নারায়ণগঞ্জ জেলা প্রতিনিধিঃ নারায়ণগঞ্জ জেলা প্রশাসক কিংবা জেলা পুলিশ। কাকতালীয় ভাবে দুইটি দপ্তর পরিচালনায় দারুন ভূমিকা রাখতে সক্ষম হয়েছেন বর্তমান জেলা প্রশাসক এবং জেলা পুলিশ সুপার। জেলা প্রশাসক অবশ্য বিগত সরকারের আমল থেকেই নিজের দক্ষতা প্রমাণ রাখতে সক্ষম হয়েছেন। অন্যদিকে নতুন পুলিশ সুপারও দ্রæত সময়ের মধ্যে গুছিয়ে নিতে পেরেছেন পুলিশ প্রশাসনকে। ধৈর্য্য ধারণ করে সকল সমস্যা মোকাবেলা করে যাচ্ছেন উভয়েই।
নারায়ণগঞ্জ জেলা প্রশাসক মাহমুদুল হক বিগত সরকারের আমলে জেলা প্রশাসক হিসেবে নিযুক্ত হন নারায়ণগঞ্জে। এরপরেই তার কার্যক্রম মেলে ধরতে শুরু করেন। সাধারণ মানুষ তার কাছে পৌছাতে পারতো খুব সহজে। বিগত দিনে জেলা প্রশাসক পর্যন্ত পৌছানো ছিলো অসম্ভব ব্যাপার। প্রভাবশালী কিংবা সম্পদশালী না হলে প্রশাসকের কক্ষে ঢোকা ছিলো প্রায় অসম্ভব। কিন্তু সেই চেইন ভেঙ্গে দেন মাহমুদুল হক। ফলে যেকোন সমস্যা সমাধানে প্রশাসক পর্যন্ত পৌছাতে পারছে সকল শ্রেনী পেশার মানুষ। এমনকি স্কুল ছাত্র ছাত্রীরাও তাদের কথা তুলে ধরতে পারছে তার কাছে।
তবে মাহমুদুল হক সবচেয়ে বেশী দক্ষতার পরিচয় দিয়েছেন নারায়ণগঞ্জে আন্দোলন সংগ্রাম চলাকালীন সময়ে। ৫ আগস্ট রাতেই বিএনপি, জামায়াত সহ বিভিন্ন রাজনৈতিক দলগুলোর নেতাদের সাথে যোগাযোগ করে সরকারি, বেসরকারি স্থাপনায় নিরাপত্তা নিশ্চিত করেন। একই সাথে মন্দির ও হিন্দু পাড়াগুলোতে নিরাপত্তা নিশ্চিত করতে সক্ষম হন। তার আন্তরিক আচরণের কারণে সহযোগীতায় এগিয়ে এসেছে সাংবাদিক, রাজনৈতিক নেতা, আইনজীবী সহ সকলেই। ধৈর্য্য এবং দক্ষতার মাধ্যমে কিভাবে জেলা নিয়ন্ত্রণ করতে হয় তা দারুনভাবে প্রমাণ করে যাচ্ছেন এই প্রশাসক।
জেলা প্রশাসকের এমন দক্ষতার কারণেই নতুন অন্তর্বর্তীকালীন সরকার তাকে পরিবর্তন করেনি। যদিও বদলি হবার জন্য প্রস্তুত ছিলেন তিনি। কিন্তু জনপ্রশাসন মন্ত্রনালয়ে তার বিষয়ে পজেটিভ বার্তা এবং কর্মকান্ডের কারণে নারায়ণগঞ্জ জেলায় বদলি অপরিবর্তিত রাখে। নতুন সরকারের আমলেও ভালোভাবেই চাপ সামলে কাজ করে যাচ্ছেন এই প্রশাসক।
এদিকে নতুন এসপি প্রত্যুষ কুমার মজুমদার নারায়ণগঞ্জের দায়িত্ব নেয়ার পরেই হাত দেন পুলিশ প্রশাসনকে ঢেলে সাজানোতে। প্রতিটি থানায় হাজির হয়ে খোজ খবর নেন। ক্ষতিগ্রস্থ থানায় কার্যক্রম চালু থেকে শুরু করে পুলিশকে জনবান্ধব করে তুলতে কাজ শুরু করে। থানাগুলো সচল করে ফেলেন দ্রুত সময়ের মধ্যেই। গত তিন মাসে তার নেতৃত্বে পুলিশ ঘুরে দাড়িয়েছে। এখন পর্যন্ত জেলায় পুলিশ নেতিবাচক সংবাদের শিরোনামে আসেনি কেবল তার কারনে। বিগত সরকারের আমলে যেখানে প্রতিদিনই পাওয়া যেত পুলিশের নামে অসংখ্য অভিযোগ। সেখানে গত তিন মাসের বেশী সময়েও পুলিশের বিরুদ্ধে উঠেনি কোন অভিযোগ।
পুলিশ এককালে নারায়ণগঞ্জবাসীর জন্য আতংকের কারণ হয়ে দাড়িয়েছিলো। ধীরে ধীরে সেই পুলিশকে বিশ্বাস করতে শুরু করছে মানুষ। বর্তমান পুলিশ সুপারের কঠোরতা এবং নেতৃত্বের গুনাবলীর কারণে এই পরিবর্তন করা সম্ভব হয়েছে বলে মন্তব্য করছেন নাগরিক প্রতিনিধিরা।
সংশ্লিষ্টরা বলছেন, ‘গত তিনমাসে পুলিশ এবং প্রশাসনে যেই পরিবর্তন এসেছে তা নিঃসন্দেহে প্রশংসার দাবী রাখে। বিশৃঙ্খলা করছে কেবল রাজনৈতিক দলের নেতাকর্মীরা। তবে খুব দ্রুতই পুলিশ তাদের বিরুদ্ধে কঠোর ব্যবস্থা নিবে এমন প্রত্যাশা সকলের। অন্তর্র্বতীকালীন সরকারের পুলিশ বিএনপির প্রতি বাড়তি সহানূভুতি দেখাবে এমনটা চায় না কেউ। বরং প্রকৃত আইনের শাসন প্রতিষ্ঠা করবে এমনটাই চাওয়া সকলের।