7:39 am, Friday, 23 May 2025

চট্টগ্রাম বন্দরের পথ উন্মুক্ত হলে দেশের অর্থনীতির অগ্রগতি হবে: প্রধান উপদেষ্টা

  • Reporter Name
  • প্রকাশের সময়ঃ 12:35:05 pm, Wednesday, 14 May 2025
  • 60 বার পড়া হয়েছে

আলোকিত কন্ঠ ডেস্কঃ অন্তর্বর্তী সরকারের প্রধান উপদেষ্টা প্রফেসর ড. মুহাম্মদ ইউনূস বলেছেন, বাংলাদেশের অর্থনীতির পরিবর্তনে চট্টগ্রাম বন্দরই মূল ভরসা। এটি বাদ দিয়ে দেশের অর্থনীতিকে নতুন কোনো অধ্যায়ে প্রবেশ করানোর সুযোগ নেই। বন্দরের পথ উন্মুক্ত হলে দেশের অর্থনীতিরও অগ্রগতি হবে। অন্যথায় যতই চেষ্টা করা হোক, অর্থনৈতিক উন্নতি সম্ভব নয়।

বুধবার (১৪ মে) চট্টগ্রাম বন্দরের এনসিটি-৫ প্রাঙ্গণে আয়োজিত এক সভায় তিনি এসব কথা বলেন।

চট্টগ্রাম বন্দরকে দেশের অর্থনীতির হৃৎপিণ্ড আখ্যায়িত করে তিনি বলেন, হৃৎপিণ্ড যদি দুর্বল হয়, তাহলে শরীর চলতে পারে না। এই হৃদপিণ্ডকে যতই চাপ দেওয়া হোক, রক্ত সঞ্চালন হবে না। বন্দরকে বিশ্বমানের করে তুলতে হবে। তখনই দেশের অর্থনীতিতে গতিশীলতা আসবে। এখান থেকেই বিদেশে পণ্য রপ্তানি হবে এবং বিদেশি পণ্য আমদানি করা যাবে। এটাই বন্দরের মূল কাজ।

প্রধান উপদেষ্টা আরও বলেন, দুঃখের বিষয় হলো, চট্টগ্রাম বন্দরের পরিবর্তন এতটা শ্লথ কেন? বিশ্বব্যাপী সবকিছু বদলাচ্ছে, অথচ এখানে তেমন অগ্রগতি নেই। এটি আজকের প্রশ্ন নয়। চট্টগ্রামবাসী হিসেবে আমরা দেখছি, বন্দর এলাকায় যানজট, ট্রাকভর্তি রাস্তায় পণ্য খালাসের জটিলতা। এর ফলে অনেক সময় গুরুত্বপূর্ণ ফ্লাইটও মিস হয়ে যায়। এই সমস্যাগুলো নিয়ে অনেকবার আলোচনা ও লেখালেখি করেছি। এখন যখন সুযোগ পেয়েছি, প্রথম দিন থেকেই পরিবর্তনের দিকে মনোযোগ দিয়েছি, যাতে পরিবর্তন নিশ্চিত করা যায়।

এর আগে সকালে চট্টগ্রামে পৌঁছান প্রধান উপদেষ্টা। সরকার প্রধানের দায়িত্ব নেওয়ার পর এটি তার প্রথম চট্টগ্রাম সফর। চট্টগ্রামের ভূমিপুত্র হিসেবে নিজ এলাকায় আসায় তাকে স্বাগত জানানো হয়।

চট্টগ্রাম বন্দর পরিদর্শন শেষে তিনি সার্কিট হাউসে যাবেন, যেখানে কর্ণফুলী নদীর ওপর কালুরঘাট সেতুর ভিত্তিপ্রস্তর উন্মোচন করবেন। এছাড়া তিনি চট্টগ্রাম শহরের জলাবদ্ধতা সমস্যা এবং অক্সিজেন-হাটহাজারী সড়ক উন্নয়ন প্রকল্পের অগ্রগতি পরিদর্শন করবেন। সার্কিট হাউসে আয়োজিত অনুষ্ঠানে তিনি চট্টগ্রাম হার্ট ফাউন্ডেশন হাসপাতালের জন্য ২৩ একর জমির নিবন্ধিত দলিল সংশ্লিষ্ট কর্তৃপক্ষের কাছে হস্তান্তর করেন।

