আজ ২৭শে অগ্রহায়ণ, ১৪৩১ বঙ্গাব্দ, ১২ই ডিসেম্বর, ২০২৪ ইং

আদানি বিদ্যুৎ বন্ধের মোকাবিলায় কতখানি প্রস্তুত বাংলাদেশ 

নিজস্ব প্রতিবেদকঃ বিদ্যুৎ বিক্রির বকেয়া টাকা না পেলে ৭ নভেম্বর থেকে বাংলাদেশে বিদ্যুৎ সরবরাহ বন্ধ করে দিতে পারে আদানি পাওয়ার। ভারতীয় গণমাধ্যম টাইমস অব ইন্ডিয়ার প্রতিবেদনে বলা হয়েছে, প্রায় ৮৫ কোটি ডলারের বকেয়া নিষ্পত্তির সুরাহা না হলে ভারতের বৃহত্তম এই বেসরকারি বিদ্যুৎ উৎপাদন কোম্পানিটি আগামী ৭ নভেম্বর থেকে বাংলাদেশে বিদ্যুৎ সরবরাহ বন্ধ করে দেবে। আদানির বিদ্যুৎ সরবরাহ বন্ধ হয়ে গেলে বাংলাদেশের জাতীয় গ্রিডে প্রায় ১ হাজার ৫০০ মেগাওয়াট বিদ্যুৎ সরবরাহে ঘাটতি তৈরি হবে। বিষয়টি কীভাবে দেখা হচ্ছে? জানতে চাইলে সড়ক পরিবহন, রেল যোগাযোগ ও বিদ্যুৎ জ¦ালানি বিষয়ক উপদেষ্টা ফাওজুল কবির খান গণমাধ্যমকে বলেন, আদানি যদি সত্যিই বিদ্যুৎ বন্ধ করে দেয়, তাহলে আমরা এটা মোকাবিলায় প্রস্তুত আছি।

এদিকে প্রধান উপদেষ্টার প্রেস সচিব বলেছেন, আদানি গ্রুপের বকেয়া পেমেন্ট দেওয়ার গতি বেড়েছে। সামনে আরও বাড়বে। পূর্বের যে বিল বাকি, তার জন্য মূলত দায়ী পূর্ববর্তী আওয়ামী লীগ সরকার।

তিনি বলেন, আদানি গ্রুপকে গত মাসে ৯ দশমিক ৭ মিলিয়ন ডলার পেমেন্ট করা হয়েছে, যা আগস্ট বা আগের মাসের চেয়ে দ্বিগুণ। আমাদের তরফ থেকে সর্বোচ্চ ও দ্রুত পেমেন্টের উদ্যোগ নেওয়া হয়েছে।

এদিকে আদানির স্থানীয় (বাংলাদেশ) প্রতিনিধিদের পক্ষ থেকে পাঠানো এক ক্ষুদে বার্তায় বলা হয়েছে, পুরো টাকা পরিশোধ না করলে আদানি বিদ্যুৎ বন্ধ করে দেবে- এমন মর্মে কোনো আলটিমেটাম দেয়নি। প্রয়োজনীয় অর্থ পরিশোধে এলসি করতে তাগাদা দেওয়া হয়েছে এবং পিডিবির সঙ্গে আলোচনা করে সহযোগিতা করবে আদানি পাওয়ার।

প্রসঙ্গত, ঝাড়খ- রাজ্যের গোড্ডায় আদানির কয়লাভিত্তিক বিদ্যুৎকেন্দ্রের দুটি ইউনিট থেকে প্রতিদিন ১ হাজার ৪০০ থেকে ১ হাজার ৫০০ মেগাওয়াট বিদ্যুৎ বাংলাদেশে আসছিল। বকেয়া অর্থ না পাওয়ায় গত বৃহস্পতিবার একটি ইউনিটের বিদ্যুৎ উৎপাদন বন্ধ করে দেওয়ার কথা জানায় আদানি পাওয়ার।

বকেয়া অর্থ পরিশোধে গত ৩১ অক্টোবরের মধ্যে ১৭ কোটি ডলারের ঋণপত্র (এলসি) পরিশোধ করতে বলেছিল আদানি পাওয়ার। চুক্তি অনুযায়ী আদানিকে সোনালী ব্যাংকের মাধ্যমে অর্থ পরিশোধ করার কথা বাংলাদেশ বিদ্যুৎ উন্নয়ন বোর্ডের। তবে ডলার সংকটের কারণে ব্যাংকটি অপারগতা প্রকাশ করায় সেই অর্থ কৃষি ব্যাংকের মাধ্যমে বিদ্যুৎ উন্নয়ন বোর্ডের কর্মকর্তারা পাঠাতে চেয়েছিলেন বলে সূত্রের বরাতে লিখেছে টাইমস অব ইন্ডিয়া। তবে তা চুক্তির সঙ্গে সামঞ্জস্যপূর্ণ না হওয়ায় আদানি পাওয়ার তাতে সম্মতি দেয়নি। এ পরিস্থিতিতে আদানি পাওয়ার একটি ইউনিট বন্ধ করে দেওয়ায় বাংলাদেশের চলমান লোডশেডিং আরও বেড়েছে। পাওয়ার গ্রিড বাংলাদেশের (পিজিবি) ওয়েবসাইটে প্রকাশিত প্রতিবেদন অনুযায়ী, শুক্রবার ৭২৪ মেগাওয়াট বিদ্যুৎ দিয়েছে ভারতীয় ওই কোম্পানি।

Comments are closed.

     এই বিভাগের আরও সংবাদ