আব্বাসী,স্টাফ রিপোর্টার (মানিকগঞ্জ) : বৈষম্য বিরোধী ছাত্র- জনতা আন্দোলনে নিহত মানিকগঞ্জের দুই শহীদ পরিবারকে জামায়াতে ইসলামীর পক্ষ থেকে নগদ দুই লক্ষ টাকা করে আর্থিক সহায়তা প্রদান করেছেন জামায়েতের কেন্দ্রীয়ী নির্বার্হী পরিষদ সদস্য অধ্যক্ষ ইজ্জত উল্লাহ।
বৃহস্পতিবার (২৯ আগষ্ট) সকাল দশটার দিকে মানিকগঞ্জের সাটুরিয়া উপজেলার দরগ্রাম এলাকয় ও দুপুরে শিবালয় উপজেলার রুপসা এলাকায় বৈষম্য বিরোধী ছাত্র আন্দোলনে শহীদ হওয়া আফিকুল ইসলাম সাদ এবং রফিকুল ইসলামের কবর জিয়ারত শেষে দুই পরিবারের হাতে এ অর্থ প্রদান করা হয়।
জামায়েতের কেন্দ্রীয়ী নির্বার্হী পরিষদ সদস্য অধ্যক্ষ ইজ্জত উল্লাহ বলেন, আওয়ামীলীগ ফেরাউনের ন্যায় নির্বিচারে দেশে হত্যাযজ্ঞ চালিয়েছিল।এক ফেরউন গেলেও এখনো অনেক ফেরাউন তাদের কার্যক্রম চালিয়েছে।
আমরা ১৫ টি বছর স্বৈরাচারী আওয়ামীলীগ সরকারের শাসনামলে নানা ভাবে নির্যাতনের শিকার হয়েছি। বিএনপি জামায়েতসহ অন্যান্য দল মিলে নিয়মতান্ত্রিকভাবে আন্দোলন করে ছিলাম। আমাদের সাধ্য অনুসারে চেষ্টা করেছি। কিন্তু আমরা পারিনি তবে পেরেছেন আমাদের সন্তাানেরা, ছাত্র-জনতা মিলে ৩৬ দিনেই তা পেরেছে।তারা গণবিপ্লব ঘটায়েছে।
তিনি বলেন, এই জালিম সরকান আয়না ঘর তৈয়র করে করেছিল। দেশের সাধারণ মানুষদের ধরে নিয়ে আয়না ঘরে নিয়ে মাসের পর মাস,বছরের পর বছর আটকে রেখে নির্যাতন করা হতো। ব্যারিষ্টার আরমান,জেনারেল আযমীকে ধীর্ঘ দিন আয়না ঘরে আটকে রেখে নির্যাতন করা হয়েছে। একই ভাবে দেশের শতশত মানুষকে একই কায়দায় নির্যাতন করা হয়েছে।
দেশের বর্তমান অর্থনৈতিক অবস্তা নিয়ে অধ্যক্ষ ইজ্জত উল্লাহ বলেন, জালেম সরকার বিদেশ থেকে ১৮ লাখ ৩৬ হাজার ঋণ করে উন্নয়নের নামে বড় বড় প্রকল্প হাতে নিয়ে হাজার হাজার কোটি টাকা লোপাট করেছে। ব্যাংক গুলোকে ফোকলা করে দিয়েছে, বাংলাদেশের অর্থনৈতিক অবস্থা চরম ধ্বংসের দ্বার প্রান্তে নিয়ে গেছে। আওয়ামী লীগের নেতারা এ দেশ থেকে দূর্নীতি করে হাজার হাজার কোটি টাকা বিদেশে পাচার করেছে।
দ্রব্য মূল্যের উর্ধগতিতে ১৮ কোটি জনতা তাদের জীবন পরিচালনা করতে নাভিশ্বাস ছুড়েছেন। অর্থনৈতিক খাতে চরম দূর্নীতিতে ভরে গেছে, দূ:শ্বাসনে নির্যাতিত নিপীড়িত হয়েছে আমাদের সমাজের মানুষের উপর। গত (৫ আগষ্ট) স্বৈরশাসকের দেওয়া কারফিউ ভেঙ্গে দেশের ছাত্র-জনাতা রাজপথে নেমে আসে তারা এক ঐতিহাসিক বিপ্লব ঘটিয়েছে।
এ সময় উপস্থিত ছিলেন, বাংলাদেশ জামায়াতে ইসলামীর ঢাকা উত্তর অঞ্চলের পরিচালক মাওলানা দেলোয়ার হোসাইন, জেলা আমীর হাফেজ মাওলানা কামরুল ইসলাম, সাটুরিয়া উপজেলার আমীর আবু সাঈদ (বিএসসি),মানিকগঞ্জ সদর আমির ফজলুল হক, শিবালয় উপজেলা আমীর মোঃ হাতেম আলীসহ আরো অনেকে।
উল্লেখ্য, সোমবার (৫ আগষ্ট) দুপুরের দিকে ঢাকা জেলার ধামরাইয়ে হার্ডিঞ্জ সরকারি উচ্চ বিদ্যালয় ও কলেজের সামনে মিছিল করা অবস্থায় পুলিশের গুলিতে আহত হন সাদ। পরে সাভার এনাম মেডিকেল কলেজ হাসপাতালে চিকিৎসাধীন অবস্থায় (৮ আগষ্ট) মারা যায় সাদ। তিনি সাভার ক্যান্টনমেন্ট পাবলিক স্কুল এন্ড কলেজের ২য় বর্ষের ছাত্র ছিলো।
অপরজন মানিকগঞ্জের শিবালয় উপজেলার পাটুরিয়া ঘাটে বৈষম্য বিরোধী ছাত্ররা মিছিল নিয়ে যাওয়ার পথে নৌ-পুলিশ অতর্কিত গুলি বর্ষণ করে এবং সেই গুলিতে রফিকুল ইসলাম গুরুত্ব আহত হয়। রফিকুল ইসলামকে স্থানীয়রা উদ্ধার করে মানিকগঞ্জ সদর হাসপাতালে নেওয়া হলে কর্তব্যরত চিকিৎসক তাকে মৃত ঘোষনা করেন। বাংলাদেশ জামায়াত ইসলামী তাদের নিজ দলের ফান্ড থেকে দুই লাখ করে দুই শহীদ পরিবারকে মোট চার লাখ টাকা আর্থিক সহায়তা প্রদান করেন ।