
লালমনিরহাটঃ বৈষম্যবিরোধী ছাত্র আন্দোলনের সময় লালমনিরহাট জেলা আওয়ামী লীগের যুগ্ম সাধারণ সম্পাদক সুমন খানের বাড়িতে আগুনে পুড়ে ছয়জনের মৃত্যুর ঘটনায় ৭৩ জনকে আসামি করে একটি হত্যা মামলা দায়ের করা হয়েছে। এ মামলায় ছয়জনকে গ্রেপ্তার করেছে পুলিশ।
সোমবার (২৬ মে) রাতে লালমনিরহাট সদর থানায় হত্যা মামলা দায়ের করেন অগ্নিদগ্ধ হয়ে নিহত ৬ জনের সহযোদ্ধা আরমান আরিফ (২৭)। আরমান পৌরসভার নর্থ বেঙ্গল মোড়ের নুর ইসলামের ছেলে।
গ্রেপ্তারকৃতরা হলেন- লালমনিরহাট শহরের পূর্ব থানা পাড়ার বাসিন্দা ও পৌর আওয়ামী লীগের ৮ নম্বর ওয়ার্ডের সাধারণ সম্পাদক মো. জাহিদ হাসান ওরফে ভুট্টু (৪৮), রিফিউজি কলোনির বাসিন্দা পৌর আওয়ামী লীগের ৭ নম্বর ওয়ার্ডের সভাপতি সেলিম খান ওরফে বকুল (৫৬), বসুন্ধরা এলাকার শরীফ মোহাম্মদ আতাউল্লাহ (৫০), সদরের কাজীর চওড়া গ্রামের বাবুল (৩৫), ওয়ারলেস কলোনির মো. দোয়েল (৩৬) ও রিফিউজি কলোনির মো. জুয়েল মিয়া (৩৯)।
মামলার এজাহার সূত্রে জানা গেছে, ২০২৪ সালের ৫ আগস্ট ছাত্র জনতার আন্দোলনের সময় আওয়ামী সরকারবিরোধী বিক্ষুব্ধ জনতার মিছিল আওয়ামী লীগ নেতা সুমন খানের বাড়ির সামনের পাকা সড়ক দিয়ে যাওয়ার সময় আসামিদের সঙ্গে ছাত্র-জনতার ধাওয়া পাল্টা-ধাওয়ার ঘটনা ঘটে। এ সময় এজাহার নামীয় আসামিরা অগ্নিদগ্ধ হয়ে মারা যাওয়া ছয়জনকে অস্ত্রের মুখে জিম্মি ও অপহরণ করে।
আরও জানা গেছে, ওইদিন বিকেলে আটক ছয়জনকে আওয়ামী লীগ নেতা সুমন খানের কেন্দ্রীয় শহীদ মিনার সংলগ্ন বিলাস বহুল ওই বাড়িতে তালাবদ্ধ করে নিজেরাই নিজেদের বাঁচানোর অপকৌশল হিসেবে বাড়িতে আগুন লাগিয়ে সুযোগ বুঝে অন্যত্র সটকে পড়েন। এ সময় অগ্নিদগ্ধ হয়ে ভবনে আটকে ছয়জনের মৃত্যু হয়।
মামলার বাদী আরমান আরিফ বলেন, মামলার এজাহার নামীয় আসামিরা পরস্পর যোগসাজশে আমাদের সহযোদ্ধা ছয়জনকে আটকের পর বাড়ির ভবনে আগুন লাগিয়ে দিয়ে তাদের পুড়িয়ে হত্যা করে। কিন্তু ঘটনার বিষয়ে এতদিনেও কোনো তদন্ত পর্যন্ত হয়নি। ৫ আগস্ট ছাত্র আন্দোলনের দীর্ঘদিন পর আশাহত হয়ে ন্যায়বিচারের আশায় মামলা দিয়েছি।
লালমনিরহাট সদর থানার ওসি মোহাম্মদ নুরনবী বলেন, শহরের কেন্দ্রীয় শহীদ মিনার সংলগ্ন এলাকার বাসিন্দা মৃত বাচ্চু খানের ছেলে সাখাওয়াত হোসেন সুমন খান (৪৬) সহ ৩৮ জনের নাম পরিচয় উল্লেখ করে অজ্ঞাতনামা আরও ৩০ থেকে ৩৫ জনকে আসামি করে মামলা করা হয়েছে। ওই মামলায় ছয়জন এজাহার নামীয় আসামিকে গ্রেপ্তার করে কারাগারে পাঠানো হয়েছে। বাকী আসামিদের গ্রেপ্তারে অভিযান অব্যাহত রয়েছে।