০৯:০৮ অপরাহ্ন, রবিবার, ২৯ জুন ২০২৫, ১৫ আষাঢ় ১৪৩২ বঙ্গাব্দ

জাবিতে ৩২৩ কোটি টাকার বাজেট অনুমোদন, গবেষণায় বরাদ্দ বাড়লেও শিক্ষার্থী সুবিধায় ছাঁটাই

 

সাভারঃ জাহাঙ্গীরনগর বিশ্ববিদ্যালয়ের ২০২৫-২৬ অর্থবছরের বাজেট ঘোষণা করা হয়েছে। আগামী অর্থ বছরের সর্বমোট বাজেট ৩২৩ কোটি ৩৫ লাখ টাকা। গত বছরের সংশোধিত বাজেটের চেয়ে এ বছরে কমেছে ১৪ কোটি ৫৮ লাখ টাকা। গবেষণা এবং তথ্য ও যোগাযোগ প্রযুক্তিখাতে দেওয়া হয়েছে দেওয়া হয়েছে যথাক্রমে ২.৮৫% ও ০.৬৮% বরাদ্দ।

গত শনিবার বিকেল সাড়ে ৫টায় বিশ্ববিদ্যালয়ের কোষাধ্যক্ষ অধ্যাপক মো. আব্দুর রব এ বাজেট উত্থাপন করেন। রাত সাড়ে ১০টা নাগাদ সিনেটরদের ভোটে বাজেটটি অনুমোদিত হয়।
গত অর্থবছরে (২০২৪-২৫) বিশ্ববিদ্যালয়ের গবেষণা খাতে মোট বাজেটের শতকরা ২.১৪ ভাগ (৭ কোটি ২৪লক্ষ) এবং তথ্য ও যোগাযোগ প্রযুক্তি খাতে বাজেটের শতকরা ০.৪৪ ভাগ (১ কোটি ৫০ লক্ষ) বরাদ্দ ছিল । যা এবার বাড়িয়ে গবেষণা খাতে বাজেটের ২.৮৫% (৯কোটি ২৩ লক্ষ) এবং তথ্য ও যোগাযোগ প্রযুক্তি খাতে বাজেটের ০.৬৮% (২কোটি ২০লক্ষ) বরাদ্দ দেওয়া হয়েছে।

এছাড়া বাজেট পর্যালোচনা করে পাওয়া যায়, বেতন-ভাতা বাবদ ১৮১ কোটি ৮৬ লাখ ৫০ হাজার টাকা বরাদ্দ দেওয়া হয়েছে। যা মোট বাজেটের ৫৬.২৪ শতাংশ। বেতন-ভাতা বাবদ বরাদ্দ বেড়েছে ১ কোটি ৮৬ লাখ টাকা। পণ্য ও সেবা (সাধারণ আনুষঙ্গিক) খাতে বরাদ্দ দেওয়া হয়েছে ৭২ কোটি ২৮ লাখ টাকা। যা মোট বাজেটের ২২.৩৫ শতাংশ। এ খাতে গত বাজেটে বরাদ্দ ছিল ৭০কোটি ১৫ লাখ টাকা।

পেনশন ও অবসর খাতে ৩৮ কোটি ৭৭ লাখ টাকা বরাদ্দ দেওয়া হয়েছে। যা মোট বাজেটের ১১.৯৯ শতাংশ। অন্যান্য ব্যয় বাবদ বরাদ্দ দেওয়া হয়েছে ৪কোটি ২৪ লাখ ৫০ হাজার টাকা। যা, মোট বাজেটের ১.৩১ শতাংশ। যন্ত্রপাতি খাতে বরাদ্দ দেওয়া হয়েছে ৫ কোটি ৭২ লাখ টাকা। যা মোট বাজেটের ১.৭৭ শতাংশ। যানবাহন ক্রয় বাবদ ২ কোটি ২৮ লাখ টাকা বরাদ্দ দেওয়া হয়েছে। যা মোট বাজেটের ০.৭১ শতাংশ। অন্যান্য মূলধন বাবদ ৫০ লাখ টাকা বরাদ্দ দেওয়া হয়েছে। যা মোট বাজেটের ০.১৫ শতাংশ।

এদিকে শিক্ষার্থী সংশ্লিষ্ট বেশ কিছু খাতে কমানো হয়েছে বরাদ্দ। পণ্য ও সেবা (রক্ষণাবেক্ষণ ও মেরামত) খাতে বরাদ্দ দেওয়া হয়েছে ৫ কোটি ৮১ লাখ টাকা। যা, মোট বাজেটের ১.৮০ শতাংশ। এ খাতে গত বছরের বাজেট ছিল ৯ কোটি ৪৭ লাখ টাকা। প্রাথমিক স্বাস্থ্যসেবা খাতে ৪৫ লাখ টাকা বরাদ্দ দেওয়া হয়েছে। যা, মোট বাজেটের ০.১৪ শতাংশ। গত বছরে এ খাতে বরাদ্দ ছিল ৮০ কোটি টাকা। এছাড়া পেনশন ও অবসর সুবিধা বাবদ গত অর্থবছরে ৬০ কোটি টাকা বরাদ্দ থাকলেও এবছরে ২১ কোটি ২৩ লাখ টাকা কমিয়ে ৩৮কোটি ৭৭ লাখ টাকা করা হয়েছে।

