নিজস্ব প্রতিবেদকঃ মিষ্টি কথা ও সুন্দর চেহারার আড়ালে প্রেমের ফাঁদ পেতে সুযোগ বুঝে নগ্ন ভিডিও করে ব্ল্যাকমেইল করাই মূল পেশা হিসিবে বেছে নিয়েছে শামীমা আফরোজ মুন্নি ওরফে ফিটিং মুন্নি ও তার দুই সহযোগী সাবিনা ইয়াসমিন অরফে ছোঁয়া ও ভাড়াটিয়া স্বামী সুলতান মাহমুদ। এই অপরাধীদের চক্রে কেউ সাজে পুলিশ, কেউ আবার ডিবি। লোক লজ্জার ভয়ে প্রায়ই ঘটনা এড়িয়ে যান ভুক্তভোগীরা। আশুলিয়ায় বিভিন্ন অভিযানে এমন একাধিক চক্র আইন-শৃঙ্খলা বাহিনীর হাতে গ্রেফতার হলেও কমছে না তাদের দৌরাত্ম।
গত ২০ অক্টোবর এক সরকারি চাকুরীজীবীকে ধর্ষণ মামলার হুমকি দিয়ে টাকা দাবি করেন এই চক্রটি। এ বিষয়ে ভুক্তভোগী আশুলিয়া থানায় একটি অভিযোগ দায়ের করেন।
পূর্ব পরিচয়ের সূত্র ধরে এমনই এক চক্র আশুলিয়ার নবীনগর ও এর আশপাশের এলকায় বিলাশ বহুল বাসা ভাড়া নিয়ে বৃত্ত শালীদের টার্গেট করে নিয়ে এসে বাসায় আটকে রেখে মুক্তিপণ আদায় করেন। এবং বাসায় থাকা সুন্দরী রমনীর ছোঁয়া সহ অন্যান্য সদস্যদের সাথে অনৈতিক সম্পর্কের আখ্যা দিয়ে ব্ল্যাকমেইল করে টাকা হাতিয়ে নেয় চক্রের অন্য সদস্যরা। টাকা দিতে দেড়ি হলে আটকে রেখে মারধর করে ক্ষতবিক্ষত করা হয় ভুক্তভোগীর পুরো শরীর। বিষয়টি বিশ্বাসযোগ্য করে তুলতে যুবকের মুঠোফোন কেড়ে নিয়ে অপরাধীরদের ঘরে থাকা রমনীদের মুঠোফোনে নানা মেসেজ পাঠায় চক্রের সদস্যরাই। টাকা আদায় করার পর ভয় দেখিয়ে নগ্ন ভিডিও ধারন করা ভিডিও সামাজিক যোগাযোগ মাধ্যমে ছেড়ে দেয়ি মানহানি করার শর্তে ছেড়ে দেয়াহয়। এসব চক্র বিভিন্ন সময় পুলিশের অভিযানে গ্রেফতার হলেও জামিনে বের হয়ে আসে আবার নতুন করে শুরু করে তাদের কর্মযজ্ঞ।
জনবহুল এই অঞ্চলে প্রায়ই ঘটে এমন প্রতারণার ঘটনা।
প্রেমের ফাঁদে পা দিয়ে গত ২ মে চাপাইনবাবগঞ্জ থেকে এসে আশুলিয়ার নবিনগর এলাকায় মুন্নী অরফে পিটিং মুন্নি নামে নারীর ব্লাকমেইলের শিকার হন যুবক সানাউল মাহমুদ। ঘরে আটকে রেখে অসামাজিক কাজের আখ্যা দিয়ে হাতিয়ে নেয়া হয় প্রায় ৬০ হাজার টাকা। অভিযোগ পেয়ে এই চক্রের ৩ জনকে গ্রেফতার করে পুলিশ। এর আগে ফেব্রুয়ারি মাসে পোশাক শ্রমিক এক তরুণকে একই কায়দায় আটকে রেখে টাকা হাতিয়ে নেয় অপর একটি চক্র।
ভুক্তভোগী সানাউল মাহমুদ বলেন, দশ দিন আগে ফেসবুকে একটি মেয়ের সাথে বন্ধুত্ব হয়। চাঁপাইনবাবগঞ্জ থেকে বাইপাইলে ভাইয়ের কাছে গেলে তারপর তার সাথে দেখা করি। দেখা হওয়ার পরে তার বাসায় নিয়ে যায় আমাকে। বাসায় আমাকে আটকে রেখে ডিবি পুলিশ পরিচয় দিয়ে আমার কাছ থেকে নগদ ৩৫ হাজার ৬০০ টাকা ও বিকাশ থেকে ২৯ হাজার ৩৫০ টাকা হাতিয়ে নেয় ।
ভুক্তভোগীর স্বজন মো. জুলহাস বলেন, তারা অনেক ধরনের প্রতারণা করে। যেমন পকেটে ইয়াবা ঢুকিয়ে দেয়। নেশা যোগ্য জিনিস অনেক কিছু ঢুকিয়ে দিয়ে তারা বলে পুলিশকে জানাই এ ধরনের প্রতারণা করেন তারা।
এই সব প্রতারকদের মিষ্টি কথায় না ভুলে আরো সচেতন হওয়ার পরামর্শ আইন শৃঙ্খলাবাহিনীর। ঢাকা জেলার এসপি জানান, কারো সাথে কোন সম্পর্কে জড়ানোর আগে আগে তার পরিচয় জানতে হবে। তার সম্পর্কে বিস্তারিত জানতে হবে। অন্যথায় আমাদের বড় ধরনের যে কোনো সমস্যা হতে পারে। এছাড়া অভিযোগ পেলে আমরা তদন্ত করে ব্যবস্থা গ্রহণ করি। ইতিমধ্যে বেশ কয়েকটি চক্রকে আমরা আইনের আওতায় এনেছি। কিন্তু নিজে সতর্ক থাকলে এ ধরণের প্রতারকদের হাত থেকে রক্ষা পাওয়া সম্ভব।
এ বিষয়ে অভিযুক্ত শামীম আফরোজ মুন্নির ও তার সহযোগীদের সাথে মুঠোফোনে একাধিকবার যোগাযোগ করার চেষ্টা করা হলেও তাকে পাওয়া যায়নি।
এ ধরনের ফিটিং চক্র কে আইনের আওতায় এনে এদেরকে নির্মল করার দাবি ভুক্তভোগী ও সচেতন মহলের।