আজ ২০শে আশ্বিন, ১৪৩১ বঙ্গাব্দ, ৫ই অক্টোবর, ২০২৪ ইং

কালিয়াকৈরে ছয় লক্ষ টাকা আত্মসাতের মামলায় সাবেক চেয়ারম্যান কারাগারে।

কালিয়াকৈর (গাজীপুর) প্রতিনিধি: গাজীপুরের কালিয়াকৈরে ৬লক্ষ টাকা আত্মসাতের মামলায় সাবেক এক ইউপি চেয়ারম্যানকে কারাগারে পাঠিয়েছেন আদালত। মঙ্গলবার দুপুরে গাজীপুর বিজ্ঞ সিনিয়র জুডিসিয়াল ম্যাজিস্ট্রেট আদালত নং-৩ ওই আসামীকে কারাগারে পাঠান।
ওই আসামী হলেন, কালিয়াকৈর উপজেলার ভাতারিয়া এলাকার মৃত হাজী আছর উদ্দিনের ছেলে মজিবুর রহমান ইয়াসিন (৫৬)। তিনি উপজেলার আটাবহ ইউনিয়ন পরিষদের সাবেক চেয়ারম্যান।
ভুক্তভোগী পরিবার, মামলা ও আদালত সূত্রে জানা গেছে, কালিয়াকৈর উপজেলার ডাইনকিনি মৌজায় ৫ শতাংশ জমি ক্রয়ের চেষ্টা করেন মাসুদুর রহমান, স্বপন কুমার পাল ও বিজন কুমার পাল। ওই জমির মূল্য বাবদ ৪৪ লক্ষ টাকা নির্ধারণ করে মজিবুর রহমান ইয়াসিন গং। গত ২০১৫ সালের ২৮ ডিসেম্বর ক্রয়দাতাদের কাছ থেকে জমির বায়না বাবদ ১২ লক্ষ টাকা নেন মজিবুর গং। এ লক্ষে কালিয়াকৈর উপজেলা সাব-রেজিষ্ট্রি অফিসে সম্পাদিত ও রেজিষ্ট্রিকৃত বায়নাপত্র দলিল (১২৩৬৫) রেজিষ্ট্রি করা হয়। পরে বায়না মেয়াদের মধ্যে মজিবুর রহমান গংদের বাকী টাকা নিয়ে ওই জমি রেজিষ্ট্রির জন্য তাগিদ দেন ক্রেতাগণ। কিন্তু মজিবুর রহমানরা নানা তালবাহানা করতে থাকে। এতে সন্দেহ হলে খোঁজ-খবর নিতে শুরু করেন ক্রেতাগণ। তারা খোঁজ নিয়ে জানতে পারে নিম্ন তফসিল বর্নিত ভুমির নামজারী জোত নং ৮৫১/২০০০-২০০১, তারিখ- ২৮/০২/২০০১ আমিন উদ্দিন ও তাহার ওয়ারিশগণের নামে নালিশী ভুমিতে আসামীগণের কখনো দখলে ছিল না। বর্তমানেও তাদের দখলে নেই। পরে স্বপন কুমার পাল ও বিজন কুমার পালের সঙ্গে সমঝোতা হলেও মাসুদুর রহমানের ৬ লক্ষ টাকা ফেরত দিতে গড়িমসি করতে থাকেন মজিবুর গং। তারা ওই টাকা আত্মসাতের চেষ্টা করলে মাসুদুর রহমানের স্ত্রী সাজেদা আক্তার বাদী হয়ে গত ২০২২সালে গাজীপুর বিজ্ঞ সিনিয়র জুডিসিয়াল ম্যাজিস্ট্রেট আদালত নং-৩ একটি মামলা দায়ের করেন। মামলায় মজিবুর রহমান ইয়াসিনসহ তার দুই ছেলে জাহিদুর রহমান সুজন ও সুমন হোসেন, রিপন ও সবদুলের নাম উল্লেখ করা হয়। গাজীপুর বিজ্ঞ সিনিয়র জুডিসিয়াল ম্যাজিস্ট্রেট আদালত নং-৩ মঙ্গলবার দুপুরে সি, আর মামলা নং ৪২৭/২০২২-এ মজিবুর রহমানকে গাজীপুর কারাগারে প্রেরণ করেন।
মামলার বাদী সাজেদা আক্তার বলেন, একটা জমি কেনার জন্য মজিবুর রহমানের সাথে বায়না করেছিলাম। কিন্তু তিনি প্রতারণা মাধ্যমে অন্যের জমি বায়না করে আমার স্বামীর কাছ থেকে ৬ লক্ষ টাকা নেন। ওই টাকা ফেরত না দিলে আমি মামলা করি। এরপর আদালতেও টাকা ফেরত দেওয়ার কথা বলেও তিনি টাকা ফেরত দেননি। এজন্য তাকে কারাগারে পাঠিয়েছেন আদালত। তবে তার নামে এলাকায় এমন আরো অভিযোগ রয়েছে বলেও জানান মামলার বাদী।
এ বিষয়ে বাদী পক্ষের আইনজীবি এ্যাড. রুবেল হোসেন জানান, প্রথমে কালিয়াকৈর আমলি আদালতে মামলা হলে পিবিআই তদন্ত করে। ওই তদন্ত শেষে টাকা আত্মসাতের সম্পৃক্ততা পেলে মজিবুর রহমানের নামে ওয়ারেন্ট জারি করেন আদালত। পরে তিনি টাকা পরিশোধের শর্তে জামিনে যান। কিন্তু টাকা পরিশোধ না করায় এবং কোর্ট অবমাননা করার কারণে তাকে কারাগারে প্রেরণের আদেশ দেন আদালত।
বিবাদী পক্ষের আইজীবি এ্যাড. সামসুল হক জানান, আপোষ হওয়ার শর্তে তাকে জামিন দিয়েছিলেন আদালত। কিন্তু বাদী-বিবাদী আপোষ না করার কারণে আজ তাকে কারাগারে প্রেরণ করেছেন আদালত।

Comments are closed.

     এই বিভাগের আরও সংবাদ