০৩:২৩ পূর্বাহ্ন, শনিবার, ২৪ মে ২০২৫, ৯ জ্যৈষ্ঠ ১৪৩২ বঙ্গাব্দ

সাভারে চোর সন্দেহে যুবককে গাছে বেঁধে নির্যাতনের অভিযোগ

  • Reporter Name
  • প্রকাশের সময়ঃ ১০:২৭:০৫ পূর্বাহ্ন, রবিবার, ১৮ মে ২০২৫
  • ৬৭ বার পড়া হয়েছে

 

রাউফুর রহমান পরাগঃ সাভারে চোর সন্দেহে এক যুবককে গাছে বেঁধে তিন ঘণ্টা ধরে নির্যাতন করেছে কয়েকজন যুবক।

শনিবার (১৭ মে) বিকেল ৫টার দিকে ওই যুবককে সাভার উপজেলা স্বাস্থ্য কমপ্লেক্স থেকে কয়েকজন যুবক ধরে নিয়ে যায়। এরপর রাস্তার পাশের একটি মেহগনি গাছে বেঁধে দফায় দফায় মারধর করা হয়।

রাত ৮টার দিকে সাভার মডেল থানা পুলিশ তাকে উদ্ধার করে প্রাথমিক চিকিৎসার ব্যবস্থা করে।

পুলিশ জানিয়েছে, ওই যুবকের নাম অভিজিৎ দে (৩৪)। তার বাড়ি চট্টগ্রামের রাউজান উপজেলার সুলতানপুর এলাকায়। তার বাবার নাম কমল কান্তি দে।

ঘটনার একাধিক প্রত্যক্ষদর্শী জানিয়েছেন, স্বাস্থ্য কমপ্লেক্সে চিকিৎসাধীন এক রোগীর স্বজন চোর অপবাদ দিয়ে তাকে মারধর ‍শুরু করেন। পরে স্থানীয় যুবকদের হাতে তুলে দেন। ওই ব্যক্তি সন্দেহ করেন, তিনি বাচ্চা চুরি করতে হাসপাতালে ঢুকেছিলেন।

তবে, অভিজিৎ মানসিক ভারসাম্যহীন বলে প্রাথমিকভাবে ধারণা করছে পুলিশ। তাদের মতে, অভিজিৎ নিজের নাম-ঠিকানা বলতে পারলেও তার আচরণ স্বাভাবিক মানুষের মতো না।

স্বাস্থ্য কমপ্লেক্সের আশেপাশের চা দোকানিদের ভাষ্য, অনেক দিন থেকে থানার পাশে, ডাক বাংলো চত্বর, স্বাস্থ্য কমপ্লেক্স ও আশেপাশের চায়ের দোকানে তারা অভিজিৎকে দেখছেন। তারাও মনে করেন, অভিজিৎ মানসিক ভারসাম্যহীন।

হাসপাতালে চিকিৎসাধীন আরেক রোগীর স্বজন রবিন বলেন, ‘গত রাতে বৃষ্টি শুরু হলে ওই যুবক উপজেলা স্বাস্থ্য কমপ্লেক্সে আশ্রয় নেন। এরপর দ্বিতীয়তলায় গিয়ে খাবার খুঁজতে শুরু করলে রোগীর স্বজনরা তাকে হাসপাতাল থেকে বের করে দেন।’

প্রত্যক্ষদর্মীরা আরও জানান, মারতে মারতে ওই যুবককে হাসপাতালের নিচে নিয়ে এলে স্বাস্থ্য কমপ্লেক্সের পাশে বসে থাকা ২০-২৫ জন যুবক তাকে ডাক বাংলোর সামনের একটি গাছে বেঁধে মারধর শুরু করেন। মরধরের পাশাপাশি তারা ওই যুবকের শরীরে সিগারেটের ছ্যাঁকা ও পরে থাকা লুঙ্গিতে আগুন ধরিয়ে দেন।

সাভার মডেল থানার ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা (ওসি) মো. জুয়েল মিয়া জানিয়েছেন, প্রায় তিন ঘণ্টা ধরে এই ঘটনা চললেও হাসপাতাল কর্তৃপক্ষ থানাকে অবহিত করেনি।

ওই যুবককে উদ্ধার করেন পুলিশের উপপরিদর্শক (এসআই) চম্পক বড়ুয়া। তিনি বলেন, গণমাধ্যমকর্মীদের কাছ থেকে তথ্য পেয়ে ওই যুবককে উদ্ধার করা হয়েছে। তাকে মানসিক ভারসাম্যহীন বলে মনে হচ্ছে। প্রাথমিক চিকিৎসা শেষে ওই যুবককে পুলিশ হেফাজতে নেওয়া হয়েছে। জিজ্ঞাসাবাদের জন্য আমরা কয়েকজন যুবককে থানায় এনেছি।

এ বিষয়ে জানতে চাইলে হাসপাতালে দায়িত্বরত ইমার্জেন্সি মেডিকেল অফিসার (ইএমও) ডা. আবিদুর রহমান বলেন, বিষয়টি কেউ আমাদের জানায়নি।

