০৯:০৯ অপরাহ্ন, মঙ্গলবার, ২৪ জুন ২০২৫, ১০ আষাঢ় ১৪৩২ বঙ্গাব্দ

চীনের দেওয়া হাসপাতাল নিলফামারীর ডিমলায় স্থাপনের দাবি নদীভাঙন এলাকার মানুষের

  • Reporter Name
  • প্রকাশের সময়ঃ ০৭:৩০:০২ অপরাহ্ন, বুধবার, ১৬ এপ্রিল ২০২৫
  • ১১৪ বার পড়া হয়েছে

সহিদুল ইসলাম, বিভাগীয় প্রতিনিধি রংপুর: চীন-বাংলাদেশ কূটনৈতিক সম্পর্কের ৫০ বছরপূর্তিতে চীন সরকারের উপহার হিসেবে ঘোষিত ১ হাজার শয্যার অত্যাধুনিক হাসপাতালটি নীলফামারীর ডিমলায় স্থাপনের দাবিতে সরব হয়ে উঠেছেন নদীভাঙন কবলিত সর্বস্তরের মানুষজন।

সম্প্রতি রাজধানীর ফরেন সার্ভিস অ্যাকাডেমিতে অনুষ্ঠিত এক সংবাদ সম্মেলনে স্বাস্থ্য ও পরিবার কল্যাণ মন্ত্রণালয়ের উপদেষ্টা নূরজাহান বেগম জানান, তিস্তা প্রকল্প এলাকার নিকটবর্তী স্থানে হাসপাতালটি নির্মাণের পরিকল্পনা রয়েছে।

এ প্রসঙ্গে স্বাস্থ্য অধিদপ্তরের মহাপরিচালক জানান, হাসপাতাল নির্মাণের জন্য তিস্তা প্রকল্প সংলগ্ন অঞ্চলে কমপক্ষে ১২ একর জায়গা খোঁজা হচ্ছে। সম্ভাব্য স্থান হিসেবে নীলফামারী, রংপুর ও দিনাজপুরের মাঝামাঝি অঞ্চল বিবেচনায় রয়েছে। প্রাথমিকভাবে নীলফামারীতে একটি জায়গা চিহ্নিত করা হয়েছে। সেটির সম্ভাব্যতা যাচাইয়ের জন্য একটি সমীক্ষা পরিচালনার কথা জানানো হয়।

তিস্তা মহাপরিকল্পনার নিকটবর্তী হওয়ায় নীলফামারীর ডিমলায় হাসপাতাল নির্মাণের সম্ভাবনাকে সাধুবাদ জানিয়েছেন স্থানীয় বাসিন্দারা। তাদের মতে, এ অঞ্চলের মানুষ বহুদিন ধরে উন্নত স্বাস্থ্যসেবার ঘাটতির শিকার। জটিল ও কঠিন রোগের ক্ষেত্রে রংপুর বা ঢাকায় গিয়ে চিকিৎসা করানো অধিকাংশ মানুষের পক্ষে কষ্টসাধ্য ও ব্যয়বহুল। এ প্রেক্ষাপটে চীন সরকারের দেওয়া ১ হাজার শয্যার হাসপাতালটি ডিমলার মানুষের জন্য আশার আলো জাগাচ্ছে।

ডিমলার বাসিন্দারা আরও জানান, নীলফামারীর ডালিয়ায় পানি উন্নয়ন বোর্ডের (পাউবো) অধীনে ডিমলা উপজেলায় হাজার একরেরও বেশি পতিত খাসজমি রয়েছে। এ জমিতে হাসপাতালের পাশাপাশি নার্সিং ইনস্টিটিউট, মেডিকেল কলেজ, রিসার্চ সেন্টার, হেলিপ্যাড ও অ্যাম্বুলেন্স লেন স্থাপন করা সম্ভব। জমি অধিগ্রহণের প্রয়োজন না হওয়ায় এটি দ্রুত বাস্তবায়নযোগ্য একটি স্থান।

