নিজস্ব প্রতিবেদকঃ খালিস্থান পন্থীদের কানাডায় বেশ সুযোগ সুবিধা দেওয়াসহ বেশ কিছু কারনে এমনিতেই ভালো নয়। তারপর শিখ নেতা হরদীপ সিং নিজ্জার হত্যার পর থেকেই ভারত ও কানাডার মধ্যে কূটনৈতিক উত্তেজনা চরমে। ‘হত্যা, চাঁদাবাজি ও সহিংস কর্মকাণ্ডে’ জড়িত থাকার অভিযোগে সোমবার (১৪ অক্টোবর) হাইকমিশনারসহ ৬ ভারতীয় কূটনীতিককে বহিষ্কার করেছে কানাডা। ‘সন্দেহভাজন ব্যক্তি’ হিসেবে তাদেরকে তদন্তের আওতায় এনেছে কানাডা। এরই পরিপ্রেক্ষিতে কানাডায় নিযুক্ত রাষ্ট্রদূতকে প্রত্যাহারের ঘোষণা দিয়েছে ভারত।
নাম প্রকাশ না করার শর্তে এক কর্মকর্তা বার্তা সংস্থা এপিকে জানায়, তাদের এই বিষয়ে প্রকাশ্যে কথা বলার অনুমতি দেওয়া হয়নি।
এর আগে সোমবার সকালে ভারতের পররাষ্ট্র মন্ত্রণালয় এক বিবৃতিতে জানায়, তারা তাদের কূটনীতিকদের প্রত্যাহার করে নিচ্ছে। এছাড়া কানাডিয়ান চার্জ দ্য অ্যাফেয়ার্সকে তলব করে জানানো হয়, ভারতীয় হাইকমিশনার এবং অন্যান্য কূটনীতিক ও কর্মকর্তাদের ‘সন্দেহভাজন’ হিসেবে মনে করা সম্পূর্ণ অগ্রহণযোগ্য।
কানাডার প্রধানমন্ত্রী জাস্টিন ট্রুডো গত বছর বলেছিলেন, ২০২৩ সালের জুনে কানাডায় শিখ কর্মী হরদীপ সিং নিজ্জর হত্যার সঙ্গে ভারত সরকারের যোগসূত্র রয়েছে বলে বিশ্বাসযোগ্য অভিযোগ রয়েছে।
ভারত অবশ্য এই অভিযোগকে হাস্যকর বলে উড়িয়ে দিয়েছে। শিখ নেতা হত্যাকাণ্ডের সঙ্গে যুক্ত থাকার অভিযোগকে ‘অযৌক্তিক’ এবং ‘রাজনৈতিক ফায়দা লাভের জন্য ভারতকে কলঙ্কিত করার কৌশল’ বলে অভিহিত করেছে ভারত।
এই অভিযোগের পরিপ্রেক্ষিতে ভারত গত বছর কানাডাকে তাদের ৬২ জন কূটনীতিকের মধ্যে ৪১ জনকে সরিয়ে নিতে বলে। এরপর থেকেই দুই দেশের সম্পর্ক শীতল হয়ে ওঠে। আজ ভারতের ৬ কূটনীতিককে বহিষ্কারের ফলে দুই দেশের ভঙ্গুর সম্পর্কে ফের বড় ধরনের উত্তেজনা তৈরি হয়েছে।
নয়াদিল্লির বিরুদ্ধে প্রধানমন্ত্রী জাস্টিন ট্রুডোর গুরুতর অভিযোগের বিষয়ে কানাডার চার্জ দ্য অ্যাফেয়ার্স স্টুয়ার্ট হুইলারকে তলবের পরপরই এ ঘোষণা এলো।
হুইলারের সঙ্গে বৈঠকের পর ভারতের পররাষ্ট্র মন্ত্রণালয় জানায়, চরমপন্থা ও বিচ্ছিন্নতাবাদের প্রতি ট্রুডো সরকারের সমর্থনের জবাবে আরও পদক্ষেপ নেওয়ার অধিকার ভারতের রয়েছে। ট্রুডো সরকারের কর্মকাণ্ড তাদের নিরাপত্তাকে বিপন্ন করেছে। তাদের নিরাপত্তা নিশ্চিত করতে কানাডার বর্তমান সরকারের অঙ্গীকারের প্রতি আমাদের কোনো আস্থা নেই। তাই ভারত সরকার হাইকমিশনার ও অন্যান্য টার্গেটেড কূটনীতিক ও কর্মকর্তাদের প্রত্যাহারের সিদ্ধান্ত নিয়েছে।
এদিকে কানাডিয়ান চার্জ দ্য অ্যাফেয়ার্স স্টুয়ার্ট হুইলার সাংবাদিকদের বলেন, ‘কানাডা নির্ভরযোগ্য ও অকাট্য প্রমাণ দিয়েছে, ভারতীয় সরকারের এজেন্টরা একজন কানাডীয় নাগরিককে হত্যার সঙ্গে জড়িত। উভয় দেশের ও তাদের জনগণের স্বার্থে এই ঘটনার মূল পর্যন্ত পৌঁছনো জরুরি। কানাডা এই তদন্তে সহযোগিতা করতে প্রস্তুত।’