতে চাইলে তিনি বলেন, উথুলী ইউনিয়নের সভাপতি ও সাধারণ সম্পাদক আমার কাছে একটি কমিটির কাগজ নিয়ে এলে সভাপতিকে দেই। সভাপতি কমিটির কাগজ দেখে তার নিজের কাছে রেখে দেন। আমার সভাপতি আমাকে না জানিয়ে নিজেই কাটছাট করে নিজের মতো করে হঠাৎ কমিটি ঘোষণা করেন, যা গঠনতন্ত্র পরিপন্থি। এর পরিপ্রেক্ষিতে আমি নতুন করে আরেকটি কমিটির অনুমোদন দেই।

একজন সাধারন সম্পাদক কমিটি অনুমোদন দিতে পারে কি না জানতে চাইলে তিনি বলেন, আমার অনুমোদন দেওয়া যদি সঠিক না হয় তাহলে কমিটি বাতিল হবে।
উপজেলা আওয়ামী লীগের সভাপতি বীর মুক্তিযোদ্ধা মো. রেজাউর রহমান খান জানুর নিকট কমিটি অনুমোদনের বিষয়ে জানতে চাইলে তিনি বলেন, আমার সাধারণ সম্পাদক উথুলী ও শিবালয় ইউনিয়ন কমিটির সদস্যদের দেখে আমার নিকট জমা দিলে তা উপজেলার আরও নেতা-কর্মীদের নিয়ে যাচাই-বাছাই পূর্বক জামায়াত বিএনপিকে বাদ দিয়ে কমিটির অনুমোদন দেই। বিএনপির সক্রিয় সদস্যদের বাদ দেওয়ার কারণেই সাধারণ সম্পাদক নতুন কমিটির অনুমোদন দেয়, যা সংগঠনের গঠনতন্ত্র পরিপন্থি।

জেলা আওয়ামী লীগের সহ-সভাপতি মো. রমজান আলী বলেন, উপজেলা পর্যায়ে ইউনিয়ন আওয়ামী লীগের কমিটি সভাপতি ব্যতীত, সাধারণ সম্পাদক কোন কমিটির অনুমোদন দিতে পারেন না। তিনি যদি কমিটি দিয়ে থাকেন তাহলে গঠনতন্ত্র লংঘন করেছেন

Tag :
About Author Information

জনপ্রিয়

শিবালয়ে ইউনিয়ন কমিটি নিয়ে উপজেলা আওয়ামী লীগে দ্বন্দ্ব

প্রকাশের সময়ঃ ০৮:১৮:৩৬ অপরাহ্ন, শনিবার, ৩০ সেপ্টেম্বর ২০২৩

স্টাফ রিপোর্টার : মানিকগঞ্জের শিবালয় উপজেলার উথুলী ও শিবালয় ইউনিয়ন আওয়ামী লীগের কমিটি নিয়ে চরম দ্বন্দ্ব দেখা দিয়েছে উপজেলা আওয়ামী লীগের সভাপতি বীর মুক্তিযোদ্ধা রেজাউর রহমান খান জানু ও সাধারণ সম্পাদক মো. আ. কুদ্দুসের মধ্যে। উপজেলা আওয়মী লীগের সভাপতি ও সাধারণ সম্পাদক পক্ষে-বিপক্ষে একাধিক কমিটি ঘোষণা করায় তা সামাজিক যোগাযোগ মাধ্যমে ভাইরাল হয়। তাদের ঘোষিত কমিটি নিয়ে আগামী জাতীয় সংসদ নির্বাচনে প্রভাব ফেলতে পারে এমটাই ধারণা করছেন স্থানীয় একাধিক রাজনৌতিক বিশ্লেষক।
অনুসন্ধানে জানা যায়, উথুলী ইউনিয়নের সভাপতি মো. আব্বাস আলী ও শিবালয় ইউনিয়নের সভাপতি মো. হালিম ফকির ২টি কমিটির তালিকা উপজেলা আওয়ামী লীগের দপ্তর সম্পাদক রথীন সাহার নিকট জমা দেন। উপজেলা আওয়ামী লীগের সভাপতির নিকট কমিটির তালিকা পৌঁছালে ২১ সেপ্টেম্বর উথুলী ইউনিয়নের ২ জন সদস্যের পদ রদবদল করে এবং ১ জন সদস্যকে বাতিল করে কমিটি ঘোষণা করেন। অন্যদিকে ২০ সেপ্টেম্বর শিবালয় ইউনিয়নের ৫ জনকে রদবদল ও ৪ জনকে বাদ দিয়ে কমিটির অনুমোদন দেন।