ভৌগোলিক অবস্থানের দিক থেকেও ডিমলা একটি অত্যন্ত সুবিধাজনক স্থানে অবস্থিত। নীলফামারী, লালমনিরহাট ও কুড়িগ্রামের সংযোগস্থলে হওয়ায় এ এলাকায় একটি হাসপাতাল স্থাপিত হলে তিন জেলার বিপুল সংখ্যক মানুষ উন্নত স্বাস্থ্যসেবার আওতায় আসবে।
ফলে রোগীদের চিকিৎসা গ্রহণে তুলনামূলকভাবে কম দূরত্ব অতিক্রম করতে হবে, যা সময় ও অর্থ দুটোরই সাশ্রয় ঘটাবে এবং জরুরি স্বাস্থ্যসেবা প্রাপ্তি সহজ করবে।

পতিত খাসজমিকে সঠিকভাবে কাজে লাগিয়ে যদি এখানে একটি সমন্বিত স্বাস্থ্যসেবা কেন্দ্র গড়ে তোলা যায়। তবে তা শুধু ডিমলায়ই নয়, সমগ্র উত্তরাঞ্চলের মানুষের জন্য স্বাস্থ্যখাতে এক নতুন দিগন্ত উন্মোচন করবে।

ইতোমধ্যে নীলফামারীর সচেতন মহল, সুশীল সমাজ, নাগরিক প্রতিনিধি, বিভিন্ন সামাজিক ও সাংস্কৃতিক সংগঠন এবং স্থানীয় জনপ্রতিনিধিরা একযোগে এ হাসপাতালটি নীলফামারীতে স্থাপনের পক্ষে দৃঢ় অবস্থান প্রকাশ করেছেন। তারা বলছেন, নীলফামারী জেলার ভৌগোলিক অবস্থান ও তিস্তা মহাপরিকল্পনার নিকটবর্তী হওয়ায় এখানে হাসপাতালটি স্থাপন করা হলে শুধু নীলফামারী নয়, পার্শ্ববর্তী জেলাগুলোর মানুষও উন্নত স্বাস্থ্যসেবার সুযোগ পাবেন।

Tag :
About Author Information

জনপ্রিয়

শার্শায় সড়ক দুর্ঘটনায় নিহত ১ আহত ৭

চীনের দেওয়া হাসপাতাল নিলফামারীর ডিমলায় স্থাপনের দাবি নদীভাঙন এলাকার মানুষের

প্রকাশের সময়ঃ ০৭:৩০:০২ অপরাহ্ন, বুধবার, ১৬ এপ্রিল ২০২৫

সহিদুল ইসলাম, বিভাগীয় প্রতিনিধি রংপুর: চীন-বাংলাদেশ কূটনৈতিক সম্পর্কের ৫০ বছরপূর্তিতে চীন সরকারের উপহার হিসেবে ঘোষিত ১ হাজার শয্যার অত্যাধুনিক হাসপাতালটি নীলফামারীর ডিমলায় স্থাপনের দাবিতে সরব হয়ে উঠেছেন নদীভাঙন কবলিত সর্বস্তরের মানুষজন।

সম্প্রতি রাজধানীর ফরেন সার্ভিস অ্যাকাডেমিতে অনুষ্ঠিত এক সংবাদ সম্মেলনে স্বাস্থ্য ও পরিবার কল্যাণ মন্ত্রণালয়ের উপদেষ্টা নূরজাহান বেগম জানান, তিস্তা প্রকল্প এলাকার নিকটবর্তী স্থানে হাসপাতালটি নির্মাণের পরিকল্পনা রয়েছে।

এ প্রসঙ্গে স্বাস্থ্য অধিদপ্তরের মহাপরিচালক জানান, হাসপাতাল নির্মাণের জন্য তিস্তা প্রকল্প সংলগ্ন অঞ্চলে কমপক্ষে ১২ একর জায়গা খোঁজা হচ্ছে। সম্ভাব্য স্থান হিসেবে নীলফামারী, রংপুর ও দিনাজপুরের মাঝামাঝি অঞ্চল বিবেচনায় রয়েছে। প্রাথমিকভাবে নীলফামারীতে একটি জায়গা চিহ্নিত করা হয়েছে। সেটির সম্ভাব্যতা যাচাইয়ের জন্য একটি সমীক্ষা পরিচালনার কথা জানানো হয়।

