০২:০৯ পূর্বাহ্ন, রবিবার, ২৫ মে ২০২৫, ১০ জ্যৈষ্ঠ ১৪৩২ বঙ্গাব্দ

সাভার ও আশুলিয়ায় মাছ ব্যবসায়ীদের রঙিন বাতির প্রতারণা

  • Reporter Name
  • প্রকাশের সময়ঃ ০১:৪৩:৫৯ অপরাহ্ন, সোমবার, ৩০ ডিসেম্বর ২০২৪
  • ১৫৪ বার পড়া হয়েছে

 

রাউফুর রহমান পরাগ : সাভার ও আশুলিয়ায় বিভিন্ন বাজারে ব্যবসায়ীরা মাছের ডালার ওপর রঙিন বাতি ব্যবহার করে ক্রেতাদের প্রতিনিয়ত ধোঁকা দিচ্ছেন। এসব রঙিন বাতির আলোর ঝলকানিতে বিভিন্ন জাতের মাছকে তাৎক্ষণিক দেখে তাজা মনে হয়। তবে বাসায় গিয়ে দেখা যায় বাজারে যেমন দেখেছেন ঠিক তেমন নয়।

সরেজমিনে হেমায়েতপুর, গেন্ডা,সাভার বাজার বাস স্ট্যান্ড, পল্লীবিদ্যুৎ বাজার, বাইপাইল বাজার, জামগড়া বাজারসহ আশুলিয়ার কয়েকটি বাজার ঘুরে এ চিত্র দেখা যায়। বাজারে দিনে হলুদ বাতি আর রাতে বিভিন্ন রঙের বাতি ব্যবহার করছে মাছ বিক্রেতারা।

মাছ ক্রেতারা বলছেন, দুইদিন বা এক সপ্তাহ আগের ফ্রিজের মরা মাছ বা পঁচা মাছ বিক্রির জন্য এসব বিভিন্ন রঙিন বাতি ব্যবহার করা হয়। রঙিন বাতি ব্যবহারের কারণ হলো মাছকে দেখতে সতেজ ও তাজা মনে হয়। এ-জন্য বার বার প্রতারণার শিকার হতে হয় ক্রেতাদের।

তবে মাছ বিক্রেতারা প্রতারণার অভিযোগ অস্বীকার করেছেন। তারা বলছেন, বাসি মাছকে তাজা দেখানোর জন্য নয়, বরং মাছের ওপর রঙিন বাল্বের আলো দেখতে সুন্দর লাগে তাই এসব বাল্ব ব্যবহার করেন।

পল্লীবিদ্যুৎ বাজারের মাছ কিনতে এসেছেন আমিনুল ইসলাম। তিনি অভিযোগ করে বলেন, আজকের মাছ বলে কয়েকদিন আগের মাছ বিক্রি করে ফেলেন ব্যবসায়ীরা। এর জন্য তারা হলুদ লাইট ব্যবহার করেন। হলুদ লাইট ব্যবহার করলে মাছকে দেখতে তরতাজা লাগে। তখনই মানুষ ধোঁকা খায়।বাসায় যাওয়ার পরে বোঝা যায় ব্যবসায়ী আমাদেরকে ঠকাচ্ছেন।

জামগড়া বাজারে মাছ কিনতে আসা তপন হোসেন বলেন, দিনে হলুদ লাইট আর রাতে বিভিন্ন রঙের লাইট ব্যবহার করছেন মাছ বিক্রেতারা। ফলে মাছ ভালো, না খারাপ বুঝতে কষ্ট হয়। বেশিরভাগ সময়-ই পঁচা মাছ কিনে বাড়ি ফিরতে হয়।

একই সুরে কথা বলেন কাঠগড়া বাজারের মাছ ক্রেতা আমেনা খাতুন। তিনি বলেন, রঙিন লাইটের কারণে তাজা মাছ ভেবে আমার মতো শত শত ক্রেতারা প্রতিনিয়ত প্রতারণার শিকার হচ্ছি। আমি অনেকবার প্রতারিত হয়েছি। তাই এখন দেখেশুনে মাছ কিনবো।

সব অভিযোগ অস্বীকার করে পল্লীবিদ্যুৎ বাজারের এক মাছ বিক্রেতা বলেন, আমরা কোনো ধরনের পঁচা মাছ বিক্রি করি না। আমরা রঙিনের মধ্যে হলুদ লাইট ব্যবহার করি। তবে হলুদ লাইট ব্যবহার করলে মরা আর তাজা মাছ বুঝা যায় না ব্যাপারটা এমন না। মরা ও তাজা মাছের পার্থক্য করা যায়।

জাতীয় ভোক্তা অধিকার সংরক্ষণ অধিদপ্তরের সহকারী পরিচালক মো. আব্দুল জব্বার মণ্ডল বলেন, আমরা রঙিন লাইট নিয়ে কাজ করে যাচ্ছি। যাতে সাধারণ মানুষ নতুন করে আর প্রতারণার শিকার না হয়।মাছ ব্যবসায়ীদের কাছে আমার অনুরোধ রইলো রঙিন লাইট ব্যবহার না করার। এরপরও মাছ ব্যবসায়ীরা রঙিন বাতি ব্যবহার বন্ধ না করলে অভিযান চালানোর পরিকল্পনা রয়েছে।

