০৬:৪৫ অপরাহ্ন, সোমবার, ০২ জুন ২০২৫, ১৯ জ্যৈষ্ঠ ১৪৩২ বঙ্গাব্দ

দিনাজপুরে নারী ফুটবল টুর্নামেন্ট আয়োজকদের সাথে তোহিদী জনতার সংঘর্ষে আহত ৬

  • Reporter Name
  • প্রকাশের সময়ঃ ১১:৩৩:১৮ পূর্বাহ্ন, বুধবার, ২৯ জানুয়ারী ২০২৫
  • ৭৭ বার পড়া হয়েছে

আলোকিত কন্ঠ ডেস্কঃ দিনাজপুরের হাকিমপুরের হিলিতে নারী ফুটবল ম্যাচ বন্ধ করাকে কেন্দ্র করে তৌহিদী জনতা ও আয়োজকদের মাঝে সংঘর্ষে ছয় জন আহত হয়েছেন। আহতরা উপজেলা স্বাস্থ্য কমপ্লেক্সে চিকিৎসাধীন রয়েছেন।

এই ঘটনায় নারী ফুটবল টুর্নামেন্টটি বন্ধ করে দেওয়া হয়েছে। ঘটনার সঙ্গে জড়িতদের ব্যবস্থা নেওয়ার কথা জানিয়েছে প্রশাসন।

মঙ্গলবার (২৮ জানুয়ারি) বিকাল ৪টায় উপজেলার আলিহাট ইউনিয়নের বাওনা এলাকায় এ ঘটনা ঘটে।

এদিকে, সন্ধ্যায় হাকিমপুর উপজেলা স্বাস্থ্য কমপ্লেক্সে চিকিৎসাধীন আহতদের দেখতে যান উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তা অমিত রায় ও হাকিমপুর থানার ওসি সুজন মিঞা। এ সময় তারা আহতদের সঙ্গে কথা বলেন ও তাদের চিকিৎসার বিষয়ে খোঁজ নেন।

পুলিশ ও স্থানীয় সূত্রে জানা গেছে, স্থানীয় যুবসমাজের উদ্যোগে উপজেলার বাওনা এলাকায় নারী ফুটবল টুর্নামেন্টের আয়োজন করে। তবে নারীদের ফুটবল খেলা মেনে নিতে পারছিলেন না একটি পক্ষ। তারা শুরু থেকেই এই টুর্নামেন্টের বিরোধিতা করে আসছিলেন। এর আগেও তারা খেলা বন্ধের দাবিতে বিক্ষোভ মিছিল ও স্মারকলিপি দিয়েছেন প্রশাসনকে। এরই পরিপ্রেক্ষিতে মঙ্গলবার বিকাল ৪টায় বাওনা মাঠে খেলা শুরুর প্রস্তুতি নিচ্ছিল আয়োজক কমিটি।

সময় তৌহিদী জনতার ব্যানারে বেশ কিছু মানুষ মিছিল নিয়ে খেলার মাঠে উপস্থিত হন। খবর পেয়ে উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তা অমিত রায়, হাকিমপুর সার্কেলের সহকারী পুলিশ সুপার আনম নিয়ামত উল্লাহ, থানার ওসি সুজন মিঞাসহ পুলিশের একটি দল উপস্থিত হয়ে দুই পক্ষের সঙ্গে আলোচনা করে পরিস্থিতি শান্ত করার চেষ্টা করছিলেন। একইসঙ্গে রাজনৈতিক দলের পক্ষ থেকেও দুই পক্ষকে শান্ত করার চেষ্টা করছিল।

এ সময় তৌহিদী জনতা নারীদের ফুটবল খেলা বন্ধের দাবি জানিয়ে বিক্ষোভ প্রদর্শন করেন। অপরদিকে আয়োজক কমিটি এর বিরোধিতা করলে আলোচনার মধ্যেই হঠাৎ দুই পক্ষের মধ্যে সংঘর্ষের সৃষ্টি হয়। এ সময় উভয়পক্ষের ছয় জন আহত হন- যার মধ্যে নারীদের খেলার বিপক্ষের চার জন রয়েছেন। তাদের উদ্ধার করে হাকিমপুর উপজেলা স্বাস্থ্য কমপ্লেক্সে ভর্তি করা হয়েছে।

