টাঙ্গাইলঃ টাঙ্গাইলের মধুপুরে কেওটাই প্রাথমিক বিদ্যালয়ের সহকারী শিক্ষক লাকীকে সহকারী শিক্ষক ইবনে মাসুদ বিয়ের প্রলোভন দেখিয়ে শারীরিক সম্পর্ক স্হাপন ও পরবর্তীতে বিয়েতে অস্বীকৃতি জানালে লাকী এ আঘাত সইতে না পেরে বিষ পানে আত্মহত্যা করে।
বিষপানের পুর্বে লাকী একটি সুইসাইড নোডে অভিযুক্ত শিক্ষকের নাম উল্লেখ করায় তার পরিপ্রেক্ষিতে মধুপুর থানায একটি মামলা দায়ের করা হয়। মামলা নং -১৫ তারিখ ২৮-৬-২৫। মামলার কোন প্রকার অগ্রগতি বা মামলার আসামী গ্রেফতার না হওয়ায় বৃহস্পতিবার বিকেলে মধুপুর উপজেলা চত্বরে এক মানববন্ধন অনুষ্ঠিত হয়।
উল্লেখ্য ২০২৪ সালে বিটিপিটিতে প্রশিক্ষণের সময় সহকর্মী ইবনে মাসুদের সঙ্গে লাকীর ঘনিষ্ঠতা গড়ে ওঠে। বিবাহের প্রতিশ্রুতি দিয়ে মাসুদ লাকীর সঙ্গে দৈহিক সম্পর্ক গড়ে তোলেন। পরবর্তীতে লাকী বিয়ের চাপ দিলে মাসুদ জানান, তিনি বিবাহিত এবং তার স্ত্রী-সন্তান রয়েছে।
ভবিষ্যতের সব আশা-ভরসা হারিয়ে মানসিকভাবে ভেঙে পড়েন লাকী। এক পর্যায়ে ২৪ জুন রাতে নিজ রুমে কীটনাশক পান করে আত্মহত্যার চেষ্টা করেন। চিকিৎসাধীন অবস্থায় ২৭ জুন ময়মনসিংহ মেডিক্যাল কলেজ হাসপাতালে তার মৃত্যু হয়।
মৃত্যুর আগে লাকী পাঁচ পাতার একটি ডায়েরিতে লেখেন, পৃথিবীতে মৃত্যৃ যন্ত্রণা সহ্য করে বেঁচে থাকার চেয়ে মরে যাওয়া অনেক ভালো। আজ বিকেল পর্যন্তও বেঁচে থাকার ইচ্ছা মনের গভীর কোণে উঁকি দিয়েছে। কিন্তু তোমার অবজ্ঞার কারণে সিদ্ধান্ত নিয়েই ফেললাম। হ্যাঁ তোমাকে বলছি- সুপ্রিয়, আস্থাভাজন, বন্ধু প্রীতম ইবনে মাসুদ স্যার।’
বিগত দুই বছর তুমি আমার মন পাওয়ার চেষ্টা করেছো। ফুঁসলিয়ে আমার সর্বনাশ করেছো। তুমি কীভাবে আমাকে ফাঁদ পেতে ধরেছো সেটা আল্লাহ তো দেখেছে। … যখন আমি তোমার সকল কথা বিশ্বাস করলাম, ভরসা করলাম, ভালোবাসলাম, তখন তুমি আমার হাত ছেড়ে দিলে। তুমি আমাকে বিয়ের প্রলোভন দেখিয়ে ভোগ করলে। আমাকেই কেন টার্গেট করে সমাজের কাছে আমাকে অপরাধী করলে। তুমি আমাকে বিয়ের প্রলোভন দেখিয়ে আমাকে ভোগ করলে। তুমি জানতে তোমার বাসা থেকে বের হওয়ার পর আমি কোন দুর্ঘটনা নিশ্চিত ঘটাবো। তবু আটকালে না। তুমি চাচ্ছো আমি মরে যাই। আর তুমি জগৎ সংসারে ভালো থাকো। আমি এখন পোকা মারার বিষ খাবো। আসার সময় কিনে এনেছি। আমার সঙ্গে যা করলে দুনিয়ার কোনো মানুষের সঙ্গে করো না প্লিজ। আমার মৃত্যুর জন্য তুমি দায়ী।”
মৃত লাকী টাঙ্গাইলের মধুপুর উপজেলার কুড়ালিয়া গ্রামের লতিফ মিয়ার বড় মেয়ে।
সম্পাদক ও প্রকাশকঃ ওমর ফারুক। প্রকাশক কর্তৃক বি,এস প্রিন্টিং প্রেস, ৫২/২ টয়েনবী সার্কুলার রোড , ঢাকা- ১২০৩ থেকে মুদ্রিত ও ২ আর কে মিশন রোড (৫ম তলা) থেকে প্রকাশিত।
© All rights reserved © 2017 Alokito Kantho