আজ ১৪ই বৈশাখ, ১৪৩১ বঙ্গাব্দ, ২৭শে এপ্রিল, ২০২৪ ইং

শিক্ষকের বিরুদ্ধে ছাত্রীকে শ্লীলতাহানির অভিযোগ

স্টাফ রির্পোটার :  মানিকগঞ্জ সাটুরিয়া উপজেলার ধানকোড়া গিরীশ ইনস্টিটিউশনের সহকারী শিক্ষক ফিরোজের বিরুদ্ধে ১০ম শ্রেনীর এক ছাত্রীকে শ্লীলতাহানি করার অভিযোগ উঠেছে।  

সরেজমিনে গিয়ে জানা যায়, গত ১৬ সেপ্টেম্বর সহকারী শিক্ষক মো: ফিরোজ হোসেন স্কুলের ল্যাবরেটরিতে খাতা গননার কথা বলে ওই ছাত্রীকে ডেকে নিয়ে যায়। এসময় ওই শিক্ষক ওই ছাত্রীকে জড়িয়ে ধরে স্পর্শকাতর স্থানে হাত দেয়। ওই ছাত্রী অনেক জড়াজড়ির পর ল্যাবরেটরি থেকে অনেক কষ্টে দৌড়ে বাইরে বেড়িয়ে আসে। এ ঘটনা স্কুলের শিক্ষক, শিক্ষার্থী, অভিভাবক ও এলাকার লোকজনের মধ্যে জানাজানি হলে এলাকায় মুহূর্তের মধ্যে বেশ সমালোচনার সৃষ্টি হয়। এ ঘটনাকে সামাল দেওয়ার জন্য প্রধান শিক্ষক সুকৌশলে ওই শিক্ষককে ৭ দিনের বাধ্যতামুলক ছুটি প্রদান করেন। আরো জানা যায়, এরকম ঘটনার জন্য ইতিপূর্বেও ওই শিক্ষককে দুইবার সতর্ক করেছে স্কুল কর্তৃপক্ষ।

অভিযুক্ত সহকারী শিক্ষক মো: ফিরোজ হোসেন ওই বিদ্যালয়ের গণিত বিষয়ের সহকারী শিক্ষক। সেই সুবাদে ওই ছাত্রী তার নিকট গণিত বিষয় প্রাইভেটও পড়তেন। ওই দিনের ঘটনার পর থেকে ওই ছাত্রী অভিযুক্ত ওই শিক্ষকের নিকট প্রাইভেট পড়া বন্ধ করে দেয়। কয়েকদিন পর ওই শিক্ষক ছাত্রীর মায়ের নিকট ফোন করে ভিকটিমের সাথে কথা বলতে চায় কিন্তু ছাত্রী কথা বলতে রাজি হননি। এ ঘটনা লোকলজ্জার কারণে ওই ছাত্রী তার মায়ের কাছে খোলাখুলি বলতে না পেরে তার ফুফাতো ভাইয়ের বউয়ের  নিকট ওই শিক্ষকের কুকৃর্তির কথা খুলে বলেন।

ভিকটিমের ফুফাতো ভাইয়ের বউ রিয়া আক্তার বলেন, সহকারী শিক্ষক মো: ফিরোজ হোসেন আমার ননদকে স্কুলে ও রাস্তা-ঘাটে যাওয়াআসার পথে প্রায়ই উত্যক্ত করতেন। কিন্তু ওই শিক্ষকের ভয়ে এ কথা কারো কাছে বলার সাহস পায়নি। ওই শিক্ষক আমার ননদকে খারাপ কাজ করার উদ্দেশ্যে একাধিকবার জড়িয়ে ধরেছে এবং শরীরের বিভিন্ন স্পর্শকাতর জায়গায় হাত দিয়েছে। আমি ওই লম্পট শিক্ষকের কঠিন বিচার চাই।

ভিকটিমের মা ক্ষোভের সাথে কান্নাজড়িত কন্ঠে বলেন, আমিতো আগে জানতাম না ওই শিক্ষক এত খারাপ। আমার মেয়েকে সে একাধিকবার খারাপ কাজ করার জন্য প্রস্তাব দিয়ে উত্যক্ত করেছে। এইবারের এই ঘটনা জানার পর বুঝতে পারলাম এই জন্যেই আমার মেয়ে স্কুলে যেতে চায় না। আমি ওই লম্পট শিক্ষক ফিরোজের বরখাস্তসহ কঠিন শাস্তি কামনা করি। যাতে আর কোন ছাত্রীর সাথে এরকম ঘটনা ঘটানোর কোন সুযোগ না পায়।

ভিকটিমের দাদা কানু মিয়ার সাথে কথা বললে তিনি জানান, আমার নাতনির সাথে যে খারাপ আচরন করেছে আমি ওই লম্পট শিক্ষকের বিচার চাই। তবে আমাদের ইউনিয়নের চেয়ারম্যান আ: রউফ, ওই বিদ্যালয়ের প্রধান শিক্ষক মো: আবুল বাসার ও ম্যানেজিং কমিটির সভাপতি আ: হক ওই শিক্ষকের উপযুক্ত বিচারের আশ্বাস দিয়েছেন।

 এ ব্যাপারে অভিযুক্ত ওই সহকারী শিক্ষক ফিরোজ হোসেনের সাথে একাধিকবার যোগাযোগের জন্য ফোন করলে তার মোবাইল ফোন বন্ধ পাওয়া যায়।

এ বিষয়ে ধানকোড়া গিরীশ ইনস্টিটিউশনের প্রধান শিক্ষক মো: আবুল বাসার  জানান, আমি বিষয়টি শুনার পর ৬ সদস্য বিশিষ্ট তদন্ত কমিটি গঠন করেছি এবং ওই শিক্ষককে ৭ দিনের বাধ্যতামুলক ছুটি প্রদান করেছি। তদন্তে ওই শিক্ষক যদি দোষী প্রমাণিত হয় তবে প্রতিষ্ঠানিকভাবে ওই শিক্ষকের বিরুদ্ধে আইনগত ব্যাবস্থা নেয়া হবে।

ম্যানেজিং কমিটির সভাপতি আ: হক বলেন, আমি গত বৃহস্পতিবার বিষয়টি শুনে একটি তদন্ত কমিটি করে দিয়েছি। তদন্তে অভিযোগের সত্যতা পেলে সংশ্লিষ্ট উর্ধ্বতন কর্তৃপক্ষের সাথে আলোচনা করে ব্যাবস্থা নেয়া হবে।

এ বিষয়ে উপজেলা মাধ্যমিক শিক্ষা অফিসার ফকির জাকির হোসেন বলেন, যেহেতু বিষয়টি ক্রিমিনাল অফেন্স সেক্ষেত্রে ভিকটিমের পক্ষ থেকে থানায় অভিযোগ করলে তদন্ত করে আইনগত ব্যবস্থা নেয়া হবে।

সাটুরিয়া উপজেলা নির্বাহী অফিসার শান্তা রহমান জানান, তদন্তে সাপেক্ষে ব্যাবস্থা নেওয়া হবে।

Comments are closed.

     এই বিভাগের আরও সংবাদ