স্টাফ রিপোর্টার: মানিকগঞ্জ সদর উপজেলার পশ্চিম শানবান্দা গ্রামে ঘরের মেঝেতে মাটিতে পুঁতে রাখা মধ্যবয়সী নারীর মরদেহের রহস্য উদঘাটন করেছে পুলিশ। সেই সঙ্গে হত্যায় জড়িত ব্যক্তিকেও গ্রেফতার করেছে মানিকগঞ্জ সদর থানা পুলিশ।
শুক্রবার (২০ অক্টোবর) সকাল সাড়ে ১১ টার দিকে সদর থানায় প্রেসব্রিফিং এর মাধ্যমে রোকসানা হত্যার রহস্য উন্মোচন করেন পুলিশ সুপার গোলাম আজাদ খান।
হত্যার শিকার নারীর নাম রোকসানা (৪৫)। জেলার সিংগাইর উপজেলার বায়রা নয়াবাড়ি এলাকার মৃত ছইজুদ্দীনের কন্যা এবং গ্রেফতারকৃত আসামির স্ত্রী ছিলেন রোকসানা।
পুলিশ সুপার গোলাম আজাদ খান বলেন, পারিবারিক তুচ্ছ ঘটনাকে কেন্দ্র করে খুন হয় রোকসানা। নিজ বাড়িতে স্ত্রী রোকসানাকে খুন করে তার মরদেহ পাশের রুমের মেঝেতে পুঁতে রেখে পালিয়ে যায় স্বামী মোঃ বাবুল (৩৮)।
জেলার হরিরামপুর উপজেলার দরিকান্দি এলাকার শেখ কাশেম আলীর ছেলে বাবুল ৩ বছর আগে রোকসানাকে বিয়ে করেন। বিয়ের পরেই সৌদি আরব দেশে চলে যায় রোকসানা। বিদেশ থেকে নিয়মিতভাবে দেশে স্বামীকে টাকা পাঠান তিনি। সেই টাকা দিয়ে শানবান্দা এলাকায় জমি ক্রয় করে একতলা বাড়ি নির্মাণ করেন বাবুল।
চলতি মাসের ৬ তারিখে ছুটিতে দেশে আসেন রোকসানা। পরে সাভারের একটি ভাড়া বাসায় স্বামী বাবুলকে নিয়ে থাকতেন। এরপর ১৩ তারিখে শানবান্দা গ্রামের ওই বাড়িতে আসেন রোকসানা–বাবুল দম্পত্তি।
রাতে সেখানে পারিবারিক বিষয় নিয়ে রোকসানার সঙ্গে বাবুলের কথা কাটাকাটি হয়। এরপর একসময় রোকসানা ঘুমিয়ে যায়। ভোর রাতে রোকসানাকে শ্বাসরোধে হত্যা করে পাশের রুমের মেঝেতে মরদেহ পুঁতে রেখে পালিয়ে যায় বাবুল।
এরপর ওই বাড়ি থেকে প্রচণ্ড দুর্গন্ধ আসলে আশেপাশের লোকজন নির্মাণাধীন বাড়িতে প্রবেশ করেন এবং রুমের ভেতর থেকে গন্ধের কারণ অনুসন্ধান করতে গিয়ে রুমের ভেতরের মাটি–বালু সড়ালে নিহত নারীর হাত বেড়িয়ে আসে।
পরে বিষয়টি মানিকগঞ্জ সদর থানা পুলিশকে অবহিত করলে সদর থানা পুলিশ অজ্ঞাত পরিচয়ের ওই নারীর মরদেহ উদ্ধার করেন। পরে নিহতের ভাই খবর পেয়ে জেলা হাসপাতালে এসে ওই নারীর নাম পরিচয় নিশ্চিত করেন।
এ ঘটনায় মামলার পর তথ্য প্রযুক্তি ব্যবহার করে সদর থানার এসআই মোঃ টুটুল উদ্দিন, এসআই শাহজামালের একটি টিম খুলনা হাদিস পার্কের সামনে থেকে গ্রেফতার করেন বাবুলকে।
এরপর রোকসানাকে হত্যার বিষয়টি প্রাথমিকভাবে পুলিশের কাছে স্বীকার করে পুরো ঘটনার বিষয়টি ব্যক্ত করেন বলে সাংবাদিকদেরকে জানান পুলিশ সুপার। গ্রেফতার বাবুলের বিরুদ্ধে যথাযথ আইনি ব্যবস্থা চলমান রয়েছে বলেও মন্তব্য করেন তিনি।
প্রেস ব্রিফিং এ সদর সার্কেলের অতিরিক্ত পুলিশ সুপার মুহাম্মদ কামরুল হাসান, সদর থানার ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা (ওসি) মোঃ আঃ রউফ সরকারসহ সংশ্লিষ্ট অনেকেই উপস্থিত ছিলেন।