জানা যায়, বাতিলকৃত সদস্যদের মধ্যে উথুলীর আবজাল হোসেন ও শিবালয়ের মোকাম্মেল, ইকবাল, হোসেন ও কিতাবালী বিএনপির সক্রিয় সদস্য ছিল। তারই জের ধরে উথুলী ইউনিয়নের সভাপতি মো. আব্বাস আলী ও শিবালয়ের ইউনিয়নের সভাপতি মো. হালিম ফকির তাদের সাধারণ সম্পাদকদের না জানিয়ে নতুন কমিটি তৈরি করে উপজেলা আওয়ামী লীগের সাধারণ সম্পাদকের নিকট জমা দেন। উপজেলা আওয়ামী লীগের সাধারণ সম্পাদক নিজস্বাক্ষরে উথুলিতে আবজাল হোসেন ও শিবালয়ে মোকাম্মেল, ইকবাল, হোসেন ও কিতাবালীকে বহাল রেখে স্থান-কাল ও তারিখ বিহীন নতুন কমিটি অনুমোদন প্রদান করেন।

তবে উপজেলা আওয়ামী লীগের সভাপতিকে তোয়াক্কা না করে এবং গঠনতন্ত্র লংঘন করে সাধারণ সম্পাদক কোনো কমিটির অনুমোদন দিতে পারেন না বলে জানান, উপজেলা আওয়ামী লীগের একাধিক শীর্ষ নেতৃবৃন্দ। তারা আরও বলেন, এই পাল্টা-পাল্টি কমিটির কারণে উপজেলা আওয়ামী লীগের নেতাকর্মীদের মাঝে দ্বন্দ্ব-সংঘাত বাড়তে থাকবে এবং আগামী দ্বাদশ জাতীয় সংসদ নির্বাচনে এর বিরূপ প্রভাব পড়বে।

কমিটি অনুমোদনের বিষয়ে উপজেলা আওয়ামী লীগের সাধারণ সম্পাদক মো. আ. কুদ্দুস কাছে জানতে চাইলে তিনি বলেন, উথুলী ইউনিয়নের সভাপতি ও সাধারণ সম্পাদক আমার কাছে একটি কমিটির কাগজ নিয়ে এলে সভাপতিকে দেই। সভাপতি কমিটির কাগজ দেখে তার নিজের কাছে রেখে দেন। আমার সভাপতি আমাকে না জানিয়ে নিজেই কাটছাট করে নিজের মতো করে হঠাৎ কমিটি ঘোষণা করেন, যা গঠনতন্ত্র পরিপন্থি। এর পরিপ্রেক্ষিতে আমি নতুন করে আরেকটি কমিটির অনুমোদন দেই।

একজন সাধারন সম্পাদক কমিটি অনুমোদন দিতে পারে কি না জানতে চাইলে তিনি বলেন, আমার অনুমোদন দেওয়া যদি সঠিক না হয় তাহলে কমিটি বাতিল হবে।
উপজেলা আওয়ামী লীগের সভাপতি বীর মুক্তিযোদ্ধা মো. রেজাউর রহমান খান জানুর নিকট কমিটি অনুমোদনের বিষয়ে জানতে চাইলে তিনি বলেন, আমার সাধারণ সম্পাদক উথুলী ও শিবালয় ইউনিয়ন কমিটির সদস্যদের দেখে আমার নিকট জমা দিলে তা উপজেলার আরও নেতা-কর্মীদের নিয়ে যাচাই-বাছাই পূর্বক জামায়াত বিএনপিকে বাদ দিয়ে কমিটির অনুমোদন দেই। বিএনপির সক্রিয় সদস্যদের বাদ দেওয়ার কারণেই সাধারণ সম্পাদক নতুন কমিটির অনুমোদন দেয়, যা সংগঠনের গঠনতন্ত্র পরিপন্থি।

জেলা আওয়ামী লীগের সহ-সভাপতি মো. রমজান আলী বলেন, উপজেলা পর্যায়ে ইউনিয়ন আওয়ামী লীগের কমিটি সভাপতি ব্যতীত, সাধারণ সম্পাদক কোন কমিটির অনুমোদন দিতে পারেন না। তিনি যদি কমিটি দিয়ে থাকেন তাহলে গঠনতন্ত্র লংঘন করেছেন