আলোকিত কন্ঠ ডেস্কঃ বিমসটেকের সদস্য দেশগুলোকে পারস্পরিক স্বার্থ ও সবার কল্যাণে একযোগে কাজ করার আহ্বান জানিয়েছেন বাংলাদেশের অন্তর্বতীকালীন সরকারের প্রধান উপদেষ্টা মুহাম্মদ ইউনূস।
বাসস জানায়, শুক্রবার (৪ এপ্রিল) থাইল্যান্ডের রাজধানী ব্যাংককে বঙ্গোপসাগরীয় দেশগুলোর আঞ্চলিক এ সহযোগিতা জোটের ষষ্ঠ শীর্ষ সম্মেলনে দেওয়া বক্তব্যে প্রধান উপদেষ্টা এই আহ্বান জানান।
অধ্যাপক ইউনূস বলেন, বাংলাদেশ দীর্ঘদিন ধরে উন্মুক্ত আঞ্চলিকতাবাদের স্বপ্ন লালন করে আসছে। আমরা এমন একটি অঞ্চলের স্বপ্ন দেখি, যেখানে সব দেশ ও জনগোষ্ঠী ন্যায্যতা, পারস্পরিক সম্মান, পারস্পরিক স্বার্থ ও যৌথ কল্যাণের ভিত্তিতে সম্পৃক্ত হতে পারে।
তিনি বলেন, বিমসটেক অঞ্চল বিশ্ব জনসংখ্যার এক-পঞ্চমাংশের আবাসস্থল, যেখানে বহু চ্যালেঞ্জ বিদ্যমান। এই চ্যালেঞ্জগুলোকে সম্ভাবনা হিসেবে রূপান্তর করা গেলে সব দেশের জন্য বিশাল সুযোগ সৃষ্টি হতে পারে।
আজ ব্যাংককে ড. ইউনূস-নরেন্দ্র মোদির বৈঠক
বিস্তারিত পড়ুন
সরকারপ্রধান বলেন, অনেকে আমাদের জনসংখ্যাকে একটি ‘চ্যালেঞ্জ’ হিসেবে বিবেচনা করে। অথচ, আমাদের জনগণের মধ্যে সম্ভাবনার অসংখ্য উদাহরণ রয়েছে।
ইউনূস বলেন, বিমসটেক সচিবালয় যেহেতু বাংলাদেশে, এই সংস্থার ‘বিশাল সম্ভাবনাকে অর্থবহ উপায়ে কাজে লাগাতে’ বাংলাদেশ প্রস্তুত রয়েছে।
বিমসটেক অঞ্চলের টেকসই উন্নয়ন ও অর্থনৈতিক স্থিতিশীলতার জন্য জ্বালানি নিরাপত্তা নিশ্চিবত করার ওপর জোর দেন প্রধান উপদেষ্টা।
তিনি বলেন, আমাদের যৌথভাবে নবায়নযোগ্য জ্বালানি, সীমান্ত পেরিয়ে বিদ্যুৎ বাণিজ্য এবং জ্বালানি দক্ষতা ব্যবহারে এগিয়ে আসতে হবে, যাতে আমাদের জনগণের জন্য একটি নিরাপদ ও টেকসই ভবিষ্যৎ নিশ্চিত করা যায়।
২০১৮ সালে স্বাক্ষরিত ‘বিমসটেক গ্রিড ইন্টারকানেকশন চুক্তি’ জ্বালানি খাতে সহযোগিতার সূচনা পর্ব হতে পারে বলেও মত প্রকাশ করেন ইউনূস।
তিনি বলেন, আমরা আমাদের বিমসটেক অঙ্গীকার অনুযায়ী কানেক্টিভিটি বাড়াতে, পারস্পরিক বাণিজ্য ও অর্থনৈতিক সহযোগিতা প্রসারে প্রতিশ্রুতিবদ্ধ।
