আজ ৪ঠা চৈত্র, ১৪৩১ বঙ্গাব্দ, ১৮ই মার্চ, ২০২৫ ইং

ঘন কুয়াশায় উত্তরাঞ্চলের জনজীবনে স্থবিরতা, সূর্যের সাক্ষাৎ মেলনি গত পাঁচ দিনে

নিজস্ব প্রতিবেদকঃ উত্তরের সীমান্তবর্তী জেলা দিনাজপুরসহ বেশ কয়েকটি জেলায় গত পাঁচ দিন ধরে দেখা মিলছে না সূর্যের। উত্তরের দিকে থেকে বয়ে আসা হিমেল হাওয়া আর ঘন কুয়াশায় ঢাকা দিনাজপুরসহ উত্তরের জনপদ। কনকনে ঠান্ডায় কাবু হয়ে পড়েছে এ অঞ্চলের মানুষ।

শনিবার দিনাজপুরে সর্বনিম্ন তাপমাত্রা রেকর্ড করা হয়েছে ৯ দশমিক ৬ ডিগ্রি সেলসিয়াস।

এদিকে, তাপমাত্রার অবনতি আর হাড়কাঁপানো শীতে জবুথবু অবস্থা জনজীবনেও। কনকনে শীত সহজেই কাবু করছে এখানকার জনজীবন। রাত থেকে সকাল অবধি বৃষ্টির মতো ঝরছে কুয়াশা। সেই সঙ্গে যোগ হয়েছে উত্তর থেকে বয়ে আসা হিমালয়ের হিম বাতাস। গত পাঁচদিন ধরে দেখা মিলছে না সূর্যের। উষ্ণতার আশায় কেউ কেউ আগুন জ্বালিয়ে শরীর গরম করে নিচ্ছে। আবার কেউ ভিড় জমাচ্ছেন চায়ের দোকানে। দূরপাল্লার গাড়িগুলো দিনের বেলাতেও চলাচল করছে হেডলাইট জ্বালিয়ে। সার্বিক পরিস্থিতিতে বিপাকে পড়েছেন খেটে খাওয়া ও নিম্নআয়ের মানুষ। আলু, রসুন ও বোরো ধানের বীজতলা নিয়ে দুশ্চিন্তায় রয়েছেন কৃষক।

শীতের তীব্রতা বাড়ার সঙ্গে সঙ্গে জেলার ১৩টি উপজেলা স্বাস্থ্য কমপ্লেক্সে বাড়ছে ডায়রিয়া, নিউমোনিয়া ও শ্বাসকষ্টসহ শীতজনিত রোগীর সংখ্যা। প্রতিদিনই শীতজনিত সমস্যা নিয়ে হাসপাতালে ভর্তি হচ্ছেন রোগীরা। এদের মধ্যে অধিকাংশই শিশু। এ অবস্থায় শিশুদের বাসি খাবার পরিহার করা, খাবার ঢেকে রাখা এবং রাতে শিশুকে নিয়ে বাইরে বের না হওয়ার পরামর্শ দিচ্ছেন চিকিৎসকরা।

শহরের ষষ্ঠী তলায় কাজের সন্ধানে আসা দিনমজুর হাসান আলী বলেন, ঠান্ডা বেশি হওয়ার জন্য কাজকাম কম হচ্ছে। বেশি শীতের কারণে মানুষ কাজ করাতে চায় না। একদিন কাজ পাই তো দুই দিন বসে থাকতে হচ্ছে।

ট্রাকচালক মমিনুর রহমান বলেন, গভীর রাত থেকে কুয়াশায় ঢাকা রাস্তা ঘাট। এজন্য সড়কে হেডলাইট জ্বালিয়ে ধীর গতিতে চলাচল করছে সব ধরনের যানবাহন।

ইটভাটা শ্রমিক সোহেল ইসলাম বলেন, আজকে যে পরিমাণ ঠান্ডা বাতাস আর পানির মতো শিশির পড়ছে, কিভাবে কাজ করবো? এজন্য কাজে যোগ দেই নাই। একদিন কাজে যাই, একদিন যাই না। প্রতিদিন এ ঠান্ডায় কাজ করা সম্ভব হয় না।

দিনাজপুর আঞ্চলিক আবহাওয়া অফিসের ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা তোফাজ্জল হোসেন বলেন, আজ (শনিবার) সকাল ৬টায় দিনাজপুরের সর্বনিম্ন তাপমাত্রা  রেকর্ড করা হয়েছে ৯ দশমিক ৬ ডিগ্রি সেলসিয়াস। এ সময় বাতাসের আর্দ্রতা ছিল ৯৬ শতাংশ। বাতাসের গতিবেগ ছিল ঘণ্টায় ৩ কিলোমিটার।

আঞ্চলিক আবহাওয়া অফিসের ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা তোফাজ্জল হোসেন আরও জানান, বায়ুমন্ডলের উপরিভাগে জলীয় বাষ্পের পরিমাণ অত্যাধিক হারে থাকায় দিনের বেলা সূর্যের দেখা মিলছে না বা সূর্যের আলোর কাঙ্ক্ষিত তাপ পাওয়া যাচ্ছে না। আজ থেকে জলীয় বাষ্পের আধিক্য কিছুটা কমতে পারে এবং দিনের অবস্থার ক্রমান্বয়ে ধীরে ধীরে উন্নতি হওয়ার সম্ভাবনা রয়েছে। আগামী দু থেকে তিন দিন রাতের তাপমাত্রা ক্রমান্বয়ে আরও কিছুটা হ্রাস পাওয়ার যথেষ্ট সম্ভাবনা রয়েছে।

Comments are closed.

     এই বিভাগের আরও সংবাদ