রাউফুর রহমান পরাগঃ আশুলিয়ায় ককটেল বিস্ফোরণ করে এক স্বর্ণ ব্যবসায়ীকে কুপিয়ে হত্যা ও স্বর্ণ লুটের ঘটনায় মামলা দায়ের হয়েছে। নিহত ব্যবসায়ী দিলীপ দাসের স্ত্রী সরস্বতী দাস বাদী হয়ে মামলাটি দায়ের করেন। এ ঘটনায় সন্দেহভাজন তিনজনকে জিজ্ঞাসাবাদের জন্য থানায় আনা হয়েছে। সোমবার (১০ মার্চ) সন্ধ্যায় এসব তথ্য নিশ্চিত করেছেন আশুলিয়া থানার পুলিশ পরিদর্শক (তদন্ত) মো. কামাল হোসেন। এর আগে, রবিবার রাত ৯টার দিকে আশুলিয়ার নয়ারহাট বাজারে এ ঘটনা ঘটে।
নিহত দিলীপ দাস (৪৮) আশুলিয়ার পাথালিয়া ইউনিয়নের গোপীনাথপুর দাসপাড়া এলাকার দুলাল দাসের ছেলে। তিনি নয়ারহাট বাজারে দিলীপ স্বর্ণালয় নামের একটি সোনার দোকানের মালিক।
আশুলিয়া থানার পুলিশ পরিদর্শক (তদন্ত) মো. কামাল হোসেন জানান, সিসিটিভি ফুটেজে দেখা গেছে, দিলীপ যখন তালাবদ্ধ করে দোকান থেকে বের হচ্ছিলেন তখন চারজন লোক এসে তাকে পেছন থেকে আঘাত করে। পরে তিনি সামনে ঘুরলে আবারও তাকে আঘাত করা হয়। তার হাতে একটি ব্যাগ ছিল। সেই ব্যাগ হামলাকারীরা ছিনিয়ে ঘটনাস্থল থেকে পালিয়ে যায়। ফুটেজে ধোঁয়া দেখা গেছে, সম্ভবত তারা ককটেলের বিস্ফোরণ ঘটিয়েছিল। এ ঘটনায় নিহত ব্যবসায়ীর স্ত্রী বাদী হয়ে মামলা দায়ের করেছেন। অপরাধীদের আইনের আওতায় আনার চেষ্টা চলছে।
প্রত্যক্ষদর্শীরা জানান, ৯টার দিকে দোকান বন্ধ করে বাড়ি যাওয়ার প্রস্তুতি নিচ্ছিলেন দিলীপ দাস। এ সময় তার স্ত্রী সেখানে উপস্থিত ছিলেন। দোকানে তালা দেওয়ার সময় দৌড়ে এসে সেখানে তিন-চারজন উপস্থিত হয়। তারা একটি ককটেলের বিস্ফোরণ ঘটিয়ে দিলীপের কাছে থাকা ব্যাগ ছিনিয়ে নেয়। বাধা দিতে গেলে দিলীপকে কুপিয়ে আহত করে। পরে তারা আরও কয়েকটি ককটেলের বিস্ফোরণ ঘটিয়ে সেখান থেকে দ্রুত চলে যায়।
দিলীপ দাসের ফুফাতো ভাই খোকন সরকার বলেন, সন্ধ্যা সাড়ে সাতটার দিকে দোকান বন্ধ করে দিলীপ বাসায় চলে গিয়েছিলেন। পরে ওষুধ কেনার জন্য স্ত্রীকে নিয়ে আবার বাজারে আসেন। এ সময় পরিচিত একজনের কাছে দোকান থেকে স্বর্ণের চেইন বিক্রি করেন। পরে দোকান বন্ধ করে শাটার নামানোর সময় তিন-চারজন দিলীপকে কুপিয়ে ব্যাগ ছিনিয়ে নেয়। ব্যাগে ১৫-২০ ভরি স্বর্ণালংকার ছিল।
দিলীপের স্ত্রী সরস্বতী দাস বলেন, বাসায় যাওয়ার জন্য দোকান বন্ধ করে টাকা ও স্বর্ণালংকার নিয়ে রওনা হয়। আমিও সাথে ছিলাম। তাকে কুপাইয়া সব নিয়ে গেছে।
বেসরকারি এনাম মেডিকেল কলেজ হাসপাতালের জরুরি বিভাগের চিকিৎসক মেরাজুর রেহান বলেন, রাত ১০টার দিকে মারাত্মক আহত অবস্থায় দিলীপ দাসকে হাসপাতালে আনা হয়। তার বুকে বড় ক্ষত ছিল। গালের ডান পাশে ও পিঠে ক্ষত ছিল। চিকিৎসা শুরুর পরপরই তিনি মারা যান। ধারণা করা হচ্ছে, অতিরিক্ত রক্তক্ষরণে তিনি মারা গেছেন। তাকে স্যালাইন দেওয়া হয়, লাইফ সাপোর্ট দেওয়া হয়, অপারেশন থিয়েটারেও নেওয়া হয়। তবে তাকে বাঁচানো সম্ভব হয়নি।
সম্পাদক ও প্রকাশকঃ ওমর ফারুক। প্রকাশক কর্তৃক বি,এস প্রিন্টিং প্রেস, ৫২/২ টয়েনবী সার্কুলার রোড , ঢাকা- ১২০৩ থেকে মুদ্রিত ও ২ আর কে মিশন রোড (৫ম তলা) থেকে প্রকাশিত।
© All rights reserved © 2017 Alokito Kantho