০৭:৪৭ অপরাহ্ন, মঙ্গলবার, ২৪ জুন ২০২৫, ১০ আষাঢ় ১৪৩২ বঙ্গাব্দ

জাগো বাহে তিস্তা বাঁচাই’ স্লোগানে উত্তাল তিস্তা এলাকা

  • Reporter Name
  • প্রকাশের সময়ঃ ০৪:৪১:০৩ অপরাহ্ন, সোমবার, ১৭ ফেব্রুয়ারী ২০২৫
  • ১৩৫ বার পড়া হয়েছে

 

সহিদুল ইসলাম লালমনিরহাট প্রতিনিধি: রংপুর বিভাগের ৫ জেলায় তিস্তা চুক্তি ও তিস্তা মহাপরিকল্পনা বাস্তবায়নের দাবিতে টানা ৪৮ ঘণ্টার কর্মসূচিতে তিস্তা পাড়ের ১৩০ কিলোমিটার এলাকা জুড়ে জাগো বাহে-তিস্তা বাঁচাই’ স্লোগানে স্লোগানে মুখরিত হয়ে উঠেছে।

সোমবার(১৭ফেব্রুয়ারি) টানা ৪৮ ঘণ্টার এ কর্মসূচির উদ্বোধন করেন বিএনপি’র মহাসচিব মির্জা ফখরুল ইসলাম আলমগীর ।

সমাবেশস্থল গুলো্ হচ্ছে, রংপুর-লালমনিরহাটের সংযোগস্থল তিস্তা রেলসেতু এলাকা,নীলফামারী তিস্তা ব্যারেজ এলাকা,হাতিবান্ধা উপজেলার তিস্তা ব্যারেজের এলাকা, মহিপুর সড়ক সেতু এলাকা ,মহিষখোচা এলাকা, গঙ্গাচড়া মহিপুর সড়ক সেতু এলাকা, কাউনিয়া তিস্তা রেল সেতু এলাকা,রাজারহাট সরিষাবাড়ী, ঘড়িয়াল ডাঙ্গা এলাকা, উলিপুর পাকার মাথা, থেতরাই এলাকা, এবং সুন্দরগঞ্জ হরিপুর সেতু এলাকা।

সকাল থেকেই তিস্তা বাঁচাও আন্দোলনের কর্মসূচিতে যোগ দিতে লাখো মানুষের ঢল নেমেছে সমাবেশস্থল গুলোতে।
সরেজমিনে গিয়ে দেখা যায়, মূল সমাবেশ দুপুর ২টা থেকে শুরু হয়েছে। টানা ৪৮ ঘণ্টা পর্যন্ত কর্মসূচি চলবে। এর মাধ্যমে তিস্তাপাড়ের মানুষকে ঐক্যবদ্ধ করে সরকারকে দাবি বাস্তবায়নে চাপ দেওয়াসহ বিশ্ব পরিমণ্ডলে তিস্তার দুঃখ তুলে ধরা হবে বলে জানিয়েছেন আয়োজকরা। এরইমধ্যে মঞ্চের সামনে শিক্ষার্থী, কৃষক, মৎস্যজীবী, পরিবেশকর্মী, শিক্ষক, চিকিৎসক থেকে শুরু করে বিভিন্ন পেশাজীবী সংগঠনের সদস্যরা এক কাতারে শামিল হয়েছেন তিস্তা রক্ষার দাবিতে। সমাবেশে অংশগ্রহণকারীদের চোখে-মুখে ক্ষোভ আর আশার ছাপ। একদিকে নদী মৃত্যুর প্রহর গুণছে, অন্যদিকে এরই মধ্যে জেগে উঠেছে জনতার অদম্য সংহতি।

সমাবেশে আসা কৃষকরা বলছেন, একসময় এই নদীই ছিল তাদের জীবন জীবিকার একমাত্র উৎস। এখন বালু আর পাথর ছাড়া কিছুই নেই নদীতে। দুই ফসলি জমি এখন মরুভূমি। আবার যখন পানি আসে, বাড়ি ঘর ছাড়তে হয় তাদের।

