মো. চঞ্চল মাহমুদ খান, স্টাফ রিপোস্টারঃ মানিকগঞ্জের ঘিওর উপজেলা রাখুরা গ্রামে গৃহবধূ খুন হওয়ার চাঞ্চল্যকর তথ্য বেরিয়ে এলো। ক্যান্সার ভুক্ত অসুস্থ স্ত্রী স্বামীকে দ্বিতীয় বিয়ে করার অনুমতি না দেওয়ায় এবং স্বামীর সাথে কাজের বুয়ার পরকীয়া প্রেমের খবর জেনে যাওয়ায় ঝগড়া সৃষ্টি হয়। সেই ঝগড়ার জের ধরেই জবাই করে হত্যা করে স্বামী সেকেন্দার (৬৬) তার অসুস্থ স্ত্রী লায়লা আরজুকে (৬২)।
গত শনিবার সন্ধ্যায় এক প্রেসবিজ্ঞপ্তিতে বিষয়টি নিশ্চিত করেছেন পুলিশ সুপার ইয়াসমিন খাতুন। আসামী মানিকগঞ্জের আদালতে ১৬৪ ধারা মতে দায়স্বীকারোক্তি জবানবন্দী দিয়েছেন।
পুলিশ সুপার ইয়াসমিন খাতুনের প্রেসবিজ্ঞপ্তিতে জানা যায়, ঘিওর উপজেলার রাথুরা গ্রামে সেকেন্দার আলী ও লায়লা আরজু দম্পতির এক ছেলে এক মেয়ে বিয়ে হওয়াতে তারা অন্যত্র থাকেন। বাড়িতে সেকেন্দার আলী ও তার স্ত্রী লায়লা আরজু থাকেন। গত ১৫ জানুয়ারি সকালে সেকান্দারের নিজ ভবন থেকে জবাই করা লায়লা আরজুর লাশ উদ্ধার করে পুলিশ। ১৬ জানুয়ারি নিহতের ভাই ময়নুল ইসলাম মুকুল বাদি হয়ে ঘিওর থানায় একটি হত্যা মামলা দায়ের করেন। মামলা হওয়ার পর বিষয়টি গুরুত্ব দিয়ে পুলিশ তদন্ত করেন। তদন্তে দেখা যায় ঘটনার সাথে নিহতের স্বামী সেকেন্দার আলী সরাসারি যুক্ত। এজন্য তাকে শুক্রবার রাতে তার নিজ বাড়ি থেকে গ্রেপ্তার করা হয়। গ্রেপ্তার হওয়ার পর সেকেন্দার আলী স্ত্রীকে হত্যার কারণ পুলিশকে খুলে বলেন।
সেকেন্দার আলী পুলিশকে বলেন, তার স্ত্রী ডায়াবেটিস, হাই প্রেসার, থাইরয়েড ও ব্রেস্ট ক্যান্সার আক্রান্ত ও জরায়ু অপসারন হয়েছিল। ২০২২ সাল থেকে সে মারাত্বক অসুস্থ ছিলো। এই কারণে তারা আলাদা রুমে রাত্রী যাপন করত। স্ত্রীর সাথে শারীরিক সম্পর্ক না থাকায় সে দ্বিতীয় বিয়ে করবে বলে জানান তার স্ত্রীকে। দ্বিতীয় বিয়েতে তার স্ত্রী বাঁধা দেন। এ বিষয় নিয়ে গত ১৪ জানুয়ারি রাতে তাদের মধ্যে ঝগড়া হয়। দ্বিতীয় বিয়ের বিষয় নিয়ে ১৫ জানুয়ারি সকাল পৌনে ৬ টার দিকে আবারও ঝগড়া হয়। ঝগড়ার এক সময় তার স্ত্রী লায়লা ধাক্কা লেগে নীচে পড়ে গেলে সে রান্না ঘর থেকে ফল কাটার ছুরি দিয়ে স্ত্রীর গলায় ৩টি খোঁচা দেয়। স্ত্রীর গলা দিয়ে রক্ত বের হলে সে একটি ওড়না দিয়ে গলা পেঁচিয়ে বাড়ি থেকে বের হয়ে বাজারের দিকে চলে যায়। সকাল সাড়ে ৮ টার দিকে বাড়িতে এসে সে আত্মচিৎকার করে বলে তার স্ত্রীকে কে বা কারা জবাই করে হত্যা করেছে মর্মে নাটক সাজান।
পুলিশ সুপার গণমাধ্যমকে বলেন, মামলা হওয়ার পর মাত্র দুই দিনের মধ্যে আলোচিত এই হত্যার রহস্য উন্মোচনসহ আসামিকে গ্রেপ্তার করা হয়েছে। গত শনিবার আসামি আদালতে স্বেচ্ছায় ১৬৪ ধারায় দায়স্বীকারোক্তি করে জবানবন্দি দিয়েছেন। আদালত আসামিকে জামিন না দিয়ে কারাগারে প্রেরণ করেছে।