০৭:৫০ পূর্বাহ্ন, শুক্রবার, ২০ জুন ২০২৫, ৬ আষাঢ় ১৪৩২ বঙ্গাব্দ

জেনে নিন বজ্রপাতের সময় গোছল করার ঝুঁকি 

  • ডেস্ক নিউজঃ
  • প্রকাশের সময়ঃ ১১:৩১:৩৮ পূর্বাহ্ন, মঙ্গলবার, ২৭ মে ২০২৫
  • ৭০ বার পড়া হয়েছে

 

ঢাকাঃ ঝড়বৃষ্টির সময়ে মেঘ গর্জালে বা বিদ্যুৎ চমকালে কী কী করেন না? অনেকে বাড়ির বাইরে বেরোন না। কেউ ফোনে কথা বলা বন্ধ করেন। কেউ বন্ধ করেন সুইচ বোর্ডের খোলা প্লাগ পয়েন্টের সুইচ। কারণ অধিকাংশেই জানেন, এই প্রত্যেকটি বিষয় সম্ভাব্য বিপদের ঝুঁকি আরও বাড়িয়ে দিতে পারে। কিন্তু কখনও বিদ্যুৎ চমকালে বা বাজ পড়লে স্নান ঘরেও না যাওয়ার কথা ভেবেছেন কি?

ভাবেননি। তার কারণ, বাজ পড়লে স্নানঘরে বিদ্যুৎস্পৃষ্ট হওয়ার ঝুঁকি থাকতে পারে, সে কথা মাথায় আসেনি। অথচ বৈজ্ঞানিক যুক্তি মানলে তেমনটা ঘটা অস্বাভাবিক নয় একেবারেই। বেশ কয়েকটি যুক্তি বিচার করলেই বিষয়টি স্পষ্ট হবে।

১। যদি বাড়িতে বাজ পড়ে, তবে বিদ্যুৎ বৈদ্যুতিক তার বাহিত হয়ে যেমন আসতে পারে, তেমনই জলের পাইপের ভিতর দিয়েও বাহিত হতে পারে। সে ক্ষেত্রে সেই সময়ে কেউ জলের তলায় দাঁড়িয়ে স্নান করলে তাঁর বিদ্যুৎস্পৃষ্ট হওয়ার সম্ভাবনা একেবারেই উড়িয়ে দেওয়া যায় না!

২। বাজ পড়লে তার বৈদ্যুতিক শক্তি এক সেকেন্ডেরও কম সময়ে ৩৬০ ডিগ্রি ছড়িয়ে পড়ে। ভাল ভাবে তৈরি বাড়িতে এই শক্তিকে নিরাপদে মাটিতে পৌঁছে দেওয়ার ব্যবস্থা থাকে ঠিকই, কিন্তু তার পরেও ঝুঁকি থেকেই যায়।

৩। বজ্রপাতের শক্তি সব সময়েই মাটি পর্যন্ত পৌঁছতে চায়। সে কাজে ধাতব কলের পাইপ বাহকের ভূমিকা নিতে পারে। পাইপ প্লাস্টিকের বা ফাইবারের হলে যদিও ঝুঁকি কিছুটা কমবে।

৪। জলও বিদ্যুতের শক্তি বহন করতে পারে। তাই ধাতব পাইপ বাহিত বিদ্যুৎ মাটিতে পৌঁছানোর জন্য জলকেও আধার বানাতে পারে। সেক্ষেত্রে যদি কেউ স্নান ঘরে শাওয়ারের নীচে দাঁড়িয়ে থাকেন, এমনকি, জলে বা ধাতব পাইপের হাতও দেন, তাহলে বিদ্যুৎ তাঁর শরীরের ভিতর দিয়ে যেতে পারে।

৫। এমন ঘটনা বিরল নয় একেবারেই। বহু মানুষ ঝড়বৃষ্টির সময়ে স্নান করতে গিয়ে বিদ্যুতের ‘ঝটকা’ খেয়েছেন। সব ক্ষেত্রে সেই ধাক্কা মরণ না হলেও। এমন ঘটনায় বড় ক্ষতি হওয়া অস্বাভাবিক নয়।

তবে মনে রাখতে হবে, এই ঝুঁকি কেবল স্নানের সময়ে নয়, ধাতব পাইপ বাহিত যেকোনও জল থেকেই হতে পারে। তাই বাইরে বজ্রবিদ্যুৎ সহ বৃষ্টি হলে পাইপ বাহিত জল থেকে দূরে থাকুন। সেই সময়ে বাসন মাজা, কাপড় কাচা বা হাত ধোয়ার মতো কাজ ও না করাই মঙ্গল।

ঝড়বৃষ্টি চলাকালীন নানারকম সাবধানতা অবলম্বন করতে ঠেকেই শিখেছেন মানুষ। বিশেষ করে আধুনিক জীবনের সঙ্গে প্রতি পদে জড়িয়ে থাকা বৈদ্যুতিন যন্ত্রপাতি যেমন— মোবাইল, ফ্রিজ, টিভি, এয়ার কন্ডিশনার-সহ আরও নানা মূল্যবান যন্ত্রের ক্ষতি এবং তার কারণে হওয়া আর্থিক ক্ষতি সামলাতেই বাড়তি সতর্কতা থাকে। স্নান ঘরে বিদ্যুৎ স্পৃষ্ট হওয়ার ঘটনা বিরল হতে পারে। কিন্তু জীবন অমূল্য। তাই জীবনের র ঝুঁকি, তা সে যতই ক্ষীন হোক না কেন, এড়িয়ে চলাই ভাল।