এ বিষয়ে সিনেটর অধ্যাপক গোলাম রাব্বানী বলেন, ‘আজকের এই বাজেট বর্তমান সরকারের শিক্ষা খাতে অবহেলার বহিঃপ্রকাশ। সরকার বিভিন্ন বিষয় সংস্কারের উদ্যোগ নিলেও শিক্ষা ব্যবস্থা সংস্কারের কোন উদ্যোগ আমরা দেখিনি। নতুন অর্থ-বছরের বাজেটেও শিক্ষা খাতে বরাদ্দ খুবই নগণ্য। এ বাজেটটি শিক্ষার্থীবান্ধব হয়নি। তবে গবেষণা ও তথ্য প্রযুক্তি খাতে কিছুটা বরাদ্দ বাড়ানোর জন্য ধন্যবাদ জানাচ্ছি।’

উক্ত বাজেটের, ২৭৯ কোটি ৩৫ লাখ ৬০ হাজার টাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের মঞ্জুরি কমিশন থেকে দেওয়া হচ্ছে। বাকি অর্থ নিজস্ব সূত্র থেকে আয়কৃত ৪৪ কোটি টাকা থেকে প্রদান করা হবে। বাজেটের নিজস্ব উৎসসমুহ হলো—ছাত্রছাত্রীদের নিকট থেকে প্রাপ্ত ফিস থেকে ৬ কোটি ৮৪ লাখ ৮০ হাজার টাকা, ভর্তি ফরম থেকে প্রাপ্ত ২৩ কোটি ৪৫ লাখ ৬০ হাজার টাকা, বিভিন্ন চার্জ কর্তন করে ৩ কোটি ৭১ লাখ ২১ হাজার টাকা, বিশ্ববিদ্যালয়ের সম্পত্তি থেকে ৩৩ লাখ টাকা, বিভিন্ন উৎস থেকে আয় ১০কোটি ১৫ লাখ ৩৯ হাজার টাকা।

Tag :
About Author Information

জনপ্রিয়

কাশিমপুর স্ট্যাম জালিয়াতি, এক অসহায় ফ্যামিলির নামে আদালতে মামলা 

জাবিতে ৩২৩ কোটি টাকার বাজেট অনুমোদন, গবেষণায় বরাদ্দ বাড়লেও শিক্ষার্থী সুবিধায় ছাঁটাই

প্রকাশের সময়ঃ ০২:১৩:১০ অপরাহ্ন, রবিবার, ২৯ জুন ২০২৫

 

সাভারঃ জাহাঙ্গীরনগর বিশ্ববিদ্যালয়ের ২০২৫-২৬ অর্থবছরের বাজেট ঘোষণা করা হয়েছে। আগামী অর্থ বছরের সর্বমোট বাজেট ৩২৩ কোটি ৩৫ লাখ টাকা। গত বছরের সংশোধিত বাজেটের চেয়ে এ বছরে কমেছে ১৪ কোটি ৫৮ লাখ টাকা। গবেষণা এবং তথ্য ও যোগাযোগ প্রযুক্তিখাতে দেওয়া হয়েছে দেওয়া হয়েছে যথাক্রমে ২.৮৫% ও ০.৬৮% বরাদ্দ।

গত শনিবার বিকেল সাড়ে ৫টায় বিশ্ববিদ্যালয়ের কোষাধ্যক্ষ অধ্যাপক মো. আব্দুর রব এ বাজেট উত্থাপন করেন। রাত সাড়ে ১০টা নাগাদ সিনেটরদের ভোটে বাজেটটি অনুমোদিত হয়।
গত অর্থবছরে (২০২৪-২৫) বিশ্ববিদ্যালয়ের গবেষণা খাতে মোট বাজেটের শতকরা ২.১৪ ভাগ (৭ কোটি ২৪লক্ষ) এবং তথ্য ও যোগাযোগ প্রযুক্তি খাতে বাজেটের শতকরা ০.৪৪ ভাগ (১ কোটি ৫০ লক্ষ) বরাদ্দ ছিল । যা এবার বাড়িয়ে গবেষণা খাতে বাজেটের ২.৮৫% (৯কোটি ২৩ লক্ষ) এবং তথ্য ও যোগাযোগ প্রযুক্তি খাতে বাজেটের ০.৬৮% (২কোটি ২০লক্ষ) বরাদ্দ দেওয়া হয়েছে।

