
বেনাপোল (যশোর) প্রতিনিধিঃ পবিত্র ঈদুল ফিতরের আগেরদিন রাত ১০ টার দিকে পরিকল্পিতভাবে জামাল হোসেন (২৫) কে পিটিয়ে হত্যা করা হয়েছে এমনই ইনক্লুসিভ রহস্য উদঘাটন করেছেন পুলিশ।
হত্যাকান্ডের পরদিন সকালে নিহত জামাল হোসেনের পিতা আয়ুব হোসেন বাদী হয়ে ৬ জনের নাম উল্লেখ করে এবং আরোও বেশ কয়েকজনকে অজ্ঞাতনামা আসামি করে শার্শা থানায় একটি হত্যা মামলা দায়ের করেন।
শুক্রবার (৪ এপ্রিল) দুপুর ১২ টার সময় শার্শা থানার কনফারেন্স রুমে গণমাধ্যম কর্মীদের এ তথ্য নিশ্চিত করেন, সহকারি পুলিশ সুপার (নাভারণ সার্কেল) নিশাত আল নাহিয়ান।
এসময় তিনি বলেন, মাদক বাহন ও মাদক ব্যবসার দ্বন্দ্বের জেরে জামাল হোসেনকে বাড়ি থেকে ডেকে নিয়ে কয়েকজন মিলে কৌশলে পিটিয়ে হত্যা হয়েছে। পরবর্তীতে হত্যার ঘটনা ধামাচাপা দিতে জামাল হোসেন সড়ক দুর্ঘটনার মারা গেছে এমন নাটক সাজায় ওই হত্যাকারীরা।
চাঞ্চল্য এই হত্যার ঘটনায় শার্শা উপজেলার উত্তর বারপোতা গ্রামের মৃত তবিবর রহমানের ছেলে আমানত উল্লাহ ও পার্শ্ববর্তী কলারোয়া উপজেলার কাদপুর গ্রামের আলী হোসেন খাঁর ছেলে জাহিদ হোসেনকে গ্রেফতার করেছে পুলিশ।
সহকারী পুলিশ সুপার (নাভারণ সার্কেল) নিশাত আল নাহিয়ান প্রেস ব্রিফিং এর মাধ্যমে আরো জানান, তথ্যপ্রযুক্তির মাধ্যমে তদন্তকালে আসামি আমানত উল্লাহ ও জাহিদ হোসেনকে আটকের পর প্রাথমিক জিজ্ঞাসাবাদে তারা স্বীকার করে ঈদের আগের দিন সন্ধ্যায় জাহিদ হোসেন ভিকটিম মৃত জামাল হোসেনের বাড়িতে এসে মিন্টুর বাড়িতে ডেকে নিয়ে যায়। সেখান থেকে ভিকটিম জামাল হেসেন ও আসামি জাহিদ হোসেন একসাথে মিন্টুর মোটরসাইকেল নিয়ে শার্শা থানা এলাকায় বেড়াতে যায়। পরবর্তীতে রাত ১০ টার দিকে জামাল হোসেন ও জাহিদ হোসেন জনৈক শফির ভাটা সংলগ্ন পাকা রাস্তার উপর পৌঁছালে পূর্ব পরিকল্পনা মোতাবেক উপজেলার শিবনাথপুর (বিলপাড়া) গ্রামের আনসার আলীর ছেলে জাহিদুল (৩৫) এবং উত্তর বারপোতা গ্রামের মৃত তবিবুর রহমান তবির ছেলে আলাউদ্দিন (২৫) মৃত গোলাম রসুলের ছেলে হাফিজুর (৪০) মৃত তবিবর রহমানের ছেলে আমানত উল্লাহ (২৫) মৃত গোলাম রসুলের ছেলে বিল্লাল হোসেন (৩৩) ও খালেকের ছেলে জুম্মান (২৪) সহ অজ্ঞাতনামা আরো কয়েকজন হাতে কাঠের চলা, রামদা নিয়ে ভিকটিম জামাল হোসেনের মোটরসাইকেল গতিরোধ করতে সংকেত দেয়। তখন ভয়ে জামাল হোসেন মোটরসাইকেল দ্রুত চালিয়ে পালিয়ে যাওয়ার চেষ্টা করে। এসময় জাহিদুল নামে এক যুবক কাঠের চলা দিয়ে ভিকটিমের মাথায় আঘাত করলে মোটরসাইকেল নিয়ন্ত্রণ হারিয়ে রাস্তার পাশে একটি গর্তে পড়ে গুরুতর আহত হয়। সেই সুযোগে অন্যরা তাদের হাতে থাকা কাঠের চলা দিয়ে ভিকটিমকে পিটিয়ে মৃত্যু নিশ্চিত করে সকলে পালিয়ে যায়।
উল্লেখ্য: গত ৩০ মার্চ রাত ১১ টার দিকে উপজেলার গোগা ইউনিয়নের ইছাপুর গ্রামের জৈনক শফির ভাটার পাশ থেকে পুলিশ জামাল হোসেন (২৫) এর লাশ উদ্ধার করে। সে সাতক্ষীরা জেলার কলারোয়া উপজেলার কাদপুর এলাকার আয়ুব হোসেনের ছেলে।