০৪:০৯ পূর্বাহ্ন, শনিবার, ২৪ মে ২০২৫, ৯ জ্যৈষ্ঠ ১৪৩২ বঙ্গাব্দ

মানিকগঞ্জে অবৈধভাবে অস্বাস্থ্যকর পরিবেশে তৈরি হচ্ছে ফুচকার পাপড়ি

  • Reporter Name
  • প্রকাশের সময়ঃ ০৭:২৫:৫৯ অপরাহ্ন, সোমবার, ১৯ অগাস্ট ২০২৪
  • ২০৩ বার পড়া হয়েছে
মো: আনোয়ার হোসেন, মানিকগঞ্জ প্রতিনিধি : মানিকগঞ্জ সদর উপজেলার বনপারিল গ্রামে ছিদ্দিক বেপারীর বাড়িতে অবৈধভাবে ও অস্বাস্থ্যকর পরিবেশে তৈরি করা হচ্ছে ফুচকার পাডড়ি। এসব ফুচকার পাপড়ি জেলার বিভিন্ন হাট-বাজারে বিক্রি করা হচ্ছে। তা খেয়ে অনেকে নিজেদের অজান্তে ডায়রিয়া, আমাশয়সহ নানা জটিল রোগে আক্রান্ত হচ্ছেন। এতে হুমকির মুখে পড়েছে জনস্বাস্থ্য। এ বিষয়ে তথ্য সংগ্রহে গেলে নগদ অর্থসহ অন্যান্য সাংবাদিক দিয়ে ম্যানেজ করার জন্য তদবির করেন কারখানাটির মালিকপক্ষ।
সরেজমিনে গিয়ে দেখা যায় , অপরিচ্ছন্ন ও অস্বাস্থ্যকর পরিবেশের মাঝে পোড়া তেলে তৈরি করছে অস্বাস্থ্যকর ফুচকার পাপড়ি। ভ্যাট, ট্যাক্স, পরিবেশ ও ফায়ারের লাইসেন্স ছাড়াই অবৈধভাবে কারখানায় উৎপাদন চলছে ফুসকার পাপড়ি। প্রতিদিন ৪/৫ মণ ফুসকার পাপড়ি তৈরি করছে এই কারখানায়। এসব ফুসকার পাপড়ি জেলার বিভিন্ন হাট-বাজারে প্রতি কেজি ২শ’ টাকা দরে বিক্রি করছেন তারা। একদিকে ফুসকার পাপড়ি তৈরি কারখানাটিতে লাইসেন্সিং না থাকায় সরকার হারাচ্ছে লক্ষ লক্ষ টাকার রাজস্ব। অন্যদিকে  ভোক্তারা আক্রান্ত হচ্ছে নানাবিধ রোগে ।
এই কারখানায় অপরিচ্ছন্নভাবে খালি গায়ে, খালি পায়ে এবং পোড়া তেলের সমন্বয়ে তৈরি করা হচ্ছে ফুচকার পাপড়ি। ফুচকা সবার পছন্দের সুস্বাদু মুখরোচক খাবার। যা সারা দেশের সব জায়গাতেই এই বিশেষ খাদ্যটির প্রচলন রয়েছে। জেলার অনেকেই হয়তো জানেন না যে ফুচকার পাপড়ি কিভাবে তৈরি হচ্ছে ? এই কারখানায় ফুচকার পাপড়ি তৈরিতে যে আটা, ময়দা ও তাল মাখনা  মাখা হয় তা একেবারেই অস্বাস্থ্যকর পরিবেশে।
সিদ্দিক বেপারি নিয়ম-নীতির তোয়াক্কা না করেই বেশ কয়েক বছর ধরে একই পদ্ধতিতে কাজ করে চালিয়ে যাচ্ছেন । কারিগর হিসেবে কাজ করেন ৮-৯ জন। তাদের খালি গায়ে, খালি পায়ে থাকা ধুলো-ময়লা ও শরীরের ঘাম যায় সেই খাবারে। আর সেই খাবার খেলে শরীর খারাপ হবে অবধারিত।  বিষয়টি সংশ্লিষ্ট কর্মকর্তাদের আমলে নেয়া দরকার।
সিদ্দিক বেপারির ছেলে সিপন বেপারি বলেন,‘স্থানীয় ইউনিয়ন পরিষদের ট্রেড লাইন্সেস ছাড়া আমাদের কারখানার কোন কাগজপত্র নেই। তাছাড়া আমাদের এখানে কোন সরকারি কর্মকর্তা পরিদর্শনে আসেননি। কারখানার কি কি লাইন্সেস লাগে আমরা জানি না। ইতি পূর্বে কয়েকজন সাংবাদিক এসেছিলেন। তাদের টাকা দিয়েছি। আপনারাও কিছু টাকা নিয়ে চলে যান।’
শিপনের এই অনৈতিক প্রস্তাব গ্রহণ না করে সেখান থেকে ফেরার পথেই ফোনে সাংবাদিক পরিচয় দিয়ে একাধিক ব্যক্তি সংবাদটি প্রকাশ না করার জন্য তদবির করেন। তবে, এই সব সাংবাদিকরাই তাদের মাসোহারার বিনিময়ে শেল্টার দিয়ে থাকেন বলে স্থানীয় একাধিক সূত্রে জানা গেছে।
এ বিষয়ে  জেলার নিরাপদ খাদ্য কর্মকর্তা নূর ই আলম জানান, অবৈধভাবে কোন খাবারের কারখানা গড়ে উঠলে তা বন্ধ করে দেয়া হবে।
সদর উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তা লিটন ঢালী বলেন, ‘কারখানাটি অস্বাস্থ্যকর পরিবেশ ও সরকারি নিয়মনীতি বর্হিভূতভাবে খাদ্য উৎপাদন করে থাকলে অবশ্যই আইনি ব্যবস্থা নেয়া হবে।’
Tag :
About Author Information

