জাবি প্রতিনিধিঃ জাহাঙ্গীরনগর বিশ্ববিদ্যালয়ের(জাবি) ছাত্রদলের বিনামূল্যে ভ্যাকসিন প্রদান কর্মসূচির অনিয়ম নিয়ে সংবাদ প্রকাশের জেরে জাগো নিউজ 24.কম এর জাবি প্রতিনিধি সৈকত ইসলামকে হুমকি প্রদান ও ছাত্রদলের প্রেস বিজ্ঞপ্তিতে সাংবাদিকদের প্রতি আপত্তিকর শব্দ ব্যবহারের প্রতিবাদে মানববন্ধন করেছে জাহাঙ্গীরনগর বিশ্ববিদ্যালযয়ের সাংবাদিকবৃন্দ।
আজ রবিবার (২৭ এপ্রিল) জাহাঙ্গীরনগর বিশ্ববিদ্যালয়ের শহীদ মিনার সংলগ্ন প্রধান সড়কে দুপুরে ১ ঘটিকায় মানববন্ধন করেন তারা। শহীদ মিনার সংলগ্ন প্রধান সড়কের সামনে অর্ধশতাধিক সাংবাদিকবৃন্দ ও সাধারণ শিক্ষার্থীরা মানববন্ধন করেন। জাহাঙ্গীরনগর বিশ্ববিদ্যালয় সাংবাদিক সমিতির সাধারণ সম্পাদক আব্দুল্লাহ আল মামুনের সঞ্চালনায় বক্তারা বক্তৃতা রাখেন।
তিনি বলেন, ২৪ এর আন্দোলনে ও জাবিসাসের অগ্রণী ভূমিকা পালন করেছে সেটা অনস্বীকার্য। আমরা ২৪ এর পরে ভেবেছিলাম স্বৈরাচারের সময় আমরা যে হুমকি ধামকি, হামলা মামলা মধ্য দিয়ে পার করেছি, সেখান থেকে মুক্তি পাবো কিন্তু আবারো স্বৈরাচার মাথাচাড়া দিয়ে উঠেছে। আমাদের এক সাংবাদিক নিউজ করায় ফলে তাকে ফেসবুকের মাধ্যমে কেউ হুমকি দেওয়া হচ্ছে। একই সাথে ছাত্রদলের কেন্দ্রীয় সংসদ থেকে বিবৃতি দেওয়া হয়েছে তা আপত্তিকর তারা আমাদেরকে একটি কুচক্রী মহল দ্বারা আমরা পরিচালিত হয় বলতে চাচ্ছেন এই ঘটনায় আমরা প্রতিবাদ জানাচ্ছি এবং মানববন্ধন করছি।
জার্নালিজম এন্ড মিডিয়া স্টাডিজ বিভাগের ৪৯তম আবর্তনের শিক্ষার্থী আতাবুজ্জামান ফরহাদ বলেন, ছাত্রদলকে মনে করিয়ে দিতে চাই গত ১৬ বছরে যখন আপনারা ক্যাম্পাসের ত্রিসীমানায় ঢুকতে পারতেন না। তখন ছাত্রলীগের বিরুদ্ধে একমাত্র যুদ্ধ করেছে এই সাংবাদিকরাই। যে যুদ্ধ ছিল কলমের, যুদ্ধ ছিল কিবোর্ডের যখন আপনারা বিশমাইল গেটে প্রান্তিক গেটে, দুই মিনিটের একটা ঝটিকা মিছিল করে দৌড় দিতেন সেসব হয়তো ভুলে গেছেন। আমরা দেখেছি স্বৈরাচারের সময় কিভাবে আমাদের বাকরুদ্ধ করা হতো। জুলাই আগস্ট এর গণঅভ্যুত্থানের পরে প্রত্যাশা করিনি আজকে একজন সাংবাদিককে নিউজ প্রকাশের কারণে তাকে হেনস্তা হতে হবে। আমরা এই ঘটনার তীব্র নিন্দা ও প্রতিবাদ জানাই। ছাত্রদলের যদি আত্মসম্মান থাকে তাহলে তারা যে বিবৃতি দিয়ে এটা করেছে সেই বিবৃতির মাধ্যমে তাদের ক্ষমাপ্রার্থনা করা উচিত।
