আজ ৫ই মাঘ, ১৪৩১ বঙ্গাব্দ, ১৯শে জানুয়ারি, ২০২৫ ইং

পানি টেনে জীবিকা নির্বাহ করে প্রতিবন্ধী  সুমন

আফজাল হোসেন বিশেষ প্রতিনিধি
নেত্রকোনার বারহাট্টা উপজেলা গুমুরিয়া গ্রামের হাসেন আলীর ছেলে সুমন মিয়া, জন্ম থেকে প্রতিবন্ধী। তার পিঠে খুঁজ থাকায় চলতে ফিরতে অনেক কষ্ট হয়। কিন্তু পেটের ক্ষুধার যন্ত্রণা সামাল দিতে বাড়ি ছেড়ে বারহাট্টা বাজারে এসে মানুষের টুকিটাকি কাজ করে দেয়।তার বিনিময়ে যা পায় তা দিয়ে পেটের চাহিদা পূরণ  করে। সারাদিন মানুষ তাকে নিয়ে ঠাট্টা বিদ্রুপ করে। কেউ আবার তাকে ব্যারিষ্টার সুমন নামেও ডাকে। নিজের পেট ও তার সংসারের ভরণপোষণের জন্য  ব্যারিষ্টারের  বিভিন্ন চা স্টলে পানি টেনে জীবিকা নির্বাহ করতে হয়।দোকানদারদের এক বালতি পানি নিয়ে দিলে  ১০ টাকা দেয়। বিশুদ্ধ পানির হাউজ দূরে হওয়ায় প্রতিবার দুই বালতি করে পানি আনা-নেয়া করে। এভাবে প্রতিদিন যা পায় তা নিয়ে বাড়িতে যায়। এভাবেই চলছে ব্যরিষ্টার সুমনের কষ্টের জীবন। গত কয়েকদিন আগে সুমনের বৌ কে সুমনের শাশুড়ী বাড়িতে নেয়ার কথা বলে সিলেট নিয়ে গেছে। সেই থেকে সুমনের মন বিষন্নতায় ভরে গেছে।
প্রতিবন্ধী সুমনের বাবা হাসেন আলী বলেন,আমি আর আগের মতো পরিশ্রম করতে পারি না। বড় ছেলেটি ঢাকায় কাজ করে । তার সংসার আছে। এরপরও মাসের মাস আমাকে কিছু খরচাপাতি দেয়। আর আমার এই প্রতিবন্ধী  ছেলেটিকে নিয়ে খুব কষ্টে আছি। তার চাহিদা এখন পূরণ করতে পারি না। বাজারে এসে এটা সেটা খেয়ে অভ্যাস হয়ে গেছে।এখন পানি টানাটানি করে নিজেও চলে বাড়িতেও শ’দেড়’শ টাকা নিয়ে এসে আমাকে দেয়। তার একটি প্রতিবন্ধী কার্ডও আছে।  কিছুদিন আগে তাকে বিয়ে করিয়ে ছিলাম। মেয়েটা একটু সোজারাস্ত ছিল। মেয়ের মা বাড়িতে নেয়ার কথা বলে মেয়েটিকে সিলেট নিয়ে গেছে। এখন আমার প্রতিবন্ধী ছেলেটা রাতে বাড়িতে গিয়ে খুঁজাখুঁজি করে চিল্লাচিল্লি করে।
স্থানীয় সূত্রে জানা যায় সুমন সারাদিন কাজ করে দুই তিন শত টাকা ইনকাম করতে পারে। তাকে কেউ ঠকায় না। তিন বছর আগে উপজেলার মুনসুরপুর গ্রামে সে বিয়ে করে। তখন থেকে সে আমোদ ফুর্তিতেই চলছিলো। শুনলাম তার বৌ চলে গেছে। তখন থেকে  সুমনের মন খুব খারাপ থাকে ।

Comments are closed.

     এই বিভাগের আরও সংবাদ