দুপুরে প্রধান উপদেষ্টা চট্টগ্রাম বিশ্ববিদ্যালয় ক্যাম্পাসের উদ্দেশ্যে সার্কিট হাউস ত্যাগ করবেন। বিশ্ববিদ্যালয়ের কেন্দ্রীয় খেলার মাঠে অনুষ্ঠিত হবে পঞ্চম সমাবর্তন অনুষ্ঠান। এতে ২০১১ থেকে ২০২৩ শিক্ষাবর্ষের প্রায় ২২ হাজার ৬০০ জন শিক্ষার্থীকে সনদপত্র প্রদান করা হবে। এছাড়া ২০১৫-২০২৫ সালের ২২ জন শিক্ষার্থীকে পিএইচডি ডিগ্রি প্রদান করা হবে। চট্টগ্রাম বিশ্ববিদ্যালয় কর্তৃপক্ষ ক্ষুদ্রঋণ ও দারিদ্র্য বিমোচনে অবদানের জন্য ড. মুহাম্মদ ইউনূসকে ডি লিট ডিগ্রি প্রদান করবে।

চট্টগ্রাম বিশ্ববিদ্যালয়ের সমাবর্তন শেষে হাটহাজারী উপজেলার শিকারপুর ইউনিয়নের বাথুয়া গ্রামে নিজের পৈতৃক বাড়ি পরিদর্শনে যাবেন প্রধান উপদেষ্টা। সেখানে তিনি সন্ধ্যা ৬টা পর্যন্ত আত্মীয়-স্বজন, পাড়া-প্রতিবেশী এবং এলাকাবাসীর সঙ্গে সময় কাটাবেন। এরপর সন্ধ্যায় বিমানে চট্টগ্রাম ত্যাগ করার কথা রয়েছে।

Tag :
About Author Information

জনপ্রিয়

চট্টগ্রাম বন্দরের পথ উন্মুক্ত হলে দেশের অর্থনীতির অগ্রগতি হবে: প্রধান উপদেষ্টা

প্রকাশের সময়ঃ 12:35:05 pm, Wednesday, 14 May 2025

আলোকিত কন্ঠ ডেস্কঃ অন্তর্বর্তী সরকারের প্রধান উপদেষ্টা প্রফেসর ড. মুহাম্মদ ইউনূস বলেছেন, বাংলাদেশের অর্থনীতির পরিবর্তনে চট্টগ্রাম বন্দরই মূল ভরসা। এটি বাদ দিয়ে দেশের অর্থনীতিকে নতুন কোনো অধ্যায়ে প্রবেশ করানোর সুযোগ নেই। বন্দরের পথ উন্মুক্ত হলে দেশের অর্থনীতিরও অগ্রগতি হবে। অন্যথায় যতই চেষ্টা করা হোক, অর্থনৈতিক উন্নতি সম্ভব নয়।

বুধবার (১৪ মে) চট্টগ্রাম বন্দরের এনসিটি-৫ প্রাঙ্গণে আয়োজিত এক সভায় তিনি এসব কথা বলেন।

চট্টগ্রাম বন্দরকে দেশের অর্থনীতির হৃৎপিণ্ড আখ্যায়িত করে তিনি বলেন, হৃৎপিণ্ড যদি দুর্বল হয়, তাহলে শরীর চলতে পারে না। এই হৃদপিণ্ডকে যতই চাপ দেওয়া হোক, রক্ত সঞ্চালন হবে না। বন্দরকে বিশ্বমানের করে তুলতে হবে। তখনই দেশের অর্থনীতিতে গতিশীলতা আসবে। এখান থেকেই বিদেশে পণ্য রপ্তানি হবে এবং বিদেশি পণ্য আমদানি করা যাবে। এটাই বন্দরের মূল কাজ।