Tag :
About Author Information

জনপ্রিয়

সাভারে চোর সন্দেহে যুবককে গাছে বেঁধে নির্যাতনের অভিযোগ

প্রকাশের সময়ঃ ১০:২৭:০৫ পূর্বাহ্ন, রবিবার, ১৮ মে ২০২৫

 

রাউফুর রহমান পরাগঃ সাভারে চোর সন্দেহে এক যুবককে গাছে বেঁধে তিন ঘণ্টা ধরে নির্যাতন করেছে কয়েকজন যুবক।

শনিবার (১৭ মে) বিকেল ৫টার দিকে ওই যুবককে সাভার উপজেলা স্বাস্থ্য কমপ্লেক্স থেকে কয়েকজন যুবক ধরে নিয়ে যায়। এরপর রাস্তার পাশের একটি মেহগনি গাছে বেঁধে দফায় দফায় মারধর করা হয়।

রাত ৮টার দিকে সাভার মডেল থানা পুলিশ তাকে উদ্ধার করে প্রাথমিক চিকিৎসার ব্যবস্থা করে।

পুলিশ জানিয়েছে, ওই যুবকের নাম অভিজিৎ দে (৩৪)। তার বাড়ি চট্টগ্রামের রাউজান উপজেলার সুলতানপুর এলাকায়। তার বাবার নাম কমল কান্তি দে।

ঘটনার একাধিক প্রত্যক্ষদর্শী জানিয়েছেন, স্বাস্থ্য কমপ্লেক্সে চিকিৎসাধীন এক রোগীর স্বজন চোর অপবাদ দিয়ে তাকে মারধর ‍শুরু করেন। পরে স্থানীয় যুবকদের হাতে তুলে দেন। ওই ব্যক্তি সন্দেহ করেন, তিনি বাচ্চা চুরি করতে হাসপাতালে ঢুকেছিলেন।

তবে, অভিজিৎ মানসিক ভারসাম্যহীন বলে প্রাথমিকভাবে ধারণা করছে পুলিশ। তাদের মতে, অভিজিৎ নিজের নাম-ঠিকানা বলতে পারলেও তার আচরণ স্বাভাবিক মানুষের মতো না।

স্বাস্থ্য কমপ্লেক্সের আশেপাশের চা দোকানিদের ভাষ্য, অনেক দিন থেকে থানার পাশে, ডাক বাংলো চত্বর, স্বাস্থ্য কমপ্লেক্স ও আশেপাশের চায়ের দোকানে তারা অভিজিৎকে দেখছেন। তারাও মনে করেন, অভিজিৎ মানসিক ভারসাম্যহীন।

হাসপাতালে চিকিৎসাধীন আরেক রোগীর স্বজন রবিন বলেন, ‘গত রাতে বৃষ্টি শুরু হলে ওই যুবক উপজেলা স্বাস্থ্য কমপ্লেক্সে আশ্রয় নেন। এরপর দ্বিতীয়তলায় গিয়ে খাবার খুঁজতে শুরু করলে রোগীর স্বজনরা তাকে হাসপাতাল থেকে বের করে দেন।’

প্রত্যক্ষদর্মীরা আরও জানান, মারতে মারতে ওই যুবককে হাসপাতালের নিচে নিয়ে এলে স্বাস্থ্য কমপ্লেক্সের পাশে বসে থাকা ২০-২৫ জন যুবক তাকে ডাক বাংলোর সামনের একটি গাছে বেঁধে মারধর শুরু করেন। মরধরের পাশাপাশি তারা ওই যুবকের শরীরে সিগারেটের ছ্যাঁকা ও পরে থাকা লুঙ্গিতে আগুন ধরিয়ে দেন।

সাভার মডেল থানার ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা (ওসি) মো. জুয়েল মিয়া জানিয়েছেন, প্রায় তিন ঘণ্টা ধরে এই ঘটনা চললেও হাসপাতাল কর্তৃপক্ষ থানাকে অবহিত করেনি।

ওই যুবককে উদ্ধার করেন পুলিশের উপপরিদর্শক (এসআই) চম্পক বড়ুয়া। তিনি বলেন, গণমাধ্যমকর্মীদের কাছ থেকে তথ্য পেয়ে ওই যুবককে উদ্ধার করা হয়েছে। তাকে মানসিক ভারসাম্যহীন বলে মনে হচ্ছে। প্রাথমিক চিকিৎসা শেষে ওই যুবককে পুলিশ হেফাজতে নেওয়া হয়েছে। জিজ্ঞাসাবাদের জন্য আমরা কয়েকজন যুবককে থানায় এনেছি।

এ বিষয়ে জানতে চাইলে হাসপাতালে দায়িত্বরত ইমার্জেন্সি মেডিকেল অফিসার (ইএমও) ডা. আবিদুর রহমান বলেন, বিষয়টি কেউ আমাদের জানায়নি।