রাজীব হাসান, ধামরাই প্রতিনিধিঃ স্কুলে থাকতে অনেক ক্রীড়া প্রতিযোগিতায় অংশ নিয়েছি। কিন্তু কোনো পুরস্কার জিতিনি। এটা নিয়ে আমার সঙ্গে সহপাঠীরা নানা খুনসুটি করত। পরে আমি যখন টিউটোরিয়াল হোমে পরিচালক বনে গেলাম, তারা আবার আমাকে নিয়ে ঠিকই গর্ব করেছে।’
বলেছিলেন ঢাকার ধামরাই উপজেলার শীর্ষস্থানীয় কিন্ডারগার্টেন টিউটোরিয়াল হোম স্কুলের পরিচালক সিরাজুল হক দুলাল।
গতকাল বুধবার পৌরসভার বালিকা উচ্চ বিদ্যালয়ের সামনে স্কুলটির মাঠে অনুষ্ঠিত হয় টিউটোরিয়াল হোম স্কুলের ‘বার্ষিক ক্রীড়া প্রতিযোগিতা ২০২৫ । দিনব্যাপী আয়োজিত এ প্রতিযোগিতায় উপস্থিত ছিলেন উপজেলা শিক্ষা অফিসার কামরুন নাহার। দিনটি ছিল শিক্ষক–শিক্ষার্থী ও অভিভাবকদের আনন্দ–উচ্ছ্বাসের উপলক্ষ।
শহীদ মেজর মাহবুবুর রহমান স্মৃতি স্বর্ণ পদক প্রদান অনুষ্ঠানে শতাধিক গার্ডিয়ান ও শিক্ষকদের অংশ গ্রহণে প্রতিষ্ঠানটির চার শতাধিক শিক্ষার্থী অংশ নেয়। ছেলে ও মেয়ে শিক্ষার্থীরা আলাদাভাবে অংশ নিয়ে মেতেছিল নিজেদের ক্রীড়ানৈপুণ্য দেখানোর উৎসবে।
কোরআন তেলোয়াতও গিতা পাঠের পর জাতীয় সংগীত পরিবেশনের মধ্য দিয়ে উদ্বোধন করা হয় এ আয়োজনের। বিভিন্ন রঙের বেলুন, ফেস্টুন, ব্যানার আর শিক্ষক–শিক্ষার্থীদের পরনে নির্দিষ্ট ‘স্পোর্টস ড্রেসে’ মাঠ প্রাঙ্গণ হয়ে ওঠে বর্ণিল ও জমজমাট। শিক্ষার্থীদের অনুপ্রাণিত করতে উপস্থিত ছিলেন হোমের অধ্যক্ষ খোদেজা রহমান।
স্কুলটির প্রতিষ্ঠাতা শহীদ মেজর মাহবুবুর রহমানের সুযোগ্য সন্তান মাহফুজুর রহমান (শাহেদ),পরিচালক সিরাজুল হক দুলাল। তাঁদের সঙ্গে নিয়ে বার্ষিক ক্রীড়া প্রতিযোগিতার উদ্বোধন করেন শিক্ষা অফিসার কামরুন্নাহারসহ অন্য পরিচালকেরা।
এ সময় সিরাজুল হক দুলাল বলেন, ‘ঢাকায় ধামরাইয়ে ১৯৮৪ সালে মরহুম হামিদুর রহমান প্রথম উদ্যোগ নেন, সাথে আমি সহ কয়েক জন মিলে শুরু করেছিলাম ধামরাই পৌরশহরে সর্বপ্রথম কিন্ডারগার্টেন স্কুল টিউটোরিয়াল হোম। ঐ সময়ে এই স্কুল করা খুবই চ্যালেন্জিং ছিল। আমাদের সৎ সাহস আর কঠিন উদ্যমে সম্ভব হয়েছিল।
ধামরাই উচ্চ বালিকা বিদ্যালয়ের ভিতরে আমাদের প্রথম ক্লাস রুম ছিল। পরবর্তীতে আমাদের নিজস্ব ভবন করা হয়। আমাদের এই স্কুলে লেখাপড়া করে এখন বাংলাদেশের বিভিন্ন যায়গায় সচিব, ইউএনও, শিক্ষা অফিসার রয়েছে।
এক বছর ধরে পরিচালক হিসেবে কাজ করছি। অভিভাবক ও শিক্ষার্থীরা এই দিনের জন্য অপেক্ষা করে। গাইডেন্সের শিক্ষার্থীরা খুব প্রতিভাবান।
এখন সেভাবে মাঠে খেলার কোনো সুযোগ নেই। গাইডেন্স স্কুলের বার্ষিক এমন উদ্যোগ শিশুদের সেই অভাবকে কিছুটা লাঘব করে।
পড়াশোনার ফাঁকে স্বল্প সময়েও তাঁরা ক্রীড়া–দক্ষতা অর্জনে যে মনোযোগ দেখায়, নিঃসন্দেহে এটি আমাকে আন্দোলিত করে। খেলাধুলার প্রতি গাইডেন্সের এমন গুরুত্ব প্রদান সত্যি প্রশংসনীয়।