
নারায়ণগঞ্জ জেলা প্রতিনিধিঃ নারায়ণগঞ্জ সিদ্ধিরগঞ্জ থানা পুলিশের কার্যক্রমে গতি ফিরছে। শুরু হয়েছে পুলিশের নিয়মিত অভিযান। গ্রেফতার হচ্ছে বিভিন্ন মামলার আসামীসহ সাজাপ্রাপ্ত আসামি। আইন-শৃঙ্খলা রক্ষায় এলাকায় টহল দিচ্ছে পুলিশের একাধিক টিম। টহলে মাদকদ্রব্য উদ্ধার হওয়ার পাশাপাশি গ্রেফতার হচ্ছে অপরাধী। গত দেড় মাসে থানায় ৭ শতাধিক অভিযোগ জমা হয়েছে। পুলিশের তদন্ত শেষে বেশির ভাগ অভিযোগের সুরাহা করা হয়েছে বলে জানান অফিসার ইনচার্জ আল মামুন। এসময়ের মধ্যে মাদক উদ্ধারসহ বিভিন্ন মামলায় ৫১ আসামীকে গ্রেফতার করেছে পুলিশ। এছাড়া এস আই সোহাগ সহ সকল থানা পুলিশের তদন্ত কার্যক্রমে গতি ফিরেছে বলেই দ্রæততম সময়ে অভিযোগ নিষ্পত্তির পাশাপাশি অর্ধশতাধিক আসামী গ্রেফতারে এলাকাবাসী স্বস্তিতে আছে।
জানা যায়, বৈষম্যবিরোধী ছাত্র আন্দোলনের সময় গত ৬ আগষ্ট ব্যাপক ভাবে ক্ষতিগ্রস্থ হয় সিদ্ধিরগঞ্জ থানা কার্যালয়। দুর্বৃত্তরা আগুন দিয়ে পুড়িয়ে দেয়া ও হামলায় ব্যাপক ক্ষতিগ্রস্থ হয় তিন তলা বিশিষ্ট থানা ভবনের প্রতিটি কক্ষ। সরকারিভাবে বরাদ্দ পাওয়া গাড়িসহ পুলিশের ব্যক্তিগত মোটরসাইকেলও পুড়ে যায়। এসময় আসবাবপত্রসহ লুট হয় অস্ত্র। এরপর কয়েকদিন থানা পুলিশের কার্যক্রম বন্ধ থাকে। বৈষম্যবিরোধী স্থানীয় ছাত্রদের উদ্যোগে থানা কার্যালয় পরিস্কার করে কাজের কিছুটা উপযোগী করা হলে সেনা প্রহরায় থানার কার্যক্রম শুরু হয়। এসময় কিছু পুলিশ থানায় যোগ দেওয়ায় কার্যক্রমে গতি ছিল না। সকল পুলিশ সদস্য কাজে যোগদান করার পর ধীরে ধীরে পরিস্থিতি স্বাভাবিক হতে শুরু করে। এছাড়াও বিকেএমইএ নারায়ণগঞ্জ থেকে কিছু আসবাবপত্র থানা কার্যালয়ে দেয়া হয়। এরপর গত ৭ সেপ্টেম্বর সিদ্ধিরগঞ্জ থানায় যোগদান করেন অফিসার ইনচার্জ আল মামুন । যোগদান করার পর তার নানা পদক্ষেপে এবং উধ্বর্তন কর্তৃপক্ষের দিক নির্দেশনায় বিভিন্ন কার্যক্রম পরিচালনায় থানার কাজে গতি ফিরতে শুরু করে। থানা সূত্রে জানা যায়, গত ৭ সেপ্টেম্বর থেকে ২৪অক্টোবর পর্যন্ত থানা পুলিশ মাদক সেবী, ছিনতাইকারী, সাজাপ্রাপ্ত ও ওয়ারেন্ট আসামী এবং রাজনৈতিকসহ বিভিন্ন মামলার ৫১ জন আসামী গ্রেফতার হয়েছে। এসময় ২৪০ পিছ ইয়াবা ট্যাবলেটসহ বিভিন্ন মাদক দ্রব্য, ছিনতাই হওয়া ট্রাক উদ্ধার হয়েছে। থানা কার্যালয়ে দায়ের করা এলাকাবাসীর অভিযোগ পুলিশ কর্মকর্তারা সরেজমিনে তদন্ত করে সমস্যার সমাধান করছে। এতে সেবা প্রত্যাশীরা সন্তোষ প্রকাশ করছে।
নব নিযুক্ত অফিসার ইন চার্জ আল মামুন জানান, থানা থেকে পুলিশ অভিযানে যেতে ভয় পেত। সাধারণ মানুষ আমাদের সেবা প্রত্যাশী। আমি তাদেরকে বিভিন্ন ভাবে গাইড লাইন দিয়ে টহলসহ অভিযানে পাঠিয়েছি। এর সুফল আমরা পাচ্ছি। আমরা আগের চেয়ে টহল বৃদ্ধি করেছি। বর্তমানে ২টি টহল টিম ২৪ ঘন্টা কাজ করছে। তিনি আরও জানান, যানবাহনের অভাবে টহল টিম বৃদ্ধি করতে পারছি না। এলাকাবাসীর চাহিদা পূরণে আরও বেশি সেবা দিতে যানবাহন দরকার। এছাড়াও থানা কার্যালয়ের দ্বিতীয় ও তৃতীয় তলার আবাসিক ব্যবস্থা ব্যবহারের অনুপযোগি হওয়ায় কাজ শেষে পুলিশ বিশ্রাম নিতে পারছে না। এর দ্রæত সমাধান দরকার। এসময় এলাকার আইন শৃংখলা স্বাভাবিক রাখতে সে এলাকাবাসীর সহযোগিতা প্রত্যাশা করেন।