স্টাফ রিপোর্টার : মানিকগঞ্জ সদর উপজেলার জাগীর ইউনিয়নে আকিজ ট্রেক্সটাইল মিলের বিষাক্ত বর্জ্য পানিতে জাগীর মেঘ শিমুল মৌজার প্রায় ১৬ একর কৃষি জমি অনাবাদি। মুখ খুলতে সাহস পাচ্ছে না অসহায় কৃষকেরা।
জানা যায়, এলাবাসীর উন্নয়নের জন্য মিলের পাশ দিয়ে সরকারি প্রকল্পের আওতায় রাস্তা তৈরী করেন স্থানীয় সরকার। সেই রাস্তার উপর দিয়ে বিগত দুই বছর যাবৎ আকিজের বর্জ্য পানি ও রাবিশ ফেলে একদিকে ক্ষতি করছে সরকারি রাস্তা ও অন্য দিকে টেক্সটাইলের পানি জমে থাকায় ক্ষতি হচ্ছে কৃষকের কৃষি জমি। যার ফলে ভোগান্তিতে পরছে পথচারীরা, কৃষক উৎপাদন করতে পারছে না ফসল।
প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা খাদ্যে স্বয়ং সম্পূর্ণ রাখার জন্য যতটুকু সম্ভব খাদ্য উৎপাদনে জমির সর্বোচ্চ ব্যবহার নিশ্চিত করতে দেশবাসীর প্রতি আহ্বান জানিয়েছেন। কিন্তু প্রধানমন্ত্রীর নির্দেশনাকে অমান্য করে কৃষি জমি নষ্ট করছে আকিজ টেক্সটাইল মিল কর্তৃপক্ষ।
অপরদিকে এই মিলের বর্জ্য পানি ধলেশ্বরী নদীতে ফেলে দুষিত করে করছে পানি ও বাতাসে ছড়াচ্ছে দুর্গন্ধ। এর দরুন নদীর মাছসহ বিভিন্ন ধরনের প্রানী মারা যাচ্ছে প্রতিনিয়ত। এলাকার মানুষ নদীতে আর আগের দিনের মত আর কাজ করতে পারচ্ছে না এবং ভোগান্তীতে দিন রাত কাটাতে হচ্ছে নদীর তীরবর্তী বসতীদের।
সরেজমিনে গিয়ে দেখা যায়, আকিজ টেক্সটাইল মিলের পাশ দিয়ে সরকারি রাস্তা ও কৃষি জমিতে ফেলা হচ্ছে বিষাক্ত বর্জ্য পানি। যার ফলে রাস্তা দিয়ে চলাচলরত যানবাহন ও পথচারীদের যাতায়াত মারাত্বক ভাবে ব্যহত হচ্ছে। অন্যদিকে প্রায় ১৬ একর কৃষি জমি অনাবাদি হয়ে পড়ে আছে। অসহায় জমির মালিকরা স্থানীয় মেম্বার ও চেয়ারম্যানের নিকট জানালেও পায়নি কোন প্রতিকার।
জাহাংগীর,ফজল,আয়নালসহ একাধিক স্থানীয়রা জানান, আকিজ টেক্সটাইল মিলের বর্জ্যে রাস্তাসহ কৃষি জমি নষ্ট হয়ে যাচ্ছে। রাস্তায় রাবিশ ফেলার কারনে খালি পায়ে হাটা যায় না এবং আকিজের পানি জমে থাকার কারনে আমাদের এলাকার কৃষি জমি অনাবাদি হয়ে পড়ছে। আমরা স্থানীয় চেয়ারম্যান ও মেম্বারদের কাছে জানিয়েও কোন প্রতিকার পাইনী।
স্থানীয় মেম্বার ফরিদুল ইসলাম রাজা ও ডালিয়া বেগমের সাথে কথা বললে তারা জানান, আমরা এ বিষয়ে আকিজ কম্পানীর কর্তৃপক্ষকে বলেছি কিন্তু তারা কোন ব্যবস্থা নেয় না।
জাগীর ইউনিয়নের চেয়ারম্যান মো: জাকির হোসেনের সাথে মুঠোফোনে কথা বললে তিনি জানান, আকিজের বর্জ্য পানিতে রাস্তা ও কৃষি জমির ক্ষতি হলে তাদেরকে ডেকে এনে বন্ধ করার ব্যবস্থা করতে হবে।
এ বিষয়ে আকিজ টেক্সটাইলের ডিজিএম জাকির হোসেনের সাথে কথা বলতে চাইলে, গেটের সিকিউরিটি নুরআলম গনমাধ্যম কর্মীদের বলেন, আপনারা অপেক্ষা করেন আমি স্যারের সাথে কথা বলে আসি। তিনি এক ঘন্টার পর এসে বলেন, আপনারা আগামী ২ তারিখে পর যে কোন একদিন আসেন স্যার আপনাদের সাথে কথা বলবে।
পরিবেশ অধিদপ্তরের উপ-পরিচালক মো: ইউসুফ আলী জানান, পরিবেশ দুষিত হলে এবং ঘটনাস্থলে গিয়ে অনিয়ম পেলে ব্যবস্থা নিব।
জেলার কৃষি সম্প্রসারন অধিদপ্তরের উপ-পরিচারক ড. রবীআহ নুর আহমেদের সাথে কথা বললে তিনি জানান, স্থানীয় জন প্রতিনিধি ও উপজেলা প্রশাসনের সহযোগীতা নিয়ে কৃষি জমি সুরক্ষার ব্যবস্থা নিতে হবে।