এ বিষয়ে ,বিএনপি’র জাতীয় নির্বাহী কমিটির সাংগঠনিক সম্পাদক,জেলা বিএনপির সভাপতি সাবেক উপমন্ত্রী ও তিস্তা নদী রক্ষা আন্দোলন কমিটির প্রধান সমন্বয়কারী আসাদুল হাবিব দুলু বলেন, ‘সোমবার সকাল থেকে রংপুর অঞ্চলের লাখো মানুষ তিস্তাপাড়ে জড়ো হয়েছেন। তিস্তার পানির ন্যায্য হিস্যা ও তিস্তা মহাপরিকল্পনা বাস্তবায়ন হলো জন আকাঙ্ক্ষার দাবি। এ কারণে এ অঞ্চলের মানুষ ঘরে বসে নেই। তারা নিজ দায়িত্বে তিস্তাপাড়ে জড়ো হয়ে অবস্থান কর্মসূচি পালন করছেন।’

তিনি আরও বলেন, ‘আমরা লাগাতার ৪৮ ঘণ্টা তিস্তাপাড়ে অবস্থান করবো। এখানে পালাগান, সারিগান, ভাওয়াই, লালন, লোকসংগীত ও গ্রামীণ খেলাধুলা হা-ডু-ডু, ঘুড়ি উড়ানো, গোল্লাছুট ও দৌড় প্রতিযোগিতার আয়োজন করেছি। আমাদের ৪৮ ঘণ্টার লাগাতার অবস্থান কর্মসূচির পর সরকার আমাদের দাবি না মানলে আরও কর্মসূচির ডাক দেয়া হবে।’

এ দিকে তথ্যসূত্র বলছে, প্রতিবছর বর্ষাকালে উজানে ভারতের পানিতে এ অঞ্চলের মানুষকে ভয়াবহ বন্যার কবলে পড়তে হয়। শুষ্ক মৌসুমে উজানে ভারত একতরফাভাবে তিস্তার পানি আটকে রাখে। এতে তিস্তার বুকে সেচের পানি পাওয়া যায় না। এ সময় তিস্তা শুকিয়ে মরা নদীতে পরিণত হয়। কর্মহীন হয়ে পড়েন তিস্তার ওপর নির্ভরশীল কৃষক, জেলে ও মাঝি।

Tag :
About Author Information

জনপ্রিয়

শার্শায় সড়ক দুর্ঘটনায় নিহত ১ আহত ৭

জাগো বাহে তিস্তা বাঁচাই’ স্লোগানে উত্তাল তিস্তা এলাকা

প্রকাশের সময়ঃ ০৪:৪১:০৩ অপরাহ্ন, সোমবার, ১৭ ফেব্রুয়ারী ২০২৫

 

সহিদুল ইসলাম লালমনিরহাট প্রতিনিধি: রংপুর বিভাগের ৫ জেলায় তিস্তা চুক্তি ও তিস্তা মহাপরিকল্পনা বাস্তবায়নের দাবিতে টানা ৪৮ ঘণ্টার কর্মসূচিতে তিস্তা পাড়ের ১৩০ কিলোমিটার এলাকা জুড়ে জাগো বাহে-তিস্তা বাঁচাই’ স্লোগানে স্লোগানে মুখরিত হয়ে উঠেছে।

সোমবার(১৭ফেব্রুয়ারি) টানা ৪৮ ঘণ্টার এ কর্মসূচির উদ্বোধন করেন বিএনপি’র মহাসচিব মির্জা ফখরুল ইসলাম আলমগীর ।

সমাবেশস্থল গুলো্ হচ্ছে, রংপুর-লালমনিরহাটের সংযোগস্থল তিস্তা রেলসেতু এলাকা,নীলফামারী তিস্তা ব্যারেজ এলাকা,হাতিবান্ধা উপজেলার তিস্তা ব্যারেজের এলাকা, মহিপুর সড়ক সেতু এলাকা ,মহিষখোচা এলাকা, গঙ্গাচড়া মহিপুর সড়ক সেতু এলাকা, কাউনিয়া তিস্তা রেল সেতু এলাকা,রাজারহাট সরিষাবাড়ী, ঘড়িয়াল ডাঙ্গা এলাকা, উলিপুর পাকার মাথা, থেতরাই এলাকা, এবং সুন্দরগঞ্জ হরিপুর সেতু এলাকা।

