০৮:০৩ পূর্বাহ্ন, শনিবার, ২৪ মে ২০২৫, ১০ জ্যৈষ্ঠ ১৪৩২ বঙ্গাব্দ

কুড়িগ্রামে বাসর রাতেই স্ত্রী বিধবা

  • Reporter Name
  • প্রকাশের সময়ঃ ০৫:১২:৫৭ অপরাহ্ন, শনিবার, ৩ মে ২০২৫
  • ৬৮ বার পড়া হয়েছে

সহিদুল ইসলাম বিভাগীয় প্রতিনিধি রংপুর: কুড়িগ্রামের ফুলবাড়ীতে ফুলশয্যা রাতে খালেকুজ্জামান ডিউট নামে এক বরের মৃত্যু হয়েছে। ডিউট পেশায় একজন প্রাথমিক বিদ্যালয়ের প্রধান শিক্ষক চিলেন। এটি তার দ্বিতীয় বিয়ে ছিল। এঘটনায় বাকরুদ্ধ হয়ে পড়েন নববধূ লাভনী আক্তার (২০)।বাকরুদ্ধ হয়ে ফুলশয্যা রাতেই বরের মরদেহের পাশে বসে অপলক দৃষ্টিতে চাপা কষ্টের ছাপ নিয়ে অশ্রুসিক্ত নয়নে তাকিয়ে নববধূ তার জীবনের স্মরনীয় রাতটি কাটিয়ে দেন। শুক্রবার বিকালে মেহেদী মাখা হাত, পড়নে লাল শাড়ি ও অশ্রু ভেজা চোখের অপলক দৃষ্টিতে শেষ বারের মতো মৃত স্বামী কে বিদায় জানালেন নববধূ লাভনী আক্তার।

জানা গেছে, বৃহস্পতিবার (১ মে) দুপুরে ফুলবাড়ী উপজেলার সদর ইউনিয়নের কবিরমামুদ গ্রামের শাহ জামালের মেয়ে লাভলী আক্তারের (২০) সঙ্গে একই উপজেলার শিমুলবাড়ী ইউনিয়নের আছিয়ার বাজার এলাকার মৃত আব্দুল লতিফের ছেলে খালেকুজ্জামান ডিউটের সঙ্গে বিয়ে সম্পন্ন হয়। বিয়ে অনুষ্ঠানে বৃহস্পতিবার সারাদিন দুই পরিবারের আত্মীয় স্বজনদের মধ্যে আপ্যায়নসহ নানা আনন্দ ও উৎসব চলছিল। বরের বাড়িতে আত্মীয় স্বজন ও বন্ধু বান্ধব এবং পাড়া প্রতিবেশীদের খাওয়া-দাওয়াও শেষে আত্মীয় স্বজনরাও অনেকেই বিদায় নিয়েছেন।

বৃহস্পতিবার রাত ১২ টার দিকে নববধূর মেহেদী মাখা হাত, পড়নে লাল শাড়ি পড়িয়ে বাসর (ফুলশয্যা) রাতে বিছানায় বসে বরের জন্য অপেক্ষা করছিল। বর খালেকুজ্জামান ডিউট বাড়িতে আত্মীয় স্বজনদের সঙ্গে কথা শেষে রাত ১২ টার দিকে বাসর ঘরে প্রবেশ করে নববধূর কাছে এক গ্লাস পানি চান এবং পানি চাওয়া মুহূর্তে চিৎকার দিয়ে মাটিতে পড়ে যান। পরে নববধূর আত্মচিৎকারে বাড়ির লোকজন এসে বর ডিউটকে মৃত অবস্থায় পায়। বাড়ির লোকজন নিশ্চিত হন হৃদরোগে তার মৃত্যু হয়েছে।

নববধূর চাচা সাবেক ইউপি সদস্য শাহ আলম জানান, খালেকুজ্জামান ডিউট প্রায় ১৮ থেকে বছর আগে প্রথম বিয়ে করেছেন। তার পূর্বের স্ত্রী জান্নাতি আক্তার মুক্তা। তার ঘরে ১ মেয়ে ও ১ ছেলে সন্তান রয়েছে। প্রথম স্ত্রীর সঙ্গে বিচ্ছেদ হওয়ায় বৃহস্পতিবার আমার ভাতিজির সঙ্গে বিয়ে সম্পন্ন হয়েছে। কে জানতো বিয়ের রাতেই আমার জামাইয়ের মৃত্যু হবে। বিষয়টি খুবই দুঃখজনক ও বেদনাদায়ক।

শিমুলবাড়ী ইউপি চেয়ারম্যান শরিফুল ইসলাম মিয়া সোহেল মৃত্যুর বিষয়টি নিশ্চিত করে জানান, নিয়তির ওপরে কারও হাত নেই। তবে এমন হৃদয় বিদারক ঘটনা খুবই কম দেখা যায়। বাসর রাতেই স্ত্রী বিধবা ! খুবই কষ্টদায়ক ঘটনা। শুক্রবার বিকেল ৩টায় পারিবারিক কবরস্থানে তার দাফন সম্পন্ন হয়েছে।