জাহাঙ্গীরনগর বিশ্ববিদ্যালয় সাংবাদিক সমিতির সভাপতি মেহেদী মামুন বলেন, সারা বাংলাদেশে জুলাই আন্দোলনের মাধ্যমে যে নতুন পরিবেশের সৃষ্টি হয়েছে সেই পরিবেশ সৃষ্টির জন্য সারা বাংলাদেশে প্রথম গুলির মুখে পড়েছে জাহাঙ্গীরনগর বিশ্ববিদ্যালয় আমার সহকর্মীরা। সেই সহকর্মীদের উপর আজকে যখন হুমকি ও মানসিকভাবে নিপীড়ন করা হয় যেটা দেখে আমাদের মানববন্ধনে দাঁড়াতে হয়, আন্দোলন করে প্রতিবাদ জানাতে হয়, আমাদের উপর যে ভাষিক নিপীকরণ করা হয়েছে তার প্রতিবাদে আমাদের সড়কে এসে দাঁড়াতে হয়েছে। আজকে যারা নিপীড়ন করেছে, ভ্যাকসিন কেলেঙ্কারিতে যুক্ত হয়েছে জাহাঙ্গীরনগর বিশ্ববিদ্যালয়কে কলঙ্কিত অধ্যায় প্রবেশ করার চেষ্টা করেছে তাদের আপনারা কখনোই পাশে পাবেন না। আপনারা ভুলে যাবেন না গত ১৬ বছরে সাগর রুনিসহ শত শত সাংবাদিক তাদের জীবন বিলিয়ে দিয়েছে। গত ১৫ জুলাই দিবাগত রাতে যেদিন প্রথম গুলি করা হয় সেদিন আমার কিছু সহকর্মী আমাকে বলেছিল যে, আজকের সাংবাদিকতা করার সময় নয় আজকে জীবন বাঁচানোর সময় আমি শুধু এ কথা বলেছিলাম জাহাঙ্গীরনগর বিশ্ববিদ্যালয়ের আমার সম্মানিত শিক্ষক ও শিক্ষার্থী বন্ধুরা বন্দুকের মুখে তখন কি করে আমি নীরব থাকতে পারি, চুপ থাকতে পারি। সেদিন আমাদের দাঁড়াতে হয়েছিল আপনারা ভুলে যাবেন না। ১৯৭২ সালের পর থেকে আজ পর্যন্ত জাবিসাস কোন পাওয়ার বা রক্তচক্ষুকে ভয় করেনি আমাদের বক্তব্য সুস্পষ্ট আপনারা জাবির ভ্যাকসিন কেলেঙ্কারিতে যে বক্তব্য কেন্দ্রীয় ছাত্রদলের প্যাডে প্রকাশ করেছেন সেটি অত্যন্ত নিন্দনীয়। আমরা পাঁচই আগস্ট পরবর্তী সময় অত্যন্ত হতাশ ও মর্মাহত হয়েছি আপনাদের যে শব্দ চয়ন সেটি কোনভাবেই গণতান্ত্রিক সভ্য সমাজের সাথে যায় না। অবিলম্বে আপনাদের এই প্রেস বিজ্ঞপ্তি প্রত্যাহার করে ক্ষমা চাইতে হবে অন্যথায় আজকের কর্মসূচি জাহাঙ্গীরনগর বিশ্ববিদ্যালয় হয়েছে ভবিষ্যতে কর্মসূচি শাহবাগে হবে, প্রয়োজনে সারা বাংলাদেশে হবে, প্রতিটি ক্যাম্পাসে হবে।