সূত্রঃ আনন্দবাজার

Tag :
About Author Information

জনপ্রিয়

ফরিদপুরে দীর্ঘ ১০ বছর পর উপজেলা ও পৌর বিএনপির উদ্যোগে  বিশাল সম্মেলন 

জেনে নিন বজ্রপাতের সময় গোছল করার ঝুঁকি 

প্রকাশের সময়ঃ ১১:৩১:৩৮ পূর্বাহ্ন, মঙ্গলবার, ২৭ মে ২০২৫

 

ঢাকাঃ ঝড়বৃষ্টির সময়ে মেঘ গর্জালে বা বিদ্যুৎ চমকালে কী কী করেন না? অনেকে বাড়ির বাইরে বেরোন না। কেউ ফোনে কথা বলা বন্ধ করেন। কেউ বন্ধ করেন সুইচ বোর্ডের খোলা প্লাগ পয়েন্টের সুইচ। কারণ অধিকাংশেই জানেন, এই প্রত্যেকটি বিষয় সম্ভাব্য বিপদের ঝুঁকি আরও বাড়িয়ে দিতে পারে। কিন্তু কখনও বিদ্যুৎ চমকালে বা বাজ পড়লে স্নান ঘরেও না যাওয়ার কথা ভেবেছেন কি?

ভাবেননি। তার কারণ, বাজ পড়লে স্নানঘরে বিদ্যুৎস্পৃষ্ট হওয়ার ঝুঁকি থাকতে পারে, সে কথা মাথায় আসেনি। অথচ বৈজ্ঞানিক যুক্তি মানলে তেমনটা ঘটা অস্বাভাবিক নয় একেবারেই। বেশ কয়েকটি যুক্তি বিচার করলেই বিষয়টি স্পষ্ট হবে।

১। যদি বাড়িতে বাজ পড়ে, তবে বিদ্যুৎ বৈদ্যুতিক তার বাহিত হয়ে যেমন আসতে পারে, তেমনই জলের পাইপের ভিতর দিয়েও বাহিত হতে পারে। সে ক্ষেত্রে সেই সময়ে কেউ জলের তলায় দাঁড়িয়ে স্নান করলে তাঁর বিদ্যুৎস্পৃষ্ট হওয়ার সম্ভাবনা একেবারেই উড়িয়ে দেওয়া যায় না!

২। বাজ পড়লে তার বৈদ্যুতিক শক্তি এক সেকেন্ডেরও কম সময়ে ৩৬০ ডিগ্রি ছড়িয়ে পড়ে। ভাল ভাবে তৈরি বাড়িতে এই শক্তিকে নিরাপদে মাটিতে পৌঁছে দেওয়ার ব্যবস্থা থাকে ঠিকই, কিন্তু তার পরেও ঝুঁকি থেকেই যায়।

৩। বজ্রপাতের শক্তি সব সময়েই মাটি পর্যন্ত পৌঁছতে চায়। সে কাজে ধাতব কলের পাইপ বাহকের ভূমিকা নিতে পারে। পাইপ প্লাস্টিকের বা ফাইবারের হলে যদিও ঝুঁকি কিছুটা কমবে।

৪। জলও বিদ্যুতের শক্তি বহন করতে পারে। তাই ধাতব পাইপ বাহিত বিদ্যুৎ মাটিতে পৌঁছানোর জন্য জলকেও আধার বানাতে পারে। সেক্ষেত্রে যদি কেউ স্নান ঘরে শাওয়ারের নীচে দাঁড়িয়ে থাকেন, এমনকি, জলে বা ধাতব পাইপের হাতও দেন, তাহলে বিদ্যুৎ তাঁর শরীরের ভিতর দিয়ে যেতে পারে।

৫। এমন ঘটনা বিরল নয় একেবারেই। বহু মানুষ ঝড়বৃষ্টির সময়ে স্নান করতে গিয়ে বিদ্যুতের ‘ঝটকা’ খেয়েছেন। সব ক্ষেত্রে সেই ধাক্কা মরণ না হলেও। এমন ঘটনায় বড় ক্ষতি হওয়া অস্বাভাবিক নয়।

তবে মনে রাখতে হবে, এই ঝুঁকি কেবল স্নানের সময়ে নয়, ধাতব পাইপ বাহিত যেকোনও জল থেকেই হতে পারে। তাই বাইরে বজ্রবিদ্যুৎ সহ বৃষ্টি হলে পাইপ বাহিত জল থেকে দূরে থাকুন। সেই সময়ে বাসন মাজা, কাপড় কাচা বা হাত ধোয়ার মতো কাজ ও না করাই মঙ্গল।

ঝড়বৃষ্টি চলাকালীন নানারকম সাবধানতা অবলম্বন করতে ঠেকেই শিখেছেন মানুষ। বিশেষ করে আধুনিক জীবনের সঙ্গে প্রতি পদে জড়িয়ে থাকা বৈদ্যুতিন যন্ত্রপাতি যেমন— মোবাইল, ফ্রিজ, টিভি, এয়ার কন্ডিশনার-সহ আরও নানা মূল্যবান যন্ত্রের ক্ষতি এবং তার কারণে হওয়া আর্থিক ক্ষতি সামলাতেই বাড়তি সতর্কতা থাকে। স্নান ঘরে বিদ্যুৎ স্পৃষ্ট হওয়ার ঘটনা বিরল হতে পারে। কিন্তু জীবন অমূল্য। তাই জীবনের র ঝুঁকি, তা সে যতই ক্ষীন হোক না কেন, এড়িয়ে চলাই ভাল।

সূত্রঃ আনন্দবাজার