০৬:৪৯ অপরাহ্ন, সোমবার, ০২ জুন ২০২৫, ১৯ জ্যৈষ্ঠ ১৪৩২ বঙ্গাব্দ

মানবাধিকার সংস্থার নামে অর্থ হাতিয়ে নেয়ার অভিযোগ

  • Reporter Name
  • প্রকাশের সময়ঃ ০৯:২৪:২০ অপরাহ্ন, শনিবার, ১৫ ফেব্রুয়ারী ২০২৫
  • ১৯৩ বার পড়া হয়েছে

 

বেনাপোল প্রতিনিধিঃ আন্তর্জাতিক মানবাধিকার ও আইন সহায়তা প্রদানকারী সংস্থা যশোর পশ্চিম শাখার সভাপতি পরিচয় দিয়ে বিভিন্ন ব্যক্তিকে পরিচয়পত্র বানিয়ে দেওয়া ও পরিচিত সভার আয়োজনের নামে অর্থ হাতিয়ে নিয়ে প্রতারণা করে আসছে বলে অভিযোগ উঠেছে আসাদুজ্জামান আসাদ নামে এক ব্যক্তির বিরুদ্ধে।

সংগঠনটিকে মানুষের বিশ্বাসযোগ্য করতে শনিবার (১৫ ফেব্রুয়ারী) সকালে যশোরের শার্শা উপজেলার বাগআঁচড়া হাই স্কুল মাঠে পরিচিতি, মত বিনিময় ও শপথ গ্রহন অনুষ্ঠান আয়োজন করেন সংস্থাটি। এতে যশোর জেলা পুলিশ সুপার, শার্শা নির্বাহী কর্মকর্তা, বিএনপির সাবেক দপ্তর সম্পাদক মফিকুল হাসান তৃপ্তি, যশোর জেলা বিএনপির সদস্য সচিব এ্যাডভোকেট সাবেরুল হক সাবু, শার্শা থানা বিএনপির সভাপতি আবুল হাসান জহির, সাধারণ সম্পাদক নরুজ্জামান লিটন, শার্শা, বেনাপোল, ঝিকরগাছা ও চৌগাছা থানার ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তাসহ মোট ২৩ জনকে অতিথি করা হয়। তবে বাস্তবতা হলো এই অনুষ্ঠানে একজন জামায়াত নেতা ছাড়া আর কোন আমন্ত্রিত অতিথিকে উপস্থিত হতে দেখা যায়নি।

এদিকে শার্শা উপজেলা সমাজসেবা অফিস ও হিউম্যান রাইর্টস যশোরের কর্মকর্তারা জানিয়েছেন এটি একটি ভুঁইফোঁড় সংগঠন। এদের বিষয়ে তাদের কাছে কোন তথ্য নেই।

অনুসন্ধানে জানা গেছে, শার্শা উপজেলার ৮ নম্বর বাগআঁচড়া ইউনিয়নের ওলামা’লীগের সাবেক সভাপতি মৃত নেছার উদ্দীনের ছেলে আসাদুজ্জামান আসাদ। সে দীর্ঘদিন যাবত প্রবাসে ছিলেন।গত দুই বছর আগে দেশে এসে বেকার জীবনযাপন করছিলেন। হঠ্যাৎ গত কয়েক মাস অনলাইন নিউজ পোর্টাল আজকের গোয়েন্দা সংবাদ নামের একটি পত্রিকা কার্ড গলায় ঝুলিয়ে এবং একটি বুম সাথে নিয়ে সাংবাদিক ও মানবাধিকার কর্মি বনে যান। এরপর থেকে একাধিক ব্যক্তিকে মানবাধিকার কর্মির পরিচয়পত্র বানিয়ে দেওয়ার নামে জন প্রতি ২ হাজার থেকে ৫ হাজার টাকা করে অর্থ আত্মসাত করে আসছে। শনিবার (১৫ ফেব্রুয়ারি) উপজেলার বাগআঁচড়া হাইস্কুল মাঠে ঢাকঢোল বাজিয়ে আন্তর্জাতিক মানবাধিকার ও আইন সহায়তা প্রদানকারী সংস্থার নামে পরিচিত ও মতবিনিময় সভার আয়োজন করলে বিষয়টি সাংবাদিকদের নজরে আসে।পরে বিভিন্ন দপ্তরে সংস্থাটির সত্যতা জানতে খোঁজ নিলে সকলে ঐ সংস্থাকে ভুঁইফোড় বলে অবহিত করেন।

শার্শা উপজেলা বিএনপি সভাপতি আবুল হাসান জহির ও সাধারণ সম্পাদক নরুজ্জামান লিটন জানান, তারা দাওয়াত পেয়েছিলেন। তবে সংস্থাটির বিষয়ে খোঁজখবর নিয়ে ভালো তথ্য না পাওয়ায় তারা দুইজনই আসেননি।