সকাল থেকেই তিস্তা বাঁচাও আন্দোলনের কর্মসূচিতে যোগ দিতে লাখো মানুষের ঢল নেমেছে সমাবেশস্থল গুলোতে।
সরেজমিনে গিয়ে দেখা যায়, মূল সমাবেশ দুপুর ২টা থেকে শুরু হয়েছে। টানা ৪৮ ঘণ্টা পর্যন্ত কর্মসূচি চলবে। এর মাধ্যমে তিস্তাপাড়ের মানুষকে ঐক্যবদ্ধ করে সরকারকে দাবি বাস্তবায়নে চাপ দেওয়াসহ বিশ্ব পরিমণ্ডলে তিস্তার দুঃখ তুলে ধরা হবে বলে জানিয়েছেন আয়োজকরা। এরইমধ্যে মঞ্চের সামনে শিক্ষার্থী, কৃষক, মৎস্যজীবী, পরিবেশকর্মী, শিক্ষক, চিকিৎসক থেকে শুরু করে বিভিন্ন পেশাজীবী সংগঠনের সদস্যরা এক কাতারে শামিল হয়েছেন তিস্তা রক্ষার দাবিতে। সমাবেশে অংশগ্রহণকারীদের চোখে-মুখে ক্ষোভ আর আশার ছাপ। একদিকে নদী মৃত্যুর প্রহর গুণছে, অন্যদিকে এরই মধ্যে জেগে উঠেছে জনতার অদম্য সংহতি।

সমাবেশে আসা কৃষকরা বলছেন, একসময় এই নদীই ছিল তাদের জীবন জীবিকার একমাত্র উৎস। এখন বালু আর পাথর ছাড়া কিছুই নেই নদীতে। দুই ফসলি জমি এখন মরুভূমি। আবার যখন পানি আসে, বাড়ি ঘর ছাড়তে হয় তাদের।

এ বিষয়ে ,বিএনপি’র জাতীয় নির্বাহী কমিটির সাংগঠনিক সম্পাদক,জেলা বিএনপির সভাপতি সাবেক উপমন্ত্রী ও তিস্তা নদী রক্ষা আন্দোলন কমিটির প্রধান সমন্বয়কারী আসাদুল হাবিব দুলু বলেন, ‘সোমবার সকাল থেকে রংপুর অঞ্চলের লাখো মানুষ তিস্তাপাড়ে জড়ো হয়েছেন। তিস্তার পানির ন্যায্য হিস্যা ও তিস্তা মহাপরিকল্পনা বাস্তবায়ন হলো জন আকাঙ্ক্ষার দাবি। এ কারণে এ অঞ্চলের মানুষ ঘরে বসে নেই। তারা নিজ দায়িত্বে তিস্তাপাড়ে জড়ো হয়ে অবস্থান কর্মসূচি পালন করছেন।’

তিনি আরও বলেন, ‘আমরা লাগাতার ৪৮ ঘণ্টা তিস্তাপাড়ে অবস্থান করবো। এখানে পালাগান, সারিগান, ভাওয়াই, লালন, লোকসংগীত ও গ্রামীণ খেলাধুলা হা-ডু-ডু, ঘুড়ি উড়ানো, গোল্লাছুট ও দৌড় প্রতিযোগিতার আয়োজন করেছি। আমাদের ৪৮ ঘণ্টার লাগাতার অবস্থান কর্মসূচির পর সরকার আমাদের দাবি না মানলে আরও কর্মসূচির ডাক দেয়া হবে।’

এ দিকে তথ্যসূত্র বলছে, প্রতিবছর বর্ষাকালে উজানে ভারতের পানিতে এ অঞ্চলের মানুষকে ভয়াবহ বন্যার কবলে পড়তে হয়। শুষ্ক মৌসুমে উজানে ভারত একতরফাভাবে তিস্তার পানি আটকে রাখে। এতে তিস্তার বুকে সেচের পানি পাওয়া যায় না। এ সময় তিস্তা শুকিয়ে মরা নদীতে পরিণত হয়। কর্মহীন হয়ে পড়েন তিস্তার ওপর নির্ভরশীল কৃষক, জেলে ও মাঝি।