রাউফুর রহমান পরাগঃ সাভার ও আশুলিয়াতে একাধিক চক্র সামাজিক যোগাযোগ মাধ্যম ফেসবুকে কয়েকটি ভুয়া আইডি খুলে প্রতারণা অব্যাহত রেখেছে। লোকজনকে হয়রানির উদ্দেশ্যে নাম সর্বস্ব আইডি থেকে বিভিন্ন জনের নামে অপপ্রচার ও কুৎসা রটানো এদের নিয়মিত কাজে পরিণত হয়েছে। এসব ভুয়া আইডির সঙ্গে জড়িত অনেকে থানার দালালি এবং মামলা বাণিজ্যে জড়িত। এই প্রতারক চক্র বিভিন্ন জনের নামে অপপ্রচার চালিয়ে তাদের কাছ থেকে অর্থ হাতানো এদের উদ্দেশ্য। এই চক্রের সদস্যরা পুলিশ ও প্রশাসনের বিরুদ্ধেও অপপ্রচার চালাতে ব্যস্ত। এছাড়াও গত ৫ই আগস্ট রাজনৈতিক পরিবর্তনের কারণে বিভিন্ন রাজনীতিবিদ ও ব্যবসায়ীদের টার্গেট করে নানারকম মিথ্যা ও বানোয়াট তথ্য দিয়ে মানহানি কর পোস্ট দিয়ে টাকা দাবি করে আসছে।
এছাড়াও সাধারণ লোকজন কেউ টার্গেট করে তাদের ছবি ব্যবহার করে উদ্দেশ্যমূলক শব্দ ব্যবহার করে ফেসবুকে পোস্ট করে আবার অন্য ভুয়া আইডি থেকে সেসবের নিচে উদ্দেশ্য মূলক কমেন্টস করা হয়। এই চক্র অনেকের কাছ থেকে লক্ষ লক্ষ টাকা হাতিয়ে নিয়েছে গত কয়েক মাসে। এমন কয়েকটি ভুয়া আইডি চিহ্নিত করে ভুক্তভোগী কয়েকজন একাধিক থানায় অভিযোগ করার পর খোঁজখবর শুরু করেছে আইনশৃঙ্খলা বাহিনী ও গোয়েন্দারা।
ফেসবুকে অপপ্রচারকারীদের অনেকে ইয়াবা ব্যবসার সঙ্গেও জড়িত বলে বিভিন্নভাবে জানা গেছে। একাধিক ব্যক্তি জানিয়েছেন, সামাজিক যোগাযোগ মাধ্যম ফেসবুকে এসব ভুয়া আইডি ব্যবহারকারীদের আয়ের বৈধ কোন উৎস নেই। তারা বিভিন্নজনকে এবং প্রতিষ্ঠিত গণমাধ্যমকর্মীদের কয়েকজনকে টার্গেট করে অপপ্রচারে লিপ্ত রয়েছে। এসব ভুয়া আইডির মধ্যে গণমাধ্যমের নাম ব্যবহার করে খোলা হয়েছে কয়েকটি। পুলিশ, প্রশাসন, রাজনৈতিক দলের নেতাকর্মী ও সচেতন মহলকে বিভ্রান্ত করতে ওইসব আইডি থেকে অপপ্রচার ছড়ানো হয় নিয়মিত। চিহ্নিত ভুয়া আইডি থেকে আইনশৃঙ্খলা বাহিনী এবং বিভিন্ন রাজনৈতিক দল উদ্দেশ্য করে বিভিন্ন জনের বিরুদ্ধে দৃষ্টি আকর্ষণ করা হয়- তাদের হয়রানির জন্য। প্রতারক ও টাউট বাটপার চক্রের অপপ্রচারের নিত্যনতুন ফন্দিফিকির টাকা হাতানোর কৌশল হিসেবে চিহ্নিত হয়েছে। এসব আইডির সঙ্গে জড়িত বেশ কয়েকজনের ব্যাপারে তথ্য পেয়েছে গোয়েন্দারা। মোবাইল ফোনের আইএমই এবং সিমকার্ড নম্বরের সূত্র ধরে শীঘ্রই আইনের আওতায় আসতে পারে এই চক্রের সদস্যরা।
তদন্ত সংশ্লিষ্টরা ফেসবুক কর্তৃপক্ষের কাছে তাদের ব্যাপারে তথ্য চেয়েছে বলে জানা গেছে। ভুক্তভোগীদের অভিযোগ, গুজব ও অপপ্রচার রটিয়ে সমাজে বিশৃঙ্খলা সৃষ্টির উদ্দেশ্যে পরিকল্পিতভাবে এসব ভুয়া আইডি ব্যবহার করা হচ্ছে। এসব আইডি পরিচালনাকরীরা আগে আওয়ামী লীগের অনেকের সঙ্গে সখ্যতা বজায় রেখে এখন বোল পাল্টে নতুন রূপ ধারণ করেছে। অনেকের সঙ্গেই আবার পলাতকদের গোপন যোগাযোগ রয়েছে। যারা পুলিশের তথ্য আদান প্রদান করছে বিকাশে প্রাপ্ত অর্থের বিনিময়। থানার আশপাশে তাদের বসবাস ও নিয়মিত আড্ডা রয়েছে। থানার কথিত রাইটারদের ঘরেও তাদের আছে আনাগোনা। মামলা ও গ্রেপ্তার বাণিজ্যে এরা ভূমিকা রাখছে। হয়রানির উদ্দেশ্যে পুলিশ দিয়ে ধরিয়ে দেওয়ার কথা বলে বিভিন্নজনের কাছ থেকে টাকা আদায় করছে এই চক্র ।
এই ব্যাপারে আশুলিয়া থানার ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা মোহাম্মদ মনিরুল হক ডাবলু সঙ্গে যোগাযোগ করলে তিনি বলেন, বিষয়টি নিয়ে আমি অবগত আছি, খুব দ্রুতই তথ্যপ্রযুক্তি ব্যবহার করে ভুয়া ফেসবুক আইডির মাধ্যমে প্রতারণা ও মানহানিকর কর্মকাণ্ডের সাথে জড়িতদের গ্রেফতার করে আইনের আওতায় আনা হবে। তিনি আরো বলেন, ভুয়া ফেসবুক আইডির মাধ্যমে প্রতারণার শিকার যে কোন ব্যক্তি অবশ্যই যেন থানায় এসে অভিযোগ করেন।
সম্পাদক ও প্রকাশকঃ ওমর ফারুক। প্রকাশক কর্তৃক বি,এস প্রিন্টিং প্রেস, ৫২/২ টয়েনবী সার্কুলার রোড , ঢাকা- ১২০৩ থেকে মুদ্রিত ও ২ আর কে মিশন রোড (৫ম তলা) থেকে প্রকাশিত।
© All rights reserved © 2017 Alokito Kantho