Tag :
About Author Information

জনপ্রিয়

সাভার ও আশুলিয়ায় মাছ ব্যবসায়ীদের রঙিন বাতির প্রতারণা

প্রকাশের সময়ঃ ০১:৪৩:৫৯ অপরাহ্ন, সোমবার, ৩০ ডিসেম্বর ২০২৪

 

রাউফুর রহমান পরাগ : সাভার ও আশুলিয়ায় বিভিন্ন বাজারে ব্যবসায়ীরা মাছের ডালার ওপর রঙিন বাতি ব্যবহার করে ক্রেতাদের প্রতিনিয়ত ধোঁকা দিচ্ছেন। এসব রঙিন বাতির আলোর ঝলকানিতে বিভিন্ন জাতের মাছকে তাৎক্ষণিক দেখে তাজা মনে হয়। তবে বাসায় গিয়ে দেখা যায় বাজারে যেমন দেখেছেন ঠিক তেমন নয়।

সরেজমিনে হেমায়েতপুর, গেন্ডা,সাভার বাজার বাস স্ট্যান্ড, পল্লীবিদ্যুৎ বাজার, বাইপাইল বাজার, জামগড়া বাজারসহ আশুলিয়ার কয়েকটি বাজার ঘুরে এ চিত্র দেখা যায়। বাজারে দিনে হলুদ বাতি আর রাতে বিভিন্ন রঙের বাতি ব্যবহার করছে মাছ বিক্রেতারা।

মাছ ক্রেতারা বলছেন, দুইদিন বা এক সপ্তাহ আগের ফ্রিজের মরা মাছ বা পঁচা মাছ বিক্রির জন্য এসব বিভিন্ন রঙিন বাতি ব্যবহার করা হয়। রঙিন বাতি ব্যবহারের কারণ হলো মাছকে দেখতে সতেজ ও তাজা মনে হয়। এ-জন্য বার বার প্রতারণার শিকার হতে হয় ক্রেতাদের।

তবে মাছ বিক্রেতারা প্রতারণার অভিযোগ অস্বীকার করেছেন। তারা বলছেন, বাসি মাছকে তাজা দেখানোর জন্য নয়, বরং মাছের ওপর রঙিন বাল্বের আলো দেখতে সুন্দর লাগে তাই এসব বাল্ব ব্যবহার করেন।

পল্লীবিদ্যুৎ বাজারের মাছ কিনতে এসেছেন আমিনুল ইসলাম। তিনি অভিযোগ করে বলেন, আজকের মাছ বলে কয়েকদিন আগের মাছ বিক্রি করে ফেলেন ব্যবসায়ীরা। এর জন্য তারা হলুদ লাইট ব্যবহার করেন। হলুদ লাইট ব্যবহার করলে মাছকে দেখতে তরতাজা লাগে। তখনই মানুষ ধোঁকা খায়।বাসায় যাওয়ার পরে বোঝা যায় ব্যবসায়ী আমাদেরকে ঠকাচ্ছেন।

জামগড়া বাজারে মাছ কিনতে আসা তপন হোসেন বলেন, দিনে হলুদ লাইট আর রাতে বিভিন্ন রঙের লাইট ব্যবহার করছেন মাছ বিক্রেতারা। ফলে মাছ ভালো, না খারাপ বুঝতে কষ্ট হয়। বেশিরভাগ সময়-ই পঁচা মাছ কিনে বাড়ি ফিরতে হয়।

একই সুরে কথা বলেন কাঠগড়া বাজারের মাছ ক্রেতা আমেনা খাতুন। তিনি বলেন, রঙিন লাইটের কারণে তাজা মাছ ভেবে আমার মতো শত শত ক্রেতারা প্রতিনিয়ত প্রতারণার শিকার হচ্ছি। আমি অনেকবার প্রতারিত হয়েছি। তাই এখন দেখেশুনে মাছ কিনবো।

সব অভিযোগ অস্বীকার করে পল্লীবিদ্যুৎ বাজারের এক মাছ বিক্রেতা বলেন, আমরা কোনো ধরনের পঁচা মাছ বিক্রি করি না। আমরা রঙিনের মধ্যে হলুদ লাইট ব্যবহার করি। তবে হলুদ লাইট ব্যবহার করলে মরা আর তাজা মাছ বুঝা যায় না ব্যাপারটা এমন না। মরা ও তাজা মাছের পার্থক্য করা যায়।

জাতীয় ভোক্তা অধিকার সংরক্ষণ অধিদপ্তরের সহকারী পরিচালক মো. আব্দুল জব্বার মণ্ডল বলেন, আমরা রঙিন লাইট নিয়ে কাজ করে যাচ্ছি। যাতে সাধারণ মানুষ নতুন করে আর প্রতারণার শিকার না হয়।মাছ ব্যবসায়ীদের কাছে আমার অনুরোধ রইলো রঙিন লাইট ব্যবহার না করার। এরপরও মাছ ব্যবসায়ীরা রঙিন বাতি ব্যবহার বন্ধ না করলে অভিযান চালানোর পরিকল্পনা রয়েছে।