হাকিমপুর উপজেলা স্বাস্থ্য কমপ্লেক্সের চিকিৎসক ডা. মশিউর রহমান বলেন, বিকেলের দিকে মারামারির ঘটনায় আহত হয়ে তিন জন রোগী আমাদের হাসপাতালে এসেছেন। ইটাই বাওনা এলাকায় নারীদের ফুটবল খেলাকে কেন্দ্র করে একটি মারামারির ঘটনা ঘটেছে সেই ঘটনায় তারা আহত হয়েছেন বলে তারা জানিয়েছেন। আহতদের অবস্থা তেমন আশঙ্কাজনক নয়। এর মধ্যে একজন গুরুতর আহত রয়েছেন। তার মাথায় আঘাত লেগেছে। সিটি স্ক্যান করলে বোঝা যাবে আঘাত কতটা গুরুতর। তবে অন্য দুই জনের অবস্থা ভালো রয়েছে।

হাকিমপুর থানার ওসি সুজন মিঞা বলেন, প্রমিলা ফুটবল খেলাকে কেন্দ্র করে সৃষ্ট উত্তেজনায় ৩/৪ জন আহত হয়েছেন। যারা এই ঘটনার সঙ্গে জড়িত, বিনা উসকানিতে মারামারির সৃষ্টি করেছে কি না- তদন্ত করে তাদের বিরুদ্ধে ব্যবস্থা নেওয়া হবে। এ বিষয়ে আইনি ব্যবস্থা গ্রহণ প্রক্রিয়াধীন রয়েছে।

হাকিমপুর উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তা অমিত রায় বলেন, উপজেলার বাওনা এলাকায় নারীদের ফুটবল খেলাকে কেন্দ্র করে সৃষ্ট উত্তেজনাতে কয়েকজন আহত হয়েছে। যারা আহত হয়েছে তাদেরকে আমরা হাসপাতালে দেখতে এসেছি তাদের যেন সঠিক চিকিৎসা হয়। সেই সঙ্গে এ বিষয়ে প্রয়োজনীয় আইনি ব্যবস্থা নেওয়া হবে।

Tag :
About Author Information

জনপ্রিয়

বুড়িমারী স্থলবন্দরে ১০ দিন আমদানি-রপ্তানি বন্ধ

দিনাজপুরে নারী ফুটবল টুর্নামেন্ট আয়োজকদের সাথে তোহিদী জনতার সংঘর্ষে আহত ৬

প্রকাশের সময়ঃ ১১:৩৩:১৮ পূর্বাহ্ন, বুধবার, ২৯ জানুয়ারী ২০২৫

আলোকিত কন্ঠ ডেস্কঃ দিনাজপুরের হাকিমপুরের হিলিতে নারী ফুটবল ম্যাচ বন্ধ করাকে কেন্দ্র করে তৌহিদী জনতা ও আয়োজকদের মাঝে সংঘর্ষে ছয় জন আহত হয়েছেন। আহতরা উপজেলা স্বাস্থ্য কমপ্লেক্সে চিকিৎসাধীন রয়েছেন।

এই ঘটনায় নারী ফুটবল টুর্নামেন্টটি বন্ধ করে দেওয়া হয়েছে। ঘটনার সঙ্গে জড়িতদের ব্যবস্থা নেওয়ার কথা জানিয়েছে প্রশাসন।

মঙ্গলবার (২৮ জানুয়ারি) বিকাল ৪টায় উপজেলার আলিহাট ইউনিয়নের বাওনা এলাকায় এ ঘটনা ঘটে।

এদিকে, সন্ধ্যায় হাকিমপুর উপজেলা স্বাস্থ্য কমপ্লেক্সে চিকিৎসাধীন আহতদের দেখতে যান উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তা অমিত রায় ও হাকিমপুর থানার ওসি সুজন মিঞা। এ সময় তারা আহতদের সঙ্গে কথা বলেন ও তাদের চিকিৎসার বিষয়ে খোঁজ নেন।

