আজ ২০শে আশ্বিন, ১৪৩১ বঙ্গাব্দ, ৫ই অক্টোবর, ২০২৪ ইং

আশুলিয়া পুলিশের কাণ্ড; ভুয়া সমন্বয়ক সাজিয়ে আসামির বাড়িতে চাইলেন টাকা

নিজস্ব প্রতিবেদকঃ ঢাকার আশুলিয়ায় ভুয়া সমন্বয়ক ও সেনাবাহিনীর অফিসার সাজিয়ে আসামির বাড়িতে হাজির আশুলিয়া থানায় সদ্য যোগদানকৃত উপ-পরিদর্শক (এসআই) আমিরুল ইসলাম। কোন ধরনের তদন্ত কিংবা ওয়ারেন্ট ছাড়াই আসামি ধরে থানায় আনেন তিনি। পরে তার বিরুদ্ধে আসামি ছেড়ে দেওয়ার বিনিময়ে দুই লাখ টাকা চেয়েছেন বলে দাবি আসামি পরিবারের।

খোঁজ নিয়ে জানা যায়, সরকারি নবাব স্টেটের কিছু গাছ কেটে বিক্রি করেন আইয়ুব আলী সিকদার, বদরুল আলম, আয়নাল, মজিবরসহ তাদের সহযোগীরা। যে জমির গাছ কাটা ও জমি দখলের বিষয়ে মামলাটি দায়ের করা হয়েছে মুলত ওই সকল গাছ ও জমি সরকারের। গাছ কাটার পর ঢাকা নবাব স্টেট কর্তৃপক্ষ সরকারি গাছ কাটার তদন্ত করার জন্য একজন সার্ভেয়ার তদন্ত করে গেছেন। সেই তদন্ত রিপোর্টে রয়েছে আইয়ুব আলী সিকদার,বদরুল আলম, আয়নাল, মজিবর গং গাছ গুলো কেটে বিক্রি করেছে। তাই নিজেদের অপকর্ম ধামা চাপা দিতে অসহায় সাধারণ মানুষকে আসামি করে এই মিথ্যা মামলা দায়ের করেন অপরাধীরা। তাদের এই কাজে মোটা অংকের টাকা খেয়ে সহযোগিতা করেন অভিযুক্ত পুলিশ সদস্য।

এ বিষয়ে ভুক্তভোগী মতিউর রহমানের স্ত্রী জেসমিন আক্তার বলেন, স্বৈরাচারী হাসিনা সরকার থাকাকালীন সময়ে যে হেনস্তা করেছে পুলিশ এখন সরকার পতনের পরও কিছু কিছু পলিশ সেই স্বৈরাচারিতা ভুলতে পারেনি। হঠাৎ করে আশুলিয়া থানার এসআই আমিরুল ইসলাম আমার স্বামীকে তুলে নিয়ে যাওয়ার সময় আমি এগিয়ে আসি পরে তিনি আমাকে একজনকে দেখিয়ে বলে তিনি সেনাবাহিনীর বড় অফিসার আমার স্বামীকে সেনাবাহিনীর ক্যাম্পে নিয়ে গিয়ে জিগ্যেসাবাদ করে ছেড়ে দিবে। কোন কাগজ বা গ্রেফতারি পরোয়ানা ছাড়া কেন নিয়ে যাচ্ছেন প্রশ্ন করলে তিনি সেনাবাহিনী ও বিজিবির ভয় দেখান ও আমার কাছে ছেড়ে দেয়ার জন্য ২ লক্ষ টাকা দাবি করেন। আমরা গরিব মানুষ টাকা কোথা থেকে দিবো তখন সে আমার স্বামীকে গ্রেফতার করে নিয়ে যায় আর বলে সেনাবাহিনীর ক্যাম্পে এসে যোগাযোগ করতে। পরে আমি সেনাবাহিনীর ক্যাম্পে এসে তাকে না পেয়ে আশুলিয়া থানায় ওসি মহোদয়ের নিকট জানতে গেলে তিনি কিছুই জানেন না আসামি ধরার ব্যাপারে আমাকে জানিয়ে দেন। এর পর থেকে দারোগা আমার ফোন আর রিসিভ করেননি। এছাড়াও জাহাঙ্গীরনগরের প্রকৃত সমনয়কদের সাথে কথা বলে জানতে পারি এই পুলিশ সদস্য ভুয়া সমন্বয়ক নিয়ে গেছেন। এবং সেনাবাহিনীর কর্মকর্তা বলে যাকে পরিচয় দিয়েছেন সেই ব্যক্তিও ভূয়া এবং সেই ব্যক্তি একজন প্রতারকও বলে জানতে পারি থানায় এসে। আমরা সাধারণ মানুষ যদি পুলিশ দ্বারা এভাবে হেনস্তা হই তাললে দেশ ভালো হবে কবে। আমি এর সুষ্ঠু বিচার চাই।

এ বিষয়ে অভিযুক্ত আশুলিয়া থানার উপ-পরিদর্শক (এসআই) আমিরুল ইসলামের কাছে জানতে চাইলে তিনি জানান, মামলা হয়েছে আমি আসামি ধরে এনেছি, ভূয়া সমন্বয়ক ও সেনাবাহিনীর কর্মকর্তা সাজিয়ে টাকা চাওয়ার বিষয়ে জানতে চাইলে তিনি রাগান্বিত হয়ে বলেন আমি জাহাঙ্গীর নগর বিশ্ববিদ্যালয়ের ছাত্র এমন ক্ষমতা দেখিয়ে থানা থেকে বেরিয়ে জান তিনি। এর পর আর কারো ফোন রিসিভ করেননি তিনি।

এ বিষয়ে আশুলিয়া থানার পরিদর্শক (ওসি) মোহাম্মদ মাসুদুর রহমানের কাছে জানতে চাইলে তিনি জানান, গাছ কাটার বিষয়ে একটি মামলা হয়েছে আমি জানি কিন্তু আসামি ধরার বিষয়টি আমি জানি না। মামলাটি সঠিক ভাবে তদন্ত না করে আমাকে না জানিয়ে এভাবে আসামি ধরে নিয়ে আসাটা আসলে খুবই দুঃখজনক। বিষয়টি আমি দেখছি।

Comments are closed.

     এই বিভাগের আরও সংবাদ