আজ ১৫ই বৈশাখ, ১৪৩২ বঙ্গাব্দ, ২৮শে এপ্রিল, ২০২৫ ইং

ধামরাইয়ে কিশোর গুলিবিদ্ধের ঘটনায়; অস্ত্র দিয়ে প্রতিবেশীকে ফাঁসানোর অভিযোগ

 

               উদ্ধারকৃত দুটি পিস্তল ও গুলি।

ধামরাই (ঢাকা) প্রতিনিধি:

ঢাকার ধামরাইয়ে থার্টি-ফাস্ট নাইট উদযাপনে খিচুড়ি খাওয়াকে কেন্দ্র করে আকাশ নামের এক কলেজ শিক্ষার্থী কে গুলি করে রাব্বি নামের আরেক কিশোর। গুলিবিদ্ধ আকাশ সাভারের এনাম মেডিকেল কলেজ হাসপাতালে চিকিৎসাধীন রয়েছেন। ঘটনার একদিন পর (২ জানুয়ারি) ভুক্তভোগী আকাশের বাবা রাব্বি ও ফয়সাল কে আসামি করে ধামরাই থানায় মামলা করেন এবং ওই দিনই বিশেষ অভিযান চালিয়ে রাব্বির প্রতিবেশি আমিনুর রহমানের ঘর থেকে ৫০ ফিট দূরত্বে রাস্তার পাশে ময়লার স্তুপ থেকে পরিত্যক্ত অবস্থায় দুটি পিস্তল ও গুলি উদ্ধার করে পুলিশ। আমিনুরের স্বজনদের দাবি রাব্বির কাকা সেলিম এর সাথে দীর্ঘদিন ধরে তাদের ঝগড়া ও মামলা চলছে। এনিয়ে দুই পক্ষই মামলাও করেছিলো। সেই পূর্ব শত্রুতার জেরেই সেলিমের নির্দেশে রাব্বি বা তার স্বজনরা কেউ আমিনুরের বাড়ির উঠানে অস্ত্র রাখতে পারে বলে ধারণা করছেন তারা।

আমিনুরের ভাবি রুজিনা আক্তার জানান, ৩১ ডিসেম্বর রাতে আকাশ, রাব্বিরাসহ অনেকে মিলে পার্টি করে। রাতে আমরা গুলির শব্দ পাই। পরে সকালে উঠে শুনি যে রাব্বি আকাশকে গুলি করছে, আকাশ হাসপাতালে ভর্তি আছে। পরদিন (২ জানুয়ারি) সকালে ঘুম থেকে উঠে দেখি যে রাব্বির দাদি আমাদের বাড়ির উঠান দিয়ে ঘুরাঘুরি করতেছে। এর পর সে আরো তিন-চারবার আসছে এবং যেখান থেকে অস্ত্র পাইছে পুলিশ তার আশেপাশে ঘুরাঘুরি করছে এবং ওই দিন রাতেই পুলিশ এখানে অস্ত্র পাইছে দুইটা। এর আগে রাব্বির দাদি আমাদের বাড়িতে কখনো আসে নাই। তার এমন ঘুরাঘুরি করাতে আমাদের ধারণা যে সেই এখানে অস্ত্র দুইটা রেখে গেছিলো আমাদের ফাঁসানোর জন্য।

আমিনুরের আরেক ভাবি সাবিনা আক্তার জানান, পুলিশ আইসা আমাদের এখান থেকে পিস্তল পাইছে আমরা জানি না। পিস্তল পাওয়ার পর আমাদের ডাইকা উঠাইছে। পাওয়ার পর আমাদের বলা হইছে এবং পুলিশের সাথে রাব্বির দাদি ও রাব্বির মা ছিলো তখন। এতেই তো আসলে বুঝা যায় যে কি হইছে। পুলিশ আমাদের তেমন কিছুই বলে নাই। শুধু জানাইছে যে আমাদের এখান থেকে পাওয়া গেছে পিস্তল। আর রাব্বির কাকা সেলিমের সাথে আমাদের দীর্ঘদিন ধরে ঝগড়া চলছে। দুই পক্ষই মামলা করছিলো। সেই শত্রুতার জেরেই হয়তো আমাদের ফাঁসানোর জন্য এখানে অস্ত্র রাখছিলো।

আকাশের গুলিবিদ্ধের ঘটনায় আমিনুরের কোন সংশ্লিষ্টতা আছে কিনা জানতে চাইলে ভুক্তভোগী আকাশের বাবা প্রতুল সরকার  বলেন, আমার ছেলেকে গুলি করার পরই সে চিৎকার দিয়ে তখনই বলছে যে রাব্বি আমাকে গুলি করছে। আমার ছেলেকে হাসপাতালে নেয়ার পর আর কোন কথা বলতে পারে নাই সে। গত কালকে সে আবার বলছে যে রাব্বিই তাকে গুলি করছে। আমিনুরের কোন কথা বলে নাই আমার ছেলে। আমার ছেলের মেরুদন্ডের হাড় ভেঙে গেছে। এখন পর্যন্ত ২ লাখ ৭০ হাজার টাকা খরচ হয়েছে। অপারেশন করতে হবে। অপারেশনে ২ লাখ ৬০ হাজারের বেশি খরচ হবে বলছে ডাক্তার। আপনারা আমার ছেলের জন্য দোয়া কইরেন।

আমিনুরের প্রতিবেশী সেলিমের মুঠোফোনে  যোগাযোগের চেষ্টা করলে তার ফোন বন্ধ পাওয়া যায়।

এবিষয়ে ধামরাই থানার ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা (ওসি) মনিরুল ইসলাম বলেন, এই ঘটনায় আমিনুরের কোন সংশ্লিষ্টতা নেই। আমিনুরের ঘর থেকে পূর্ব পাশে ৫০ ফিট দূরত্বে রাস্তার পাশ থেকে অস্ত্র উদ্ধার করা হয়েছে। এঘটনায় এখনো কাউকে গ্রেপ্তার করা যায়নি। গ্রেপ্তারের কার্যক্রম চলমান রয়েছে।

উল্লেখ্য, থার্টি-ফাস্ট নাইট উদযাপনের রাতে খিচুড়ি খাওয়াকে কেন্দ্র করে ঢাকার ধামরাইয়ের রোয়াইল ইউনিয়নের রোয়াইল গ্রামে রাব্বি নামের এক কিশোর আকাশ নামের আরেক কিশোরকে গুলি করে। গুলিবিদ্ধ আকাশ সাভারের এনাম মেডিকেল কলেজ হাসপাতালে চিকিৎসাধীন অবস্থায় আছে। পরে (২ জানুয়ারি) আকাশের বাবা প্রতুল সরকার রাব্বি ও ফয়সাল কে আসামী করে থানায় মামলা করে এবং ওই দিনই পুলিশ অভিযান চালিয়ে দুটি পিস্তল ও গুলি উদ্ধার করে।

Comments are closed.

     এই বিভাগের আরও সংবাদ