
যশোরঃ যশোর-সাতক্ষরা সড়কের বাগআঁচড়া সাত’মাইল বাজার থেকে বেলতলা আম বাজার পর্যন্ত সড়কে খানাখন্দে এক ভয়ঙ্কর মরণ ফাঁদে পরিণত হয়েছে। এসড়কটি প্রতিদিনই কেড়ে নিচ্ছে জনজীবনের স্বাভাবিকতা। জলাবদ্ধতা কর্দমাক্ত গর্তের কারণে ভোগান্তির যেন শেষ নেই।হচ্ছে যানজট ঘটছে প্রতিনিয়ত দুর্ঘটনা।
সবচেয়ে বেশি দুর্ভোগ পোহাতে হচ্ছে বাগআঁচড়া বাজারের ব্যবসায়ী ও ক্রেতারা। জিরো পয়েন্ট মোড়ে বড় বড় গর্তের কারণে বাজারে আসা মানুষজন পড়ছেন চরম বিড়ম্বনায়। বর্ষায় এই গর্তগুলোতে জমে থাকা পানি ও কাদামাটি রাস্তার চেহারাই পাল্টে দিয়েছে, দেখলে মনে হয় যেন শহরের বুকে গজিয়ে ওঠা একখন্ড পুকুর, মাত্র দুইদিনের বৃষ্টিতেই জমেছে হাঁটুসমান পানি।
স্থানীয়দের অভিযোগ, সামান্য বৃষ্টি হলেই পুরো রাস্তাজুড়ে হাঁটু সমান পানি জমে যায়। বিশেষ করে সাতমাইল থেকে বেলতলা পর্যন্ত বাজার এলাকায় কোথাও কোথাও পথচারীরা ঠিক ভাবে বুঝতেও পারেন না, তারা চলাচল করছেন গর্তে না সড়কে। দোকানপাটে যাওয়া কষ্টকর হয়ে পড়ে, কেউ কেউ কাঁধে করে শিশুদের রাস্তা পারাপার করছেন। প্রায় গর্তে পড়ে মোটরসাইকেল, ইজিবাইক ও ভ্যান বিকল হয়ে পড়ে, যার ফলে সৃষ্টি হয় দীর্ঘ যানজটের। দীর্ঘদিন সংস্কার না হওয়ায় অভাবে রাস্তার কার্পেটিং উঠে গিয়ে জেগে উঠেছে গভীর গর্ত। যশোর ও সাতক্ষীরা জেলার লাখো মানুষ চলাচলের একমাত্র ভরসা এই মহাসড়কটি এখন যান চলাচলের অযোগ্য হয়ে পড়েছে।স্কুল-কলেজগামী হাজারো শিক্ষার্থী, রোগী ও সাধারণ মানুষ প্রতিদিন ঝুঁকি নিয়ে এ সড়কে চলাচল করছে।
বাগআঁচড়া কলেজের একাদশ শ্রেণির শিক্ষার্থী আমেনা খাতুন বলেন, প্রতিদিন প্রায় ২ কিলো পথ হেঁটে কলেজে যাই। আগে যেখানে ২০ মিনিটে কলেজে পৌঁছাতাম, এখন সেখানে লাগে এক ঘণ্টা। ক্লাসে মনোযোগ দিতে পারি না। বিশেষ করে পরীক্ষার সময়ে সঠিক সময়ে পৌঁছানো দুঃস্বপ্নের মতো। প্রশাসনের কাছে আমাদের আকুতি দয়া করে এই সড়কের দিকে নজর দিন।
সড়কে চলাচলকারি ভ্যান চালক শরিফুল ইসলাম জানান, অত্যান্ত ঝুঁকি নিয়েই যাত্রী বহন করতে হয়। মাঝেমধ্যে গর্তে পড়ে ভ্যান উল্টে যায়, এতে যাত্রীরা অনেকেই আহত হন, অথচ সড়ক বিভাগের কেউ দেখেন না।
বাগআঁচড়া জিরো পয়েন্ট মোড়ের লিওন ফর্মেসীর স্বত্বাধিকারী জিয়াউর রহমান জানান, বাগআঁচড়া বাজারের মূল স্থানে বৃষ্টি হলেই গর্তে পানি জমে থাকে, এতে সড়কে সবসময় যানজট সৃষ্টি হচ্ছে। হঠাৎ বৃষ্টি হলে রীতিমতো রাস্তায় বসে ভিজে যাচ্ছে পথচারীরা। ভারী ট্রাকগুলো বিকল হয়ে দীর্ঘ সময় পড়ে থাকে রোডের মাঝখানে।
যশোর সড়ক ও জনপদ বিভাগ (সওজ) এর সহকারী প্রকৌশলী মহাবুব খান জানান, মহাসড়কের বাগআঁচড়া অংশের উন্নয়নে বাজেট অনুমোদন দেয়া হয়েছে, দ্রুত সংস্কার কাজ শুরু হবে। তিনি আরো জানান, পথচারীদের দুর্ভোগ আমরা বুঝি, এটাকে অগ্রাধিকার দিয়েই যেসব স্থানে বেশি সমস্যা, সেই সব স্থান চিহ্নিত করে প্রাথমিকভাবে কারফিটিংয়ের মাধ্যমে পথচারীদের চলাচলের উপযোগী করে দেয়া হচ্ছে।