আজ ২০শে আশ্বিন, ১৪৩১ বঙ্গাব্দ, ৫ই অক্টোবর, ২০২৪ ইং

বারহাট্টায় দুই ভাইয়ের বিরুদ্ধে স্কুলের জায়গা বিক্রির অভিযোগ

নিজস্ব প্রতিবেদকঃ নেত্রকোনার বারহাট্টা উপজেলায় একটি সরকারি প্রাথমিক বিদ্যালয়ের জমি বিক্রি করে দেয়ার অভিযোগ উঠেছে। উপজেলার আসমা ইউনিয়নের গুমুরিয়া সরকারি প্রাথমিক বিদ্যালয়ের প্রধান শিক্ষক আ. হান্নান ও তার ভাই আ. মান্নানের বিরুদ্ধে এই অভিযোগ উঠেছে।

মঙ্গলবার আসমা ইউনিয়নের গুমুরিয়া গ্রামের মৃত মঞ্জুরুল হকের ছেলে সিরাজুল হক নেত্রকোনা জেলা প্রশাসক বরাবর এই অভিযোগ করেন।

অভিযোগ থেকে জানা যায়, গুমুরিয়া গ্রামের মৃত ইব্রাহিমের ছেলে হান্নান ১৯৮৭ সালে নিজের ৪০ শতাংশ জমিতে একটি টিনশেড ঘরের মাধ্যমে শুরু করেন ওই বিদ্যালয়ের কার্যক্রম এবং শুরু থেকেই তিনি ছিলেন বিদ্যালয়টির প্রধান শিক্ষক। ২০১৩ সালে স্কুলটি সরকারিকরণ হয়। পরে বিভিন্ন কারসাজি করে নিজের ভাইকে বানিয়ে ফেলেন বিদ্যালয়ের জমিদাতা। বর্তমানে বিদ্যালয়টি নকশা অনুযায়ী গুমুরিয়া মৌজায় ৫৬৫ দাগে রয়েছে। এই দাগে মোট জমির পরিমাণ ১৬ শতাংশ। কোনো খেলার মাঠ না থাকায় কোমলমতি শিক্ষার্থীরা স্কুলটিতে ভর্তি হতে চায় না। বিদ্যালয়ের প্রধান শিক্ষক হান্নান বিভিন্ন সময় বিদ্যালয়ের বাকি জায়গা কোথায় আছে জিজ্ঞেস করলে স্কুলের পশ্চিম পাশে ৫৬৪ দাগটি দেখিয়ে দেয়। নকশায় দেখা যায় ৫৬৪ দাগে ৯ শতাংশ জমি আছে। দুই দাগে মোট জমি ২৫ শতাংশ রয়েছে। ৪০ শতাংশের বাকি আরও ১৫ শতাংশ জমি ব্যক্তি মালিকানা দখলে আছে।

ইউনিয়নের ভূমি অফিস সূত্রে জানা যায়, বিদ্যালয়ের বর্তমান ভবনটি ৫৬৫ দাগের ১৬ শতাংশ জমির ওপরে আছে। ৫৬৪ দাগে ৯ শতাংশ জায়গা স্কুলের পশ্চিম পাশে রয়েছে। আসমা ইউনিয়নে নায়েব মইনুল হক বলেন ৫৬৫ ও ৫৬৪ দাগের মোট ২৫ শতাংশ জায়গা  মনসুর আহমাদ মহিলা কলেজের কাছে বিক্রি করে দেয়া হয়েছে। ২০২২-এর ১৫ই ডিসেম্বর মনসুর আহমাদ মহিলা কলেজের নামে মোট ১ একর জায়গা খারিজ হয় যার মধ্যে এই  ২৫ শতাংশ জমিও রয়েছে। যার খারিজ নং-৩৩১ ও হোল্ডিং নং-৩৮৬।

এলাকাবাসী সূত্রে জানা যায়, মান্নান ও হান্নান খুব শান্তশিষ্ট মানুষ। কিন্তু এই স্কুলের ব্যাপারে অভিযোগের শেষ নেই। তারা দু’ভাই  স্কুলের জায়গা ও পাশে থাকা কবরস্থানটিও টাকার লোভে বিক্রি করে দিয়েছে।

স্থানীয় সূত্রে জানা যায়  নকশা অনুযায়ী ৫৬৪ দাগে জমি রয়েছে ৯ শতাংশের একটি কবরস্থান। গুমুরিয়া গ্রামের নসরত আলীর ছেলে আছাম উদ্দিন  বলেন,এই দাগে আমার পরিবারের ৯ টি কবর রয়েছে। এছাড়াও গাংগের বাড়ির আরও ৪ টি কবর আছে।

অভিযোগকারী সিরাজুল হক বলেন, বিদ্যালয়ের জায়গা অন্যের কাছে বিক্রি করে দেয়ায় বিদ্যালয়টি মারাত্মক ক্ষতির সম্মুখীন হচ্ছে। ভবিষ্যতে এই বিদ্যালয়ের জমির দখল নিয়েও বিরোধ তৈরি হতে পারে। সিরাজুল হক আরও বলেন আমি অভিযোগ দিয়ে খুব বিপদে আছি। আঃ মান্নান তার লোকজন নিয়ে আমাকে মেরে ফেলার হুমকি দিচ্ছে। আমি স্কুলের স্বার্থে অভিযোগ দিয়ে জীবন নিয়ে হুমকির মধ্যে আছি ।

স্কুলটিতে মোট কতোটুকু জমি আছে এবং মুনসুর আহমেদ মহিলা কলেজের কাছে স্কুলের জমি বিক্রি হয়েছে কিনা বিষয়টি জানতে প্রধান শিক্ষক আ. হান্নানকে ফোন করা হলে ফোন বন্ধ পাওয়া যায়।

এই ব্যাপারে জানতে নেত্রকোনা জেলা প্রশাসককে বার বার ফোন দেয়ার পরও তিনি ফোন রিসিভ করেননি।

বারহাট্টা উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তা ফারজানা আক্তার ববি জানান, গুমুরিয়া সরকারি প্রাথমিক বিদ্যালয়ের বিষয়ে একটি অভিযোগ জেলা প্রশাসক বরাবর  দেয়া হয়েছে। আমি অনুলিপি পেয়েছি। উপর থেকে নির্দেশনা আসলে  তদন্ত করে দ্রুত প্রয়োজনীয় ব্যবস্থা নেয়া হবে।

Comments are closed.

     এই বিভাগের আরও সংবাদ