এছাড়া বাজেট পর্যালোচনা করে পাওয়া যায়, বেতন-ভাতা বাবদ ১৮১ কোটি ৮৬ লাখ ৫০ হাজার টাকা বরাদ্দ দেওয়া হয়েছে। যা মোট বাজেটের ৫৬.২৪ শতাংশ। বেতন-ভাতা বাবদ বরাদ্দ বেড়েছে ১ কোটি ৮৬ লাখ টাকা। পণ্য ও সেবা (সাধারণ আনুষঙ্গিক) খাতে বরাদ্দ দেওয়া হয়েছে ৭২ কোটি ২৮ লাখ টাকা। যা মোট বাজেটের ২২.৩৫ শতাংশ। এ খাতে গত বাজেটে বরাদ্দ ছিল ৭০কোটি ১৫ লাখ টাকা।

পেনশন ও অবসর খাতে ৩৮ কোটি ৭৭ লাখ টাকা বরাদ্দ দেওয়া হয়েছে। যা মোট বাজেটের ১১.৯৯ শতাংশ। অন্যান্য ব্যয় বাবদ বরাদ্দ দেওয়া হয়েছে ৪কোটি ২৪ লাখ ৫০ হাজার টাকা। যা, মোট বাজেটের ১.৩১ শতাংশ। যন্ত্রপাতি খাতে বরাদ্দ দেওয়া হয়েছে ৫ কোটি ৭২ লাখ টাকা। যা মোট বাজেটের ১.৭৭ শতাংশ। যানবাহন ক্রয় বাবদ ২ কোটি ২৮ লাখ টাকা বরাদ্দ দেওয়া হয়েছে। যা মোট বাজেটের ০.৭১ শতাংশ। অন্যান্য মূলধন বাবদ ৫০ লাখ টাকা বরাদ্দ দেওয়া হয়েছে। যা মোট বাজেটের ০.১৫ শতাংশ।

এদিকে শিক্ষার্থী সংশ্লিষ্ট বেশ কিছু খাতে কমানো হয়েছে বরাদ্দ। পণ্য ও সেবা (রক্ষণাবেক্ষণ ও মেরামত) খাতে বরাদ্দ দেওয়া হয়েছে ৫ কোটি ৮১ লাখ টাকা। যা, মোট বাজেটের ১.৮০ শতাংশ। এ খাতে গত বছরের বাজেট ছিল ৯ কোটি ৪৭ লাখ টাকা। প্রাথমিক স্বাস্থ্যসেবা খাতে ৪৫ লাখ টাকা বরাদ্দ দেওয়া হয়েছে। যা, মোট বাজেটের ০.১৪ শতাংশ। গত বছরে এ খাতে বরাদ্দ ছিল ৮০ কোটি টাকা। এছাড়া পেনশন ও অবসর সুবিধা বাবদ গত অর্থবছরে ৬০ কোটি টাকা বরাদ্দ থাকলেও এবছরে ২১ কোটি ২৩ লাখ টাকা কমিয়ে ৩৮কোটি ৭৭ লাখ টাকা করা হয়েছে।

এ বিষয়ে সিনেটর অধ্যাপক গোলাম রাব্বানী বলেন, ‘আজকের এই বাজেট বর্তমান সরকারের শিক্ষা খাতে অবহেলার বহিঃপ্রকাশ। সরকার বিভিন্ন বিষয় সংস্কারের উদ্যোগ নিলেও শিক্ষা ব্যবস্থা সংস্কারের কোন উদ্যোগ আমরা দেখিনি। নতুন অর্থ-বছরের বাজেটেও শিক্ষা খাতে বরাদ্দ খুবই নগণ্য। এ বাজেটটি শিক্ষার্থীবান্ধব হয়নি। তবে গবেষণা ও তথ্য প্রযুক্তি খাতে কিছুটা বরাদ্দ বাড়ানোর জন্য ধন্যবাদ জানাচ্ছি।’

উক্ত বাজেটের, ২৭৯ কোটি ৩৫ লাখ ৬০ হাজার টাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের মঞ্জুরি কমিশন থেকে দেওয়া হচ্ছে। বাকি অর্থ নিজস্ব সূত্র থেকে আয়কৃত ৪৪ কোটি টাকা থেকে প্রদান করা হবে। বাজেটের নিজস্ব উৎসসমুহ হলো—ছাত্রছাত্রীদের নিকট থেকে প্রাপ্ত ফিস থেকে ৬ কোটি ৮৪ লাখ ৮০ হাজার টাকা, ভর্তি ফরম থেকে প্রাপ্ত ২৩ কোটি ৪৫ লাখ ৬০ হাজার টাকা, বিভিন্ন চার্জ কর্তন করে ৩ কোটি ৭১ লাখ ২১ হাজার টাকা, বিশ্ববিদ্যালয়ের সম্পত্তি থেকে ৩৩ লাখ টাকা, বিভিন্ন উৎস থেকে আয় ১০কোটি ১৫ লাখ ৩৯ হাজার টাকা।