শার্শা থানার ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা রবিউল ইসলাম কেন আসেননি জানতে চাইলে তিনি বলেন, আমি সরকারি কাজে ব্যস্ত ছিলাম এজন্য যেতে পারিনি। সংস্থাটির বিষয়ে আপনার কাছে কি তথ্য আছে জানতে চাইলে বলেন, আমি খোঁজখবর নিয়েছে। এবং সাংবাদিকদেরও খোঁজখবর নেওয়ার অনুরোধ করেন।

অভিযুক্ত আসাদুজ্জামান জানান, আমাদের সংস্থার নিয়ম সদস্য হতে গেলে সর্বনিম্ন ১ হাজার থেকে ২ হাজার টাকা দিতে হয়।এসময় তার কাছে প্রশ্ন করা হয় তিনি কতজনের কাছ থেকে এভাবে টাকা নিয়েছেন। তখনই তড়িঘড়ি করে আলাপ’কলটি কেটে দেন।

হিউম্যান রাইর্টসের যশোরের নির্বার্হী পরিচালক বিনয় কৃষ্ণ মল্লিক জানান, এসব কতিপয় ভুয়া সংগঠনের লোকজন সেবা প্রার্থীদের ভুল বুঝিয়ে মানবাধিকারের নামে মিথ্যা প্রতিশ্রুতি দিয়ে টাকা হাতিয়ে নিচ্ছে।পারিবারিক, জমি সংক্রান্তসহ যে কোনো সমস্যা সমাধানের নামে অর্থ আদায় করে। প্রশাসনের কাছে বিভিন্ন তদবিরের পাশাপাশি করছে আইডি কার্ড বাণিজ্য। সংগঠনের মনোগ্রাম ও পতাকা ব্যবহার করে রাষ্ট্রীয় সুযোগ-সুবিধা নিয়ে দাঁপিয়ে বেড়াচ্ছে কেউ কেউ। কোনো কোনো ক্ষেত্রে পুলিশসহ সরকারের মাঠ প্রশাসনের কর্মকর্তারা তাদের সরকারি প্রতিষ্ঠান ভেবে বিভ্রান্ত হচ্ছেন।

শার্শা উপজেলা সমাজসেবা কর্মকর্তা তৌহিদ মিলন জানান, এ নামের মানবাধিকার সংস্থার বিষয়ে তার কাছে এবং অফিসে কোন তথ্য নেই। বিষয়টি ক্ষতিয়ে দেখছেন বলে তিনি জানান।

এ বিষয়ে শার্শা উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তা (ইউএনও) কাজী নাজিব হাসান জানান, সংস্থাটির বিষয়ে আমার তেমন কিছু জানা নেই। তবে সংগঠন বা সংস্থার নামে কেউ প্রতারণা করলে তার বিরুদ্ধে আইনগত ব্যবস্থা গ্রহন করা হবে।

Tag :
About Author Information

জনপ্রিয়

বুড়িমারী স্থলবন্দরে ১০ দিন আমদানি-রপ্তানি বন্ধ

মানবাধিকার সংস্থার নামে অর্থ হাতিয়ে নেয়ার অভিযোগ

প্রকাশের সময়ঃ ০৯:২৪:২০ অপরাহ্ন, শনিবার, ১৫ ফেব্রুয়ারী ২০২৫

 

বেনাপোল প্রতিনিধিঃ আন্তর্জাতিক মানবাধিকার ও আইন সহায়তা প্রদানকারী সংস্থা যশোর পশ্চিম শাখার সভাপতি পরিচয় দিয়ে বিভিন্ন ব্যক্তিকে পরিচয়পত্র বানিয়ে দেওয়া ও পরিচিত সভার আয়োজনের নামে অর্থ হাতিয়ে নিয়ে প্রতারণা করে আসছে বলে অভিযোগ উঠেছে আসাদুজ্জামান আসাদ নামে এক ব্যক্তির বিরুদ্ধে।

সংগঠনটিকে মানুষের বিশ্বাসযোগ্য করতে শনিবার (১৫ ফেব্রুয়ারী) সকালে যশোরের শার্শা উপজেলার বাগআঁচড়া হাই স্কুল মাঠে পরিচিতি, মত বিনিময় ও শপথ গ্রহন অনুষ্ঠান আয়োজন করেন সংস্থাটি। এতে যশোর জেলা পুলিশ সুপার, শার্শা নির্বাহী কর্মকর্তা, বিএনপির সাবেক দপ্তর সম্পাদক মফিকুল হাসান তৃপ্তি, যশোর জেলা বিএনপির সদস্য সচিব এ্যাডভোকেট সাবেরুল হক সাবু, শার্শা থানা বিএনপির সভাপতি আবুল হাসান জহির, সাধারণ সম্পাদক নরুজ্জামান লিটন, শার্শা, বেনাপোল, ঝিকরগাছা ও চৌগাছা থানার ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তাসহ মোট ২৩ জনকে অতিথি করা হয়। তবে বাস্তবতা হলো এই অনুষ্ঠানে একজন জামায়াত নেতা ছাড়া আর কোন আমন্ত্রিত অতিথিকে উপস্থিত হতে দেখা যায়নি।

এদিকে শার্শা উপজেলা সমাজসেবা অফিস ও হিউম্যান রাইর্টস যশোরের কর্মকর্তারা জানিয়েছেন এটি একটি ভুঁইফোঁড় সংগঠন। এদের বিষয়ে তাদের কাছে কোন তথ্য নেই।

