নিজস্ব প্রতিবেদকঃ দীর্ঘদিনের বৈষম্য বিরোধী ছাত্র আন্দোলন ও দেশের অস্থির পরিস্থিতির কারণে আশুলিয়ায় চিত্ত বিনোদন পার্ক ফ্যান্টাসি কিংডমে দর্শনার্থীর সংখ্যা আগের থেকে অনেকটাই কম ছিলো বিধায় আর্থিকভাবে তাদেরকে চরম লোকসানে পড়তে হয়েছে।
শনিবার দুপুরে সরেজমিনে আশুলিয়ার জামগড়া এলাকার চিত্ত বিনোদন পার্ক ফ্যান্টাসি কিংডমে ঘুরে দর্শনার্থীদের আনাগোনা কম হওয়ার এমন চিত্র দেখা গেছে।
জানা যায়, একদিকে গত মাসে চলমান আন্দোলন, অন্যদিকে বৃষ্টির কারণে এ অঞ্চলের মহাসড়কে সৃষ্ট যানজটে চলাচলে বিঘ্ন ঘটায় দর্শনার্থী না থাকায় আর্থিকভাবে চরম সংকটে পড়তে হয়েছে প্রতিষ্ঠানটির। তবে দেশের পরিস্থিতি স্বাভাবিক হওয়ায় সামনের দিনগুলোতে দর্শনার্থীদের আনাগোনায় জমজমাট হয়ে উঠবে। এরফলে আগামী দিনে তাদের ক্ষতি পুষিয়ে নিতে পারবেন বলে এমনটাই আশাবাদ ব্যাক্ত করেন প্রতিষ্ঠানটির কর্তৃপক্ষ।
আরও জানা যায়, দর্শনার্থী কম থাকায় বিনোদন পার্কটির কার্যক্রম সকাল ১০ থেকে শুরু করে সন্ধ্যা ৬টায় বন্ধ করে দেওয়া হয়। সামনের দিনগুলোতে দর্শনার্থীদের আনাগোনায় জমজমাট হলে আগের নিয়মে চলবে এই পার্কটি। দর্শনার্থী কিছুটা আনাগোনা শুরু হলেও বিভিন্ন রাইডগুলো ছিলো ফাঁকা। তবে আগের দিনের ন্যায় তুলনামূলকভাবে দর্শনার্থী যাতে করে আরও বৃদ্ধি পায় সেজন্য সংযোজন করা হয়েছে আন্তর্জাতিক মানসম্পন্ন তুরস্কে উদ্ভাবিত রাইড টর্নেডো ৩৬০ ভিআর। টর্নেডো ৩৬০ ভিআর এখানকার বিনোদন খাতে নতুন দ্বার উন্মোচন হবে। এছাড়া ওয়াটার কিংডমে আরও নতুন কিছু সংযোজন করা হবে বলেও জানা যায়।
মিরপুর থেকে ঘুরতে আসা আব্দুর রহিম নামের এক দর্শনার্থী বলেন, আন্দোলনের কারণে মানুষের মনে ভয়-ভীতি কাজ করছিলো। এসময়ে ঘুরাঘুরিতো দূরের কথা বাসা থেকে বের হওয়াটাই জীবনের জন্য ঝুঁকি ছিলো। এখন পরিস্থিতি স্বাভাবিক হওয়ায় সকলের মাঝে স্বস্তি ফিরে এসেছে। তাই আমার পরিবার নিয়ে এখানে ঘুরতে এলাম। পূর্বেও এসেছি। তবে দর্শনার্থীর সংখ্যা আগের থেকে তুলনামূলক কম। এখানে এসে আমার ভালো লাগছে।
শিক্ষার্থী নাইম বলেন, আন্দোলনের সময়ে কোথাও ঘুরতে যেতে পারিনি। আমরা দেশটা নতুন করে স্বাধীন করেছি। এই আনন্দে আরও একটু বিনোদন পেতে বন্ধুদেরকে নিয়ে ওয়াটার কিংডমে চলে এলাম। এখানে মুক্তভাবে সাঁতার কাটতে পেরে খুবই আনন্দিত।
প্রতিষ্ঠানটির ডেপুটি জেনারেল ম্যানেজার (অপারেশন) মেজর কাজী মো. জহুরুল ইসলাম রাফি (রেফডি) বলেন, আমাদের ফ্যান্টাসি কিংডমে গত মাসে দর্শনার্থী প্রায় ছিলো না বললেই চলে, সেই হিসেবে আমরা খুবই সংকট এর মধ্যে ছিলাম এবং ব্যাবসায়িক ভাবে খুবই ক্ষতিগ্রস্ত হয়েছি। তবে গত ১৬ই আগষ্ট থেকে ২২ই আগষ্ট (গত বৃহস্পতিবার) পর্যন্ত দর্শনার্থী ছিলো ৮০০’র মত। যেটা কয়েক মাসের মধ্যে একটা ভালো লক্ষণ বলে মনে হয়েছে। এরপরেও দর্শনার্থীর সংখ্যা এখনো কম। ব্যাবসায়িক ভাবে আমরা এখনো ক্ষতিগ্রস্ত। পরিস্থিতি স্বাভাবিক হওয়ায় বর্তমানে মানুষের মধ্যে একটা স্বস্তি ফিরে এসেছে। এবং মানুষ আসা শুরু করেছে। অন্যদিকে এ অঞ্চলের মহাসড়কটি চলাচলে অনুপযোগী হয়ে পড়েছে। এটি আমাদের একটা প্রতিবন্ধকতা। বর্ষার কারণে যানযটের সৃষ্টি হয় বিধায় একারণেই হয়তো বেশি মানুষ আসতে ভয় পাচ্ছে। সব মিলিয়ে আমরা আশা করছি আগামী দিনে আমাদের বিনোদন পার্কটি আবারও জমজমাট হয়ে উঠবে এবং এখানে এসে মানুষ খুব আনন্দের সঙ্গে তাদের সময়টা কাটাতে পারবেন।