Tag :
About Author Information

জনপ্রিয়

কুড়িগ্রামে বাসর রাতেই স্ত্রী বিধবা

প্রকাশের সময়ঃ ০৫:১২:৫৭ অপরাহ্ন, শনিবার, ৩ মে ২০২৫

সহিদুল ইসলাম বিভাগীয় প্রতিনিধি রংপুর: কুড়িগ্রামের ফুলবাড়ীতে ফুলশয্যা রাতে খালেকুজ্জামান ডিউট নামে এক বরের মৃত্যু হয়েছে। ডিউট পেশায় একজন প্রাথমিক বিদ্যালয়ের প্রধান শিক্ষক চিলেন। এটি তার দ্বিতীয় বিয়ে ছিল। এঘটনায় বাকরুদ্ধ হয়ে পড়েন নববধূ লাভনী আক্তার (২০)।বাকরুদ্ধ হয়ে ফুলশয্যা রাতেই বরের মরদেহের পাশে বসে অপলক দৃষ্টিতে চাপা কষ্টের ছাপ নিয়ে অশ্রুসিক্ত নয়নে তাকিয়ে নববধূ তার জীবনের স্মরনীয় রাতটি কাটিয়ে দেন। শুক্রবার বিকালে মেহেদী মাখা হাত, পড়নে লাল শাড়ি ও অশ্রু ভেজা চোখের অপলক দৃষ্টিতে শেষ বারের মতো মৃত স্বামী কে বিদায় জানালেন নববধূ লাভনী আক্তার।

জানা গেছে, বৃহস্পতিবার (১ মে) দুপুরে ফুলবাড়ী উপজেলার সদর ইউনিয়নের কবিরমামুদ গ্রামের শাহ জামালের মেয়ে লাভলী আক্তারের (২০) সঙ্গে একই উপজেলার শিমুলবাড়ী ইউনিয়নের আছিয়ার বাজার এলাকার মৃত আব্দুল লতিফের ছেলে খালেকুজ্জামান ডিউটের সঙ্গে বিয়ে সম্পন্ন হয়। বিয়ে অনুষ্ঠানে বৃহস্পতিবার সারাদিন দুই পরিবারের আত্মীয় স্বজনদের মধ্যে আপ্যায়নসহ নানা আনন্দ ও উৎসব চলছিল। বরের বাড়িতে আত্মীয় স্বজন ও বন্ধু বান্ধব এবং পাড়া প্রতিবেশীদের খাওয়া-দাওয়াও শেষে আত্মীয় স্বজনরাও অনেকেই বিদায় নিয়েছেন।

বৃহস্পতিবার রাত ১২ টার দিকে নববধূর মেহেদী মাখা হাত, পড়নে লাল শাড়ি পড়িয়ে বাসর (ফুলশয্যা) রাতে বিছানায় বসে বরের জন্য অপেক্ষা করছিল। বর খালেকুজ্জামান ডিউট বাড়িতে আত্মীয় স্বজনদের সঙ্গে কথা শেষে রাত ১২ টার দিকে বাসর ঘরে প্রবেশ করে নববধূর কাছে এক গ্লাস পানি চান এবং পানি চাওয়া মুহূর্তে চিৎকার দিয়ে মাটিতে পড়ে যান। পরে নববধূর আত্মচিৎকারে বাড়ির লোকজন এসে বর ডিউটকে মৃত অবস্থায় পায়। বাড়ির লোকজন নিশ্চিত হন হৃদরোগে তার মৃত্যু হয়েছে।

নববধূর চাচা সাবেক ইউপি সদস্য শাহ আলম জানান, খালেকুজ্জামান ডিউট প্রায় ১৮ থেকে বছর আগে প্রথম বিয়ে করেছেন। তার পূর্বের স্ত্রী জান্নাতি আক্তার মুক্তা। তার ঘরে ১ মেয়ে ও ১ ছেলে সন্তান রয়েছে। প্রথম স্ত্রীর সঙ্গে বিচ্ছেদ হওয়ায় বৃহস্পতিবার আমার ভাতিজির সঙ্গে বিয়ে সম্পন্ন হয়েছে। কে জানতো বিয়ের রাতেই আমার জামাইয়ের মৃত্যু হবে। বিষয়টি খুবই দুঃখজনক ও বেদনাদায়ক।

শিমুলবাড়ী ইউপি চেয়ারম্যান শরিফুল ইসলাম মিয়া সোহেল মৃত্যুর বিষয়টি নিশ্চিত করে জানান, নিয়তির ওপরে কারও হাত নেই। তবে এমন হৃদয় বিদারক ঘটনা খুবই কম দেখা যায়। বাসর রাতেই স্ত্রী বিধবা ! খুবই কষ্টদায়ক ঘটনা। শুক্রবার বিকেল ৩টায় পারিবারিক কবরস্থানে তার দাফন সম্পন্ন হয়েছে।