জনপ্রিয়

মানিকগঞ্জে অবৈধভাবে অস্বাস্থ্যকর পরিবেশে তৈরি হচ্ছে ফুচকার পাপড়ি

প্রকাশের সময়ঃ ০৭:২৫:৫৯ অপরাহ্ন, সোমবার, ১৯ অগাস্ট ২০২৪
মো: আনোয়ার হোসেন, মানিকগঞ্জ প্রতিনিধি : মানিকগঞ্জ সদর উপজেলার বনপারিল গ্রামে ছিদ্দিক বেপারীর বাড়িতে অবৈধভাবে ও অস্বাস্থ্যকর পরিবেশে তৈরি করা হচ্ছে ফুচকার পাডড়ি। এসব ফুচকার পাপড়ি জেলার বিভিন্ন হাট-বাজারে বিক্রি করা হচ্ছে। তা খেয়ে অনেকে নিজেদের অজান্তে ডায়রিয়া, আমাশয়সহ নানা জটিল রোগে আক্রান্ত হচ্ছেন। এতে হুমকির মুখে পড়েছে জনস্বাস্থ্য। এ বিষয়ে তথ্য সংগ্রহে গেলে নগদ অর্থসহ অন্যান্য সাংবাদিক দিয়ে ম্যানেজ করার জন্য তদবির করেন কারখানাটির মালিকপক্ষ।
সরেজমিনে গিয়ে দেখা যায় , অপরিচ্ছন্ন ও অস্বাস্থ্যকর পরিবেশের মাঝে পোড়া তেলে তৈরি করছে অস্বাস্থ্যকর ফুচকার পাপড়ি। ভ্যাট, ট্যাক্স, পরিবেশ ও ফায়ারের লাইসেন্স ছাড়াই অবৈধভাবে কারখানায় উৎপাদন চলছে ফুসকার পাপড়ি। প্রতিদিন ৪/৫ মণ ফুসকার পাপড়ি তৈরি করছে এই কারখানায়। এসব ফুসকার পাপড়ি জেলার বিভিন্ন হাট-বাজারে প্রতি কেজি ২শ’ টাকা দরে বিক্রি করছেন তারা। একদিকে ফুসকার পাপড়ি তৈরি কারখানাটিতে লাইসেন্সিং না থাকায় সরকার হারাচ্ছে লক্ষ লক্ষ টাকার রাজস্ব। অন্যদিকে  ভোক্তারা আক্রান্ত হচ্ছে নানাবিধ রোগে ।
এই কারখানায় অপরিচ্ছন্নভাবে খালি গায়ে, খালি পায়ে এবং পোড়া তেলের সমন্বয়ে তৈরি করা হচ্ছে ফুচকার পাপড়ি। ফুচকা সবার পছন্দের সুস্বাদু মুখরোচক খাবার। যা সারা দেশের সব জায়গাতেই এই বিশেষ খাদ্যটির প্রচলন রয়েছে। জেলার অনেকেই হয়তো জানেন না যে ফুচকার পাপড়ি কিভাবে তৈরি হচ্ছে ? এই কারখানায় ফুচকার পাপড়ি তৈরিতে যে আটা, ময়দা ও তাল মাখনা  মাখা হয় তা একেবারেই অস্বাস্থ্যকর পরিবেশে।
সিদ্দিক বেপারি নিয়ম-নীতির তোয়াক্কা না করেই বেশ কয়েক বছর ধরে একই পদ্ধতিতে কাজ করে চালিয়ে যাচ্ছেন । কারিগর হিসেবে কাজ করেন ৮-৯ জন। তাদের খালি গায়ে, খালি পায়ে থাকা ধুলো-ময়লা ও শরীরের ঘাম যায় সেই খাবারে। আর সেই খাবার খেলে শরীর খারাপ হবে অবধারিত।  বিষয়টি সংশ্লিষ্ট কর্মকর্তাদের আমলে নেয়া দরকার।
সিদ্দিক বেপারির ছেলে সিপন বেপারি বলেন,‘স্থানীয় ইউনিয়ন পরিষদের ট্রেড লাইন্সেস ছাড়া আমাদের কারখানার কোন কাগজপত্র নেই। তাছাড়া আমাদের এখানে কোন সরকারি কর্মকর্তা পরিদর্শনে আসেননি। কারখানার কি কি লাইন্সেস লাগে আমরা জানি না। ইতি পূর্বে কয়েকজন সাংবাদিক এসেছিলেন। তাদের টাকা দিয়েছি। আপনারাও কিছু টাকা নিয়ে চলে যান।’
শিপনের এই অনৈতিক প্রস্তাব গ্রহণ না করে সেখান থেকে ফেরার পথেই ফোনে সাংবাদিক পরিচয় দিয়ে একাধিক ব্যক্তি সংবাদটি প্রকাশ না করার জন্য তদবির করেন। তবে, এই সব সাংবাদিকরাই তাদের মাসোহারার বিনিময়ে শেল্টার দিয়ে থাকেন বলে স্থানীয় একাধিক সূত্রে জানা গেছে।
এ বিষয়ে  জেলার নিরাপদ খাদ্য কর্মকর্তা নূর ই আলম জানান, অবৈধভাবে কোন খাবারের কারখানা গড়ে উঠলে তা বন্ধ করে দেয়া হবে।
সদর উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তা লিটন ঢালী বলেন, ‘কারখানাটি অস্বাস্থ্যকর পরিবেশ ও সরকারি নিয়মনীতি বর্হিভূতভাবে খাদ্য উৎপাদন করে থাকলে অবশ্যই আইনি ব্যবস্থা নেয়া হবে।’