নারায়ণগঞ্জঃ নারায়ণগঞ্জ আদালতের বিচারকের স্বাক্ষর জালিয়াতি করে ভুয়া আদেশনামা ও পরোয়ানা ফেরত তৈরির ঘটনা গ্রেফতার আইনজীবী সহকারী সিয়াম আহমেদকে ৭ দিনের রিমাণ্ড দিয়েছেন আদালত।
বুধবার ২৮ মে) দুপুরে ১০ দিনের রিমাণ্ড চেয়ে আদালতে উঠানো হলে সিনিয়র জুডিসিয়াল ম্যাজিস্ট্রেট মো. মঈনউদ্দিন কাদির ৭ দিনের রিমাণ্ড মঞ্জুর করেন।
এর আগে গত ২৬ মে দুপুরে বিচারকের স্বাক্ষর জালিয়াতি করে ভুয়া আদেশনামা ও পরোয়ানা ফেরত তৈরির অভিযোগে এক আইনজীবী সহকারী সিয়াম আহমেদকে আটক করা হয়। নারায়ণগঞ্জ জেলা আইনজীবী সমিতির সদস্য অ্যাডভোকেট ধীরেন সরকারের সহকারী ছিলেন। পরে তাকে জালিয়াতি মামলা গ্রেফতার করা হয়।
আদালত সূত্রে জানা গেছে, নারায়ণগঞ্জের রূপগঞ্জ থানার দায়ের করা হত্যাচেষ্টার একটি মামলায় মো. রুবেল ভূইয়া নামে একজনের বিরুদ্ধে আদালত গ্রেফতারি পরোয়ানা জারি করে। পরবর্তীতে রুবেল ভূইয়া আইনজীবী সহকারী সিয়াম আহমেদের কাছে গেলে তিনি নিজেই বিচারকের স্বাক্ষর জাল করে একটি আদেশনামা ও পরোয়ান ফেরত কাগজ তৈরি করে রুবেল ভূঁইয়াকে দেন।
এদিকে ঐ মামলায় রবিবার রাতে রুবেলকে রূপগঞ্জ থানা পুলিশ গ্রেফতার করলে তার স্বজনরা আদালতের ভুয়া আদেশনামা ও পরোয়ানা ফেরতের কাগজ দেখান। বিষয়টি রূপগঞ্জ থানার ওসি সন্দেহ হলে তিনি সেটি অনুসন্ধানের জন্য নারায়ণগঞ্জ কোর্ট পুলিশের পরিদর্শককে পাঠান। কোর্ট পুলিশের পরিদর্শক অনুসন্ধান করে আদালতের আদেশ ও পরোয়ানা ফেরতের কাগজটি ভুয়া বলে জানালে বিষয়টি প্রকাশ পায়।
এ বিষয়ে কোর্ট পুলিশের পরিদর্শক মো. কাইউম খান বলেন, কয়েক মাস আগে থেকেই আমাদের কাছে কয়েকন আইনজীবী অভিযোগ করছিলেন আদালত থেকে বিভিন্ন বিচারকদের স্বাক্ষর জাল করে বিভিন্ন আদেশনামা এবং পরোয়ানা ফেরত তৈরি করে প্রতারণা করা হচ্ছে। এরই মধ্যে রোববার রাতে রূপগঞ্জ থানায় পরোয়ানা ফেরত গেলে সেটা আমাদের কাছে পাঠানো হয় এবং আমাদের কাছে এটি সন্দেহ হয়।
তিনি আরও বলেন, আমরা পরবর্তীতে আমরা এই বিষয়ে অনুসন্ধ্যান করে জানতে পারি অ্যাডভোকেট ধীরেন সরকারের সহকারী সিয়াম আহমেদ এই এই কাজটি করেছেন। পরবর্তীতে তার বিরুদ্ধে রূপগঞ্জ থানার মামলা করা হয়। সেই সাথে তাকে এই মামলায় গ্রেফতার করা হয়েছে। পুলিশ ১০ দিনের রিমাণ্ড চাইলে আদালত ৭ দিনের রিমাণ্ড মঞ্জুর করেছেন।
নিজের সহকারী সিয়াম আহমেদ সম্পর্কে অ্যাডভোকেট ধীরেন সরকার বলেন, সিয়াম আহমেদ আমার সহকারী ছিলো। তবে তার এই জালিয়াতির বিষয় আমার জানা ছিলো না। তাকে আমি আর সহকারী হিসেবে নিবো না।
নারায়ণগঞ্জ জেলা আইনজীবী সহকারী সমিতির সভাপতি হামিদুর রহমান বলেন, এই ঘটনায় আমরা ওই সহকারীর বিরুদ্ধে ব্যবস্থা গ্রহণ করেছি। ইতোমধ্যে তার পরিচয়পত্র বাতিল করা হয়েছে। এখন আইন তার বিরুদ্ধে প্রয়োজনীয় ব্যবস্থা গ্রহণ করবে।
নারায়ণগঞ্জ জেলা আইনজীবী সমিতির সভাপতি অ্যাডভোকেট সরকার হুমায়ুন বলেন, সিয়াম আহমেদ নামে এক সহকারীর বিরুদ্ধে আমরা স্বাক্ষর জালিয়াতির কথা শুনেছি। সেই সাথে সিয়াম যে আইনজীবীর সহকারী ছিলো তাকে ডেকে এনে আমরা সতর্ক করেছি। আমরা জালিয়াতি বিষয়ে কোনোভাবেই ছাড় দিবো না।
সম্পাদক ও প্রকাশকঃ ওমর ফারুক। প্রকাশক কর্তৃক বি,এস প্রিন্টিং প্রেস, ৫২/২ টয়েনবী সার্কুলার রোড , ঢাকা- ১২০৩ থেকে মুদ্রিত ও ২ আর কে মিশন রোড (৫ম তলা) থেকে প্রকাশিত।
© All rights reserved © 2017 Alokito Kantho