তিস্তা মহাপরিকল্পনার নিকটবর্তী হওয়ায় নীলফামারীর ডিমলায় হাসপাতাল নির্মাণের সম্ভাবনাকে সাধুবাদ জানিয়েছেন স্থানীয় বাসিন্দারা। তাদের মতে, এ অঞ্চলের মানুষ বহুদিন ধরে উন্নত স্বাস্থ্যসেবার ঘাটতির শিকার। জটিল ও কঠিন রোগের ক্ষেত্রে রংপুর বা ঢাকায় গিয়ে চিকিৎসা করানো অধিকাংশ মানুষের পক্ষে কষ্টসাধ্য ও ব্যয়বহুল। এ প্রেক্ষাপটে চীন সরকারের দেওয়া ১ হাজার শয্যার হাসপাতালটি ডিমলার মানুষের জন্য আশার আলো জাগাচ্ছে।

ডিমলার বাসিন্দারা আরও জানান, নীলফামারীর ডালিয়ায় পানি উন্নয়ন বোর্ডের (পাউবো) অধীনে ডিমলা উপজেলায় হাজার একরেরও বেশি পতিত খাসজমি রয়েছে। এ জমিতে হাসপাতালের পাশাপাশি নার্সিং ইনস্টিটিউট, মেডিকেল কলেজ, রিসার্চ সেন্টার, হেলিপ্যাড ও অ্যাম্বুলেন্স লেন স্থাপন করা সম্ভব। জমি অধিগ্রহণের প্রয়োজন না হওয়ায় এটি দ্রুত বাস্তবায়নযোগ্য একটি স্থান।

ভৌগোলিক অবস্থানের দিক থেকেও ডিমলা একটি অত্যন্ত সুবিধাজনক স্থানে অবস্থিত। নীলফামারী, লালমনিরহাট ও কুড়িগ্রামের সংযোগস্থলে হওয়ায় এ এলাকায় একটি হাসপাতাল স্থাপিত হলে তিন জেলার বিপুল সংখ্যক মানুষ উন্নত স্বাস্থ্যসেবার আওতায় আসবে।
ফলে রোগীদের চিকিৎসা গ্রহণে তুলনামূলকভাবে কম দূরত্ব অতিক্রম করতে হবে, যা সময় ও অর্থ দুটোরই সাশ্রয় ঘটাবে এবং জরুরি স্বাস্থ্যসেবা প্রাপ্তি সহজ করবে।

পতিত খাসজমিকে সঠিকভাবে কাজে লাগিয়ে যদি এখানে একটি সমন্বিত স্বাস্থ্যসেবা কেন্দ্র গড়ে তোলা যায়। তবে তা শুধু ডিমলায়ই নয়, সমগ্র উত্তরাঞ্চলের মানুষের জন্য স্বাস্থ্যখাতে এক নতুন দিগন্ত উন্মোচন করবে।

ইতোমধ্যে নীলফামারীর সচেতন মহল, সুশীল সমাজ, নাগরিক প্রতিনিধি, বিভিন্ন সামাজিক ও সাংস্কৃতিক সংগঠন এবং স্থানীয় জনপ্রতিনিধিরা একযোগে এ হাসপাতালটি নীলফামারীতে স্থাপনের পক্ষে দৃঢ় অবস্থান প্রকাশ করেছেন। তারা বলছেন, নীলফামারী জেলার ভৌগোলিক অবস্থান ও তিস্তা মহাপরিকল্পনার নিকটবর্তী হওয়ায় এখানে হাসপাতালটি স্থাপন করা হলে শুধু নীলফামারী নয়, পার্শ্ববর্তী জেলাগুলোর মানুষও উন্নত স্বাস্থ্যসেবার সুযোগ পাবেন।