পুলিশ ও স্থানীয় সূত্রে জানা গেছে, স্থানীয় যুবসমাজের উদ্যোগে উপজেলার বাওনা এলাকায় নারী ফুটবল টুর্নামেন্টের আয়োজন করে। তবে নারীদের ফুটবল খেলা মেনে নিতে পারছিলেন না একটি পক্ষ। তারা শুরু থেকেই এই টুর্নামেন্টের বিরোধিতা করে আসছিলেন। এর আগেও তারা খেলা বন্ধের দাবিতে বিক্ষোভ মিছিল ও স্মারকলিপি দিয়েছেন প্রশাসনকে। এরই পরিপ্রেক্ষিতে মঙ্গলবার বিকাল ৪টায় বাওনা মাঠে খেলা শুরুর প্রস্তুতি নিচ্ছিল আয়োজক কমিটি।

সময় তৌহিদী জনতার ব্যানারে বেশ কিছু মানুষ মিছিল নিয়ে খেলার মাঠে উপস্থিত হন। খবর পেয়ে উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তা অমিত রায়, হাকিমপুর সার্কেলের সহকারী পুলিশ সুপার আনম নিয়ামত উল্লাহ, থানার ওসি সুজন মিঞাসহ পুলিশের একটি দল উপস্থিত হয়ে দুই পক্ষের সঙ্গে আলোচনা করে পরিস্থিতি শান্ত করার চেষ্টা করছিলেন। একইসঙ্গে রাজনৈতিক দলের পক্ষ থেকেও দুই পক্ষকে শান্ত করার চেষ্টা করছিল।

এ সময় তৌহিদী জনতা নারীদের ফুটবল খেলা বন্ধের দাবি জানিয়ে বিক্ষোভ প্রদর্শন করেন। অপরদিকে আয়োজক কমিটি এর বিরোধিতা করলে আলোচনার মধ্যেই হঠাৎ দুই পক্ষের মধ্যে সংঘর্ষের সৃষ্টি হয়। এ সময় উভয়পক্ষের ছয় জন আহত হন- যার মধ্যে নারীদের খেলার বিপক্ষের চার জন রয়েছেন। তাদের উদ্ধার করে হাকিমপুর উপজেলা স্বাস্থ্য কমপ্লেক্সে ভর্তি করা হয়েছে।

হাকিমপুর উপজেলা স্বাস্থ্য কমপ্লেক্সের চিকিৎসক ডা. মশিউর রহমান বলেন, বিকেলের দিকে মারামারির ঘটনায় আহত হয়ে তিন জন রোগী আমাদের হাসপাতালে এসেছেন। ইটাই বাওনা এলাকায় নারীদের ফুটবল খেলাকে কেন্দ্র করে একটি মারামারির ঘটনা ঘটেছে সেই ঘটনায় তারা আহত হয়েছেন বলে তারা জানিয়েছেন। আহতদের অবস্থা তেমন আশঙ্কাজনক নয়। এর মধ্যে একজন গুরুতর আহত রয়েছেন। তার মাথায় আঘাত লেগেছে। সিটি স্ক্যান করলে বোঝা যাবে আঘাত কতটা গুরুতর। তবে অন্য দুই জনের অবস্থা ভালো রয়েছে।

হাকিমপুর থানার ওসি সুজন মিঞা বলেন, প্রমিলা ফুটবল খেলাকে কেন্দ্র করে সৃষ্ট উত্তেজনায় ৩/৪ জন আহত হয়েছেন। যারা এই ঘটনার সঙ্গে জড়িত, বিনা উসকানিতে মারামারির সৃষ্টি করেছে কি না- তদন্ত করে তাদের বিরুদ্ধে ব্যবস্থা নেওয়া হবে। এ বিষয়ে আইনি ব্যবস্থা গ্রহণ প্রক্রিয়াধীন রয়েছে।

হাকিমপুর উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তা অমিত রায় বলেন, উপজেলার বাওনা এলাকায় নারীদের ফুটবল খেলাকে কেন্দ্র করে সৃষ্ট উত্তেজনাতে কয়েকজন আহত হয়েছে। যারা আহত হয়েছে তাদেরকে আমরা হাসপাতালে দেখতে এসেছি তাদের যেন সঠিক চিকিৎসা হয়। সেই সঙ্গে এ বিষয়ে প্রয়োজনীয় আইনি ব্যবস্থা নেওয়া হবে।