প্রধান উপদেষ্টা আরও বলেন, দুঃখের বিষয় হলো, চট্টগ্রাম বন্দরের পরিবর্তন এতটা শ্লথ কেন? বিশ্বব্যাপী সবকিছু বদলাচ্ছে, অথচ এখানে তেমন অগ্রগতি নেই। এটি আজকের প্রশ্ন নয়। চট্টগ্রামবাসী হিসেবে আমরা দেখছি, বন্দর এলাকায় যানজট, ট্রাকভর্তি রাস্তায় পণ্য খালাসের জটিলতা। এর ফলে অনেক সময় গুরুত্বপূর্ণ ফ্লাইটও মিস হয়ে যায়। এই সমস্যাগুলো নিয়ে অনেকবার আলোচনা ও লেখালেখি করেছি। এখন যখন সুযোগ পেয়েছি, প্রথম দিন থেকেই পরিবর্তনের দিকে মনোযোগ দিয়েছি, যাতে পরিবর্তন নিশ্চিত করা যায়।

এর আগে সকালে চট্টগ্রামে পৌঁছান প্রধান উপদেষ্টা। সরকার প্রধানের দায়িত্ব নেওয়ার পর এটি তার প্রথম চট্টগ্রাম সফর। চট্টগ্রামের ভূমিপুত্র হিসেবে নিজ এলাকায় আসায় তাকে স্বাগত জানানো হয়।

চট্টগ্রাম বন্দর পরিদর্শন শেষে তিনি সার্কিট হাউসে যাবেন, যেখানে কর্ণফুলী নদীর ওপর কালুরঘাট সেতুর ভিত্তিপ্রস্তর উন্মোচন করবেন। এছাড়া তিনি চট্টগ্রাম শহরের জলাবদ্ধতা সমস্যা এবং অক্সিজেন-হাটহাজারী সড়ক উন্নয়ন প্রকল্পের অগ্রগতি পরিদর্শন করবেন। সার্কিট হাউসে আয়োজিত অনুষ্ঠানে তিনি চট্টগ্রাম হার্ট ফাউন্ডেশন হাসপাতালের জন্য ২৩ একর জমির নিবন্ধিত দলিল সংশ্লিষ্ট কর্তৃপক্ষের কাছে হস্তান্তর করেন।

দুপুরে প্রধান উপদেষ্টা চট্টগ্রাম বিশ্ববিদ্যালয় ক্যাম্পাসের উদ্দেশ্যে সার্কিট হাউস ত্যাগ করবেন। বিশ্ববিদ্যালয়ের কেন্দ্রীয় খেলার মাঠে অনুষ্ঠিত হবে পঞ্চম সমাবর্তন অনুষ্ঠান। এতে ২০১১ থেকে ২০২৩ শিক্ষাবর্ষের প্রায় ২২ হাজার ৬০০ জন শিক্ষার্থীকে সনদপত্র প্রদান করা হবে। এছাড়া ২০১৫-২০২৫ সালের ২২ জন শিক্ষার্থীকে পিএইচডি ডিগ্রি প্রদান করা হবে। চট্টগ্রাম বিশ্ববিদ্যালয় কর্তৃপক্ষ ক্ষুদ্রঋণ ও দারিদ্র্য বিমোচনে অবদানের জন্য ড. মুহাম্মদ ইউনূসকে ডি লিট ডিগ্রি প্রদান করবে।

চট্টগ্রাম বিশ্ববিদ্যালয়ের সমাবর্তন শেষে হাটহাজারী উপজেলার শিকারপুর ইউনিয়নের বাথুয়া গ্রামে নিজের পৈতৃক বাড়ি পরিদর্শনে যাবেন প্রধান উপদেষ্টা। সেখানে তিনি সন্ধ্যা ৬টা পর্যন্ত আত্মীয়-স্বজন, পাড়া-প্রতিবেশী এবং এলাকাবাসীর সঙ্গে সময় কাটাবেন। এরপর সন্ধ্যায় বিমানে চট্টগ্রাম ত্যাগ করার কথা রয়েছে।