-
- অপরাধ, সারাদেশ
- পাটুরিয়া ফেরিঘাটে পরিবহনে চাঁদাবাজি বন্ধের জেরে একজনকে কুপিয়েছে সন্ত্রাসীরা, প্রতিবাদে ঘাট অবরোধ
- প্রকাশের সময়ঃ অক্টোবর, ৩১, ২০২৪, ১২:৩০ অপরাহ্ণ
- 1056 বার পড়া হয়েছে
মানিকগঞ্জ প্রতিনিধি : মানিকগঞ্জের শিবালয় উপজেলার পাটুরিয়া ফেরিঘাটে পরিবহন সেক্টরে চাঁদাবাজি বন্ধ করে দেয়ার জেরে মো. কোরমান খানকে (৫৬) কুপিয়েছে সন্ত্রাসীরা। বুধবার বিকালে পাটুরিয়া ফেরিঘাটের পুলিশ কন্ট্রোল রুমের পাশে পরিবহন সেক্টরে চিহ্নিত চাঁদাবাজ গ্রুপের ৮/১০ জন চাপাতি, চাইনিজ কুড়াল, রড হাতে এই সন্ত্রাসী হামলা চালিয়েছেন বলে অভিযোগ করেছেন ভূক্তভোগীর স্বজনেরা।
এই সন্ত্রাসী হামলার প্রতিবাদে ও সন্ত্রাসীদের গ্রেপ্তারের দাবিতে পরিবহন শ্রমিকরা বাস এলোপাথারি করে রেখে ফেরিঘাটের প্রবেশ পথগুলো বন্ধ করে বিক্ষোভ করেন। এতে প্রায় দেড় ঘণ্টা ফেরিতে যানবাহন পারাপার বন্ধ হয়ে যায়।
কোরমানকে মূমূর্ষ অবস্থায় মানিকগঞ্জ সদর হাসপাতালে ভর্তি করা হয়েছে। তিনি পার্শ্ববর্তী দাশকান্দি এলাকার মৃত মহর খানের ছেলে।
পরিবহন মালিক, শ্রমিক ও স্থানীয়রা জানান, আওয়ামী লীগে সরকার আমলে ফেরিঘাটে পরিবহন সেক্টরে চাঁদাবাজি করতো স্থানীয় একটি গ্রুপ। ৫ই আগস্ট শেখ হাসিনা পদত্যাগের পর সেনাবাহিনী ও ছাত্র-জনতা পরিবহন সেক্টরের চাঁদাবাজি বন্ধ করে দেন। এরপর কয়েক দফায় ওই চাঁদাবাজ গ্রুপ পরিবহন সেক্টরে আধিপাত্য বিস্তার ও চাঁদাবাজি করার চেষ্টা করে। পরিবহন মালিক ও শ্রমিকরা সোচ্চার হয়ে প্রতিরোধ করলে ব্যর্থ হয় চাঁদাবাজ গ্রুপটি। কোরমান খান ও তার পরিবারের লোকজন এই ফেরিঘাটে পরিবহনসহ নানা ধরনের ব্যবসার সঙ্গে সম্পৃক্ত। যে কারণে চাঁদাবাজ গ্রুপটি কোরমান খান ও তার পরিবারের সদস্যসহ ফেরিঘাটের পরিবহন মালিক-শ্রমিকদের ওপর ক্ষিপ্ত রয়েছে। ঘাপটি মেরে থাকা ওই চাঁদাবাজ গ্রুপটি প্রতিপক্ষের লোকজনের ওপর মাঝে মধ্যে হুমকি-দামকি ও হামলার চেষ্টা চালিয়ে আসছে।
প্রত্যক্ষদর্শীরা জানান, বুধবার বিকাল সাড়ে চারদিকে ফেরিঘাটে কালামের দোকানে বসে কোরমান খান চা পান করছিলেন। এ সময় ৮/১০ জন পূর্বপরিকল্পিতভাবে রড, চাপাতি, চাইনিজ কুড়ালসহ দেশিয় অস্ত্র হাতে তার ওপর সন্ত্রাসী হামলা চালায়। কোরমান খানকে কুপিয়ে সেখানে ফেলে রেখে চলে যায় হামলাকারীরা। স্থানীয়রা তাকে উথলিস্থ উপজেলা স্বাস্থ্য কমপ্লেক্সে নিয়ে যায়। এরপর শারীরিক অবস্থার অবনতি হলে চিকিৎসকরা মানিকগঞ্জ সদর হাসপাতালে স্থানান্তর করেন।
ও ভূক্তভোগীর ভাই আরমান খান অভিযোগ করেন, ফেরিঘাটের পার্শ্ববর্তী তেঘরি এলাকার নয়ন মুন্সি (৩৮), রাসেল মুন্সি (২৮), সুজন মুন্সি (৪০), রুহুল মুন্সি (৪০), শাকিল মুন্সি (২২), আপেল মুন্সি (৪৫) ও মনু মুন্সি (৬৮) সহ তাদের লোকজন এই ফেরিঘাটে পরিবহন সেক্টরে চাঁদাবাজি করতেন। সেনাবাহিনী ও ছাত্র জনতা চাঁদাবাজি বন্ধ করে দেন। এরপর থেকে চাঁদাবাজ গ্রুপটি কয়েক দফায় পরিবহন সেক্টরে আধিপাত্য বিস্তার ও চাঁদাবাজি করতে এলে মালিক-শ্রমিকদের প্রতিরোধে ব্যর্থ হন। এতে ক্ষিপ্ত হয়ে চাঁদাবাজ গ্রুপের সদস্যরা তার ভাই কোরমান খানকে হত্যার উদ্দেশ্যে হামলা করেছে। এ ঘটনা শিবালয় থানায় লিখিত অভিযোগ করা হয়েছে।
পরিবহন মালিক-শ্রমিকরা জানান, সন্ত্রাসী হামলার প্রতিবাদে ও জড়িতদের গ্রেপ্তারের দাবিতে সন্ধ্যার পর ঘাটে প্রবেশ পথে বাস দিয়ে অবরোধ করে বিক্ষোভ করে মালিক ও শ্রমিকরা। এতে প্রায় দেড় ঘণ্টা ফেরিতে যানবাহন পারাপার বন্ধ থাকে। পরে পুলিশ এসে জড়িতদের দ্রুত গ্রেপ্তারের আশ্বাস দিলে অবরোধ তুলে নেয়া হয়।
এ ব্যাপারে শিবালয় থানার ওসি এ আর এম আল-মামুন বলেন,‘ফেরিঘাটে গিয়ে মালিক-শ্রমিকদের সঙ্গে দাবির বিষয়ে কথা বলে যানাবাহন পারাপার স্বাভাবিক করেছি। হামলার ঘটনায় থানায় লিখিত অভিযোগ দিয়েছে। আসামিদের গ্রেপ্তার ও তদন্তপূর্বক আইনি ব্যবস্থা গ্রহণ করা হবে।’
এই বিভাগের আরও সংবাদ