অনুসন্ধানে জানা গেছে, শার্শা উপজেলার ৮ নম্বর বাগআঁচড়া ইউনিয়নের ওলামা’লীগের সাবেক সভাপতি মৃত নেছার উদ্দীনের ছেলে আসাদুজ্জামান আসাদ। সে দীর্ঘদিন যাবত প্রবাসে ছিলেন।গত দুই বছর আগে দেশে এসে বেকার জীবনযাপন করছিলেন। হঠ্যাৎ গত কয়েক মাস অনলাইন নিউজ পোর্টাল আজকের গোয়েন্দা সংবাদ নামের একটি পত্রিকা কার্ড গলায় ঝুলিয়ে এবং একটি বুম সাথে নিয়ে সাংবাদিক ও মানবাধিকার কর্মি বনে যান। এরপর থেকে একাধিক ব্যক্তিকে মানবাধিকার কর্মির পরিচয়পত্র বানিয়ে দেওয়ার নামে জন প্রতি ২ হাজার থেকে ৫ হাজার টাকা করে অর্থ আত্মসাত করে আসছে। শনিবার (১৫ ফেব্রুয়ারি) উপজেলার বাগআঁচড়া হাইস্কুল মাঠে ঢাকঢোল বাজিয়ে আন্তর্জাতিক মানবাধিকার ও আইন সহায়তা প্রদানকারী সংস্থার নামে পরিচিত ও মতবিনিময় সভার আয়োজন করলে বিষয়টি সাংবাদিকদের নজরে আসে।পরে বিভিন্ন দপ্তরে সংস্থাটির সত্যতা জানতে খোঁজ নিলে সকলে ঐ সংস্থাকে ভুঁইফোড় বলে অবহিত করেন।

শার্শা উপজেলা বিএনপি সভাপতি আবুল হাসান জহির ও সাধারণ সম্পাদক নরুজ্জামান লিটন জানান, তারা দাওয়াত পেয়েছিলেন। তবে সংস্থাটির বিষয়ে খোঁজখবর নিয়ে ভালো তথ্য না পাওয়ায় তারা দুইজনই আসেননি।

শার্শা থানার ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা রবিউল ইসলাম কেন আসেননি জানতে চাইলে তিনি বলেন, আমি সরকারি কাজে ব্যস্ত ছিলাম এজন্য যেতে পারিনি। সংস্থাটির বিষয়ে আপনার কাছে কি তথ্য আছে জানতে চাইলে বলেন, আমি খোঁজখবর নিয়েছে। এবং সাংবাদিকদেরও খোঁজখবর নেওয়ার অনুরোধ করেন।

অভিযুক্ত আসাদুজ্জামান জানান, আমাদের সংস্থার নিয়ম সদস্য হতে গেলে সর্বনিম্ন ১ হাজার থেকে ২ হাজার টাকা দিতে হয়।এসময় তার কাছে প্রশ্ন করা হয় তিনি কতজনের কাছ থেকে এভাবে টাকা নিয়েছেন। তখনই তড়িঘড়ি করে আলাপ’কলটি কেটে দেন।

হিউম্যান রাইর্টসের যশোরের নির্বার্হী পরিচালক বিনয় কৃষ্ণ মল্লিক জানান, এসব কতিপয় ভুয়া সংগঠনের লোকজন সেবা প্রার্থীদের ভুল বুঝিয়ে মানবাধিকারের নামে মিথ্যা প্রতিশ্রুতি দিয়ে টাকা হাতিয়ে নিচ্ছে।পারিবারিক, জমি সংক্রান্তসহ যে কোনো সমস্যা সমাধানের নামে অর্থ আদায় করে। প্রশাসনের কাছে বিভিন্ন তদবিরের পাশাপাশি করছে আইডি কার্ড বাণিজ্য। সংগঠনের মনোগ্রাম ও পতাকা ব্যবহার করে রাষ্ট্রীয় সুযোগ-সুবিধা নিয়ে দাঁপিয়ে বেড়াচ্ছে কেউ কেউ। কোনো কোনো ক্ষেত্রে পুলিশসহ সরকারের মাঠ প্রশাসনের কর্মকর্তারা তাদের সরকারি প্রতিষ্ঠান ভেবে বিভ্রান্ত হচ্ছেন।

শার্শা উপজেলা সমাজসেবা কর্মকর্তা তৌহিদ মিলন জানান, এ নামের মানবাধিকার সংস্থার বিষয়ে তার কাছে এবং অফিসে কোন তথ্য নেই। বিষয়টি ক্ষতিয়ে দেখছেন বলে তিনি জানান।

এ বিষয়ে শার্শা উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তা (ইউএনও) কাজী নাজিব হাসান জানান, সংস্থাটির বিষয়ে আমার তেমন কিছু জানা নেই। তবে সংগঠন বা সংস্থার নামে কেউ প্রতারণা করলে তার বিরুদ্ধে আইনগত ব্যবস্থা গ্রহন করা হবে।