বাণিজ্য ও বিনিয়োগের প্রসার, বিশেষ করে তরুণ প্রজন্মের মধ্যে আন্তঃসীমান্ত যাতায়াত সহজ করাকে বিমসটেক অঞ্চলের বাসিন্দাদের ‘কল্যাণের মূল চাবিকাঠি’ হিসেবে বর্ণনা করেন ইউনূস।
বিমসটেক শীর্ষ সম্মেলনে প্রধান উপদেষ্টা
যত দ্রুত সম্ভব নির্বাচন আয়োজন করা সরকারের সর্বোচ্চ অগ্রাধিকার
বিস্তারিত পড়ুন
প্রধান উপদেষ্টা বলেন, বর্তমানে এ অঞ্চলের আন্তঃবাণিজ্য মাত্র ৫ দশমিক ৯ শতাংশ। বাণিজ্য, বিনিয়োগ ও উন্নয়ন খাতের নেতৃত্বদানকারী দেশ হিসেবে বাংলাদেশ ২০০৪ সালে স্বাক্ষরিত ‘বিমসটেক এফটিএ চুক্তি’ বাস্তবায়নের জন্য সকলকে আহ্বান জানিয়েছে, যা শেষ পর্যন্ত কানেক্টিভিটি বাড়াতে অবদান রাখবে।
পঞ্চম বিমসটেক শীর্ষ সম্মেলনে গৃহীত ‘পরিবহন কানেক্টিভিটি মাস্টার প্ল্যান’-এর বাস্তবায়নের ওপরও জোর দেন তিনি ।
ইউনূস বলেন, কিছু দেশ দ্বিপক্ষীয়ভাবে অনেক কিছু অর্জন করেছে। তবে আঞ্চলিক অর্থনৈতিক একত্রীকরণ ও উন্নয়নের সুফল পেতে হলে যৌথ আঞ্চলিক উদ্যোগগুলো বাস্তবায়ন করতে হবে।
বাংলাদেশ এই মাস্টার প্ল্যান বাস্তবায়নে সর্বাত্মক সহযোগিতা দিতে প্রস্তুত বলে প্রতিশ্রুতি দেন তিনি।
প্রধান উপদেষ্টা বলেন, বৃহস্পতিবার (৩ এপ্রিল) স্বাক্ষরিত ‘বিমসটেক সামুদ্রিক পরিবহন সহযোগিতা চুক্তি’ বিমসটেক অঞ্চলে, বিশেষ করে ভূমিবেষ্টিত দেশ ও ভারতের সাত রাজ্যের সঙ্গে কানেক্টিভিটি বাড়াতে গুরুত্বপূর্ণ ভূমিকা রাখতে পারে।
বিমসটেক ২৮ বছরের সংস্থা, তবে সত্যিকার অর্থে বলতে গেলে এর প্রভাব এখনো সব সদস্য দেশে স্পষ্টভাবে অনুভূত হয়নি, বলেন তিনি।
ইউনূস বলেন, সনদে স্বাক্ষর ও অনুমোদন এবং প্রাসঙ্গিক কার্যপ্রণালী প্রণয়নের মাধ্যমে বিমসটেক প্রক্রিয়া ও প্রতিষ্ঠানগুলো উল্লেখযোগ্য শক্তি অর্জন করেছে।
আমাদের বেসরকারি খাত ও নাগরিক সমাজ বিশেষভাবে চায় বিমসটেক কার্যকর, ফলপ্রসূ ও প্রকল্পভিত্তিক উদ্যোগ গ্রহণ করুক।
সম্পাদক ও প্রকাশকঃ ওমর ফারুক। প্রকাশক কর্তৃক বি,এস প্রিন্টিং প্রেস, ৫২/২ টয়েনবী সার্কুলার রোড , ঢাকা- ১২০৩ থেকে মুদ্রিত ও ২ আর কে মিশন রোড (৫ম তলা) থেকে প্রকাশিত।
© All rights reserved © 2017 Alokito Kantho