নিজস্ব প্রতিবেদকঃ বেইজিংয়ে বাংলাদেশ ও চীনের শীর্ষ কূটনীতিক পর্যায়ের বৈঠকে দুই দেশের পানিসম্পদ ব্যবস্থাপনা বিষয়ে সমঝোতা স্মারক নিয়ে আলোচনা হয়েছে। এর আওতায় ব্রহ্মপুত্রের উজানে ইয়ালুজাংবু নদীতে জলবিদ্যুৎ কেন্দ্র নির্মাণ করতে চায় চীন। এর জন্য ইয়ালুজাংবু-যমুনা নদীর তথ্য-উপাত্ত বিনিময় করবে দুই দেশ। এ ছাড়া বেইজিংয়ের আন্তদেশ সড়ক যোগাযোগ নেটওয়ার্ক সম্পর্কিত উচ্চাভিলাষী প্রকল্প বেল্ট অ্যান্ড রোড কো-অপারেশনকে (বিআরসি) আরও উচ্চমানসম্পন্ন করতে পারস্পরিক সহযোগিতাপূর্ণ সম্পর্ককে গভীরতর করার অঙ্গীকার করেছে বাংলাদেশ এবং চীন।
চার দিনের সরকারি সফরের প্রথম দিনে গতকাল চীনের পররাষ্ট্রমন্ত্রী ওয়াং ইর সঙ্গে বৈঠক করেন পররাষ্ট্র উপদেষ্টা মো. তৌহিদ হোসেন। বৈঠকের পর চীনের পররাষ্ট্র মন্ত্রণালয়ের বিবৃতিতে বলা হয়েছে, দুই দেশের মধ্যকার বিভিন্ন বৃহৎ প্রকল্প, ‘ছোট কিন্তু সুন্দর’ জীবিকা নির্বাহ কর্মসূচি বাস্তবায়ন করা হবে। উদীয়মান নতুন বিনিয়োগক্ষেত্র অন্বেষণের ক্ষেত্রে দুই দেশের পারস্পরিক সহযোগিতাপূর্ণ সম্পর্ক আরও সুসংহত হবে বলে আশা প্রকাশ করেছেন দেশটির পররাষ্ট্রমন্ত্রী ওয়াং ই। ওয়াং ই আরও বলেন, ‘চীনের পররাষ্ট্রনীতিতে প্রতিবেশী হিসেবে বাংলাদেশ এবং দেশটির জনগণকে সবসময়েই গুরুত্ব দেওয়া হয়।
আধুনিকায়ন বা আধুনিক সভ্যতা সম্পর্কে চীনের যে ধারণা, তাকে বিশ্বে ছড়িয়ে পড়তে দেওয়ার জন্য ব্যাপক সংস্কার এবং প্রতিবেশী দেশগুলোর সহযোগিতা প্রয়োজন। দক্ষিণ এশিয়া অঞ্চলের দেশগুলোর মধ্যে বাংলাদেশই প্রথম, যারা বেল্ট অ্যান্ড রোড কো-অপারেশন বিষয়ক মেমোরেন্ডাম অব আন্ডারস্ট্যান্ডিং (এমওইউ) চুক্তিতে স্বাক্ষর করেছিল। ’ বৈঠক শেষে এক বার্তায় বাংলাদেশের পররাষ্ট্র বিষয়ক উপদেষ্টা তৌহিদ হাসান বলেন, চীনের সঙ্গে বন্ধুত্ব বাংলাদেশের জন্য এমন এক ঐকমত্য, যা বাংলাদেশের সব সরকার এবং পুরো জাতি দ্বারা সমর্থিত। বাংলাদেশের স্বাধীনতা, সার্বভৌমত্ব ও ভৌগলিক অখণ্ডতাকে সমর্থন করা এবং দীর্ঘ ৫ দশক ধরে বিভিন্ন ইস্যুতে নিঃস্বার্থভাবে সহযোগিতা করার জন্য বেইজিংকে ধন্যবাদ জ্ঞাপন করেন তৌহিদ হোসেন।সেই সঙ্গে বলেন, বাংলাদেশ সবসময়ই ‘এক চীন’ নীতিতে আস্থাশীল। কূটনৈতিক সূত্রগুলো জানায়, বৈঠকে বাংলাদেশের পক্ষ থেকে ঋণ সহায়তার ক্ষেত্রে নানা ধরনের ছাড়, স্বাস্থ্য ও পানিসম্পদ ব্যবস্থাপনায় সহযোগিতা ও রোহিঙ্গা ইস্যু নিয়ে আলোচনা হয়েছে। অন্যদিকে বৈশ্বিক উন্নয়ন উদ্যোগে (জিডিআই) বাংলাদেশের যুক্ততা, ঢাকায় সাংস্কৃতিক কেন্দ্র স্থাপন ও চায়না সাউদার্ন এয়ারলাইনস থেকে উড়োজাহাজ বিক্রির বিষয় নিয়ে আলোচনা করেছে চীন।
ঋণ পরিশোধে ৩০ বছর : চীনের দেওয়া ঋণ পরিশোধের মেয়াদ ১০ বছর বাড়িয়ে ৩০ বছর করতে ঢাকার অনুরোধে সাড়া দিয়েছে বেইজিং; সুদহার কমানোর বিষয় বিবেচনারও আশ্বাস এসেছে। এ বিষয়ে ‘নীতিগতভাবে একমত’ পোষণ করেছেন চীনের পররাষ্ট্রমন্ত্রী ওয়াং ই।
বাংলাদেশের পররাষ্ট্র মন্ত্রণালয়ের সংবাদ বিজ্ঞপ্তিতে এ তথ্য জানানো হয়।