আজ ৫ই মাঘ, ১৪৩১ বঙ্গাব্দ, ১৯শে জানুয়ারি, ২০২৫ ইং

উভয়পক্ষ আলোচনা করে সমাধানের পথে আসুক, ইজতেমার তারিখ পরিবর্তন হয়নি: স্বরাষ্ট্র উপদেষ্টা

 

নিজস্ব প্রতিবেদকঃ অন্তর্বর্তীকালীন সরকারের স্বরাষ্ট্র উপদেষ্টা লেফটেন্যান্ট জেনারেল (অব.) মো. জাহাঙ্গীর আলম চৌধুরী বলেছেন, বিশ্ব ইজতেমার মাঠ দখল নিয়ে সংঘর্ষে নিহতের ঘটনায় মামলার পর প্রকৃত দোষীদের গ্রেফতার করা হবে। তিনি বলেন, ইজতেমার তারিখ পরিবর্তন হয়নি। সরকার চায় উভয়পক্ষ আলোচনা করে সমাধানের পথে আসুক।

বুধবার (১৮ ডিসেম্বর) সচিবালয়ে সাদ ও জুবায়েরপন্থিদের সঙ্গে আলাদা আলাদা বৈঠক শেষে এসব কথা বলেন তিনি।

 স্বরাষ্ট্র উপদেষ্টা সবাইকে ময়দান ছাড়ার নির্দেশ দিয়ে উসকানিমূলক বক্তব্য না দেয়ারও আহ্বান জানান।

তিনি বলেন, বিশ্ব ইজতেমার মাঠ দখল নিয়ে সংঘর্ষে নিহতের ঘটনায় মামলার পর প্রকৃত দোষীদের গ্রেফতার করা হবে। ইজতেমার তারিখ পরিবর্তন হয়নি। সরকার চায় উভয়পক্ষ আলোচনা করে সমাধানের পথে আসুক।

 বৈঠক শেষে নির্দেশনা মেনে সবাইকে মাঠ ছাড়ার আহ্বান জানান সাদপন্থি শীর্ষ আলেমরা। এদিকে পরবর্তী নির্দেশ না দেয়া পর্য়ন্ত উত্তরা, আব্দুল্লাহপুর ও আশপাশের এলাকায় সভা-সমাবেশ নিষিদ্ধ ঘোষণা করেছে ঢাকা মহানগর পুলিশ।

 মধ্যরাতে তাবলীগ জামাতের দুই পক্ষের সংঘর্ষের পর ভোর থেকেই সাদপন্থিদের দখলে ছিল টঙ্গীর বিশ্ব ইজতেমা ময়দান। পরিস্থিতি নিয়ন্ত্রণে মাঠে অতিরিক্ত পুলিশ, সেনাবাহিনী, বিজিবি ও র‌্যাব মোতায়েন রয়েছে।

 দুই পক্ষের উত্তেজনাকর পরিস্থিতির মধ্যে সকাল থেকে সচিবালয়ে স্বরাষ্ট্র মন্ত্রণালয়ের সভাকক্ষে সাদ ও জুবায়েরপন্থিদের সঙ্গে আলাদা আলাদা বৈঠক করেন সরকারের কয়েকজন উপদেষ্টা। বৈঠক শেষে সাদপন্থি আলেমরা জানান, সরকারের পক্ষ থেকে সবাইকে মাঠ ছাড়ার নির্দেশ দেয়া হয়েছে। অনুসারীদের উসকানিমূলক বক্তব্য থেকে বিরত থাকতে কড়া নির্দেশ দেন আালেমরা।

 কোনো রকম উসকানি ছাড়াই জুবায়েরপন্থিদের ওপর হামলা চালানো হয়েছে বলে অভিযোগ করেন হেফাজত নেতা মামুনুল হক।

 মামুনুল হক বলেন, ‘এটা সংঘর্ষ ছিল না; এটা একপক্ষীয় হামলা। ঘুমন্ত মানুষের ওপর একপক্ষের হামলা ছিল। সাদপন্থিরা হামলা করে হত্যা করেছে। হত্যাকাণ্ডের ঘটনায় জড়িতদের আজকের মধ্যে গ্রেফতার করতে হবে।’

 তিনি আরও বলেন, সাদপন্থিরা জোরপূর্বক সন্ত্রাসী কায়দায় মাঠে ঢুকে পড়েছিল। জুবায়েরপন্থিরা সহযোগিতা করবে যথাসময়ে ইজতেমা আয়োজন করতে। আর সহযোগিতার আশ্বাস দিয়েছে প্রশাসন।

মামুনুল হক বলেন, সাদপন্থিরা রাষ্ট্রের বিরুদ্ধে চ্যালেঞ্জ ছুড়ে দিয়েছে। যার যা দাবি সেগুলো আলোচনা করে সমাধানের কথা ছিল। কিন্তু সব সিদ্ধান্ত উপেক্ষা করে ঘুমন্ত মানুষের ওপর হামলা করেছে। এ শত্রুকে প্রতিহত করতে হবে। সন্ত্রাসী কর্মকাণ্ডের কারণে সাদপন্থিদের নিষিদ্ধ গোষ্ঠী হিসেবে ঘোষণা করা হোক বলেও দাবি করেন তিনি।

 তিনি আরও বলেন, ‘আগামীকাল দুপুরে টঙ্গী ইজতেমা মাঠ অভিমুখে জুবায়েরপন্থিদের লংমার্চ কর্মসূচি প্রত্যাহারের অনুরোধ করেছে স্বরাষ্ট্র উপদেষ্টা। সবার সঙ্গে আলোচনা করে কর্মসূচি প্রত্যাহারের বিষয়ে সিদ্ধান্ত জানানো হবে।’

 বাংলাদেশের বিরুদ্ধে ও ইসলামবিরোধী সোর্স হিসেবে কাজ করে সাদপন্থিরা; তাদের সন্ত্রাসী সংগঠন আখ্যায়িত করে নিষিদ্ধের দবি জানিয়ে মামুনুল হক বলেন,

মামলার প্রক্রিয়া চলছে। আজকের মধ্যে মামলা করা হবে বলেও জানান তিনি।

মঙ্গলবার (১৭ ডিসেম্বর) মধ্যরাতের দিকে দুই পক্ষের মধ্যে সংঘর্ষ শুরু হয়। এতে তিনজন নিহত হন।

নিহতরা হলেন: কিশোরগঞ্জের পাকুন্দিয়া থানার এগারসিন্দু এলাকার বাচ্চু মিয়া (৭০), ঢাকার দক্ষিণখানের বেড়াইদ এলাকাল বেলাল (৬০) ও বগুড়ার মোহাম্মদ তাজুল ইসলাম (৬৫)। সংঘর্ষে আহত ৩৫ জনের মতো ঢাকা মেডিকেলে কলেজ (ঢামেক) হাসপাতালে চিকিৎসা নেন।

Comments are closed.

     এই